somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ের কাছে খোলা চিঠি.... (বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে) [রিপোস্ট]

১৩ ই মে, ২০১২ বিকাল ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মা,
মানুষ এত বোকা কেন বলতে পারো? ওরা বলে আজ নাকি বিশ্ব মা দিবস!!!! এসব দেখে আমার খুব হাসি পায় মা। ওরা কেন বোঝে না ঘটা করে ওসব দিন পালন শুধু প্রেমিক প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব আর স্বামী-স্ত্রীদের জন্য ই শোভন!!!! মাঝে মধ্যে আমার খুব রাগ হয় মা। এখন মানুষ এত ব্যস্ত যে মাকে ভালবাসি একথা বোঝাতেও ওদের একটা বিশেষ দিন লাগে। কেন এমন অদ্ভুত কাজ করে ওরা বল তো???? তোমাকে যদি বিশ্ব সন্তান দিবস বলে তোমার সন্তানদের জন্য একটা দিন ঠিক করে দেয়া হয় তা কি তুমি মেনে নেবে বল মা???? তাহলে আমাদের কেন মেনে নিতে হবে???

জানো মা, একটা দিনের কথা খুব মনে পড়ছে। তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব একটা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ভয়ে আর সংকোচে তোমার সাথে তা শেয়ারও করতে পারছি না। তখন রাতে আমার ঠিক মত ঘুমও হত না। যখন আমার সে সমস্যা তুঙ্গে পৌঁছালো সে রকম এক রাতে সারারাত ছটফট করছি অস্হিরতায় আর ভাবছি আমার কোন পরীক্ষা এলে বা কোন বিপদ আপদ এলে আমি দৌঁড়ে তোমার কাছে যেতাম আর তুমি আমার মাথাটা তোমার কোলের মধ্যে রেখে বিড়বিড় করে কি যেন সব দোয়া পড়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মাথায় একটু ফু দিয়ে দিতে আর শেষে কপালে চুমু খেয়ে দিতে। আর ওমনি আমার ভেতরটায় কেমন যেন একটা অসম্ভব সাহস অনূভব করতাম। মুহূর্তেই আমার সব ভয় দূর হয়ে যেত। এসব চিন্তা করতে করতে কখন যে একটু চোখ দুটো আমার লেগে এসেছিল তা বলতে পারবো না। হঠাৎ করেই চোখের উপর হালকা কি যেন অনূভুত হতেই চমকে জেগে উঠলাম। বিষ্ময়ে হতভম্ব আমি চেয়ে দেখি তুমি আমার মাথাটা তোমার কোলের মধ্যে নিয়ে সব সময়ের মত দোয়া পড়ে ফু দিয়ে কপালে চুমু খেলে। কিছু বুঝে উঠার আগেই তুমি আমায় বললে,"বাবা গত কয়েকটা রাত আমি কেন যেন ঘুমাতে পারি না। খুব অস্হির লাগে। একটু ঘুম এলেই শুধু তোকে দেখি। দেখি তুই দৌঁড়ে এসে আমার কোলে মাথা দিয়ে বলছিস মা আমাকে দোয়া পড়ে আদর করে দাও। বাবা আমি জানি না তোর কিছু হয়েছে কিনা, তবুও তোকে আদর করে দিলাম। তোর ঘুমটা ভেঙ্গে গেল বলে দুঃখিত। একটু সাবধানে চলাচল করিস বাবা।" সে দিন আমার সামনে থেকে চলে যাওয়ার পরে আমি আঝোড় ধারায় কেঁদেছিলাম। জানো মা এরপর আমার বিপদ কেটে যাওয়াটা ছিল সময়ের ব্যপার মাত্র। আর এত অল্প সময় ছিল সেটা যে আমাকে একটু দুশ্চিন্তাও করতে হয়নি। এই রকম ঘটনা আমার জীবনে যে কতবার ঘটেছে তা গুনে বলা সম্ভব না মা। তুমি হয়তো কখনও জানতেও পারনি। আজও হয়তো তুমি জানতে পারবে না। তুমি তো আর ব্লগ লেখ না বা পড়ও না। আমার ব্লগার বন্ধুরা কিন্তু আজ সব জেনে যাবে।

জানো মা, মাঝে মধ্যে মনে হয় এখনও আমি তোমার মধ্যেই বাস করি ঠিক যেভাবে দশ মাস দশ দিন ছিলাম তোমার ভিতরে। তা না হলে কিভাবে তুমি পাশের ঘরে বসে আমাকে ঠিক ঠিক বুঝতে পারো বলতো মা??? মাঝে মাঝে খুব আক্ষেপ হয় ছেলে হয়ে জন্মেছি কখনও মা হতে পারবো না বলে। আবার পরক্ষণেই মনে হয় ঠিকই তো আছে কারণ সে যোগ্যতা তো আমার নেই।

মা, তোমার ছেলেকে খোদা অনেক ক্ষমতা দিয়েছে কিন্তু একটা ক্ষমতা দেয়নি। তা হল তোমাকে ছাড়া একটা দিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকা। তাই নিজের অজান্তেই খোদাকে বারবার বলি যেন খোদা সে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি আমাকে কখনওই না করেন। আর আমি জানি খোদা কখনওই তা করবেন না। তবে এতে হয়তো তোমাকে একটু কষ্ট পেতে হবে। কিন্তু কি আর করা বলো মা, তোমার তো আর একটা সন্তান না কিন্তু আমার তো একটাই মা।

মা, সবাই কি ভাববে জানি না শুধু জানি একদিনের মা দিবসে আমি বিশ্বাসী নই। আজ এই বোকা মানুষদের করা বিশ্ব মা দিবসে আমি আমার জীবনের প্রতিটি দিন কে মা তোমার জন্য বিশ্ব মা দিবস হিসেবে উৎসর্গ করলাম।

তোমাকে অনেক অনেক অনেক ভালবাসি মা...........

-তোমার হাড় জ্বালাতনকারী দুষ্টু ছেলে
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×