ঈদুল ফিতরের এক দিন, আর ঈদুল আজহার চার দিন_এই পাঁচ দিন রোজা রাখা নাজায়েজ। এই বিশেষ দিনগুলো বাদে বছরের বাকি দিনগুলোতে রোজা রাখতে ভুল করেননি ইনছান আলী। ২৮ বছর ধরে টানা রোজা রেখে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন চরের এই দরিদ্র কৃষক। আরো আশ্চর্য ব্যাপার হলো, এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর বড় কোনো রোগব্যাধিও হয়নি।
বয়স ৭০ পেরিয়েছে। তাই তিন বছর ধরে কবরে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে তাঁর। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সব সময় পরছেন সাদা পোশাক। রাতে ঘুমানোর সময় ব্যবহার করছেন না বালিশ।
ইনছান আলীর বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর চর সারোডোবে। নদীভাঙা মানুষ। ধরলার তাণ্ডবে বাড়ি সরিয়েছেন মোট ১১ বার। বাড়ি-ভিটাসহ চরের অনুর্বর ৮০ শতক জমি থাকলেও তাতে পেটের খাবার জোগাড় হয় না। ছেলেরা দিনমজুরি করে। বয়সের কারণে ইনছান কাজ করতে পারেন না। তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তিন ছেলে বিয়ে করে আলাদা থাকে। বাকি দু্ই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর অভাবি সংসার চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
পরকালে আল্লাহর সানি্নধ্য পাবেন_এই আশায় ২৮ বছর আগে রোজা রাখা শুরু করেন ইনছান আলী। যত দিন বাঁচবেন এভাবেই রোজা রাখবেন বলে তাঁর নিয়ত পাকা। রোজা রাখলেও সেহরি খেতে পান না অভাবের কারণে। স্রেফ পানি দিয়ে ইফতারি সারেন বেশির ভাগ দিন। কালেভদ্রে মেলে চাল ভাজা বা মুড়ি। ইনছান জানান, অনেক দিন তিনি চকলেট এমনকি গাছের পাতা দিয়ে ইফতারি সেরেছেন। তাতে তাঁর কোনো অসুবিধা হয়নি। রাতে এশার নামাজ পড়ে ভাত খান। তবে সব সময় ভাত মেলে না। এখন একটানা চার দিন না খেলেও কোনো সমস্যা হবে না বলে ইনছান আলীর বিশ্বাস। তিনি জানান, রোজা রাখা শুরু করার পর থেকে তেমন কোনো রোগব্যাধি হয়নি। এ সময় ওষুধ খেয়েছেন মাত্র ২০০ টাকার। তাঁর কথা_'রোজা রাখি মাবুদের খুশির জন্য। তাই তিনি আমাকে ভালো রেখেছেন।'

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




