সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার পর সাংবাদিকদের তোপের মুখে বক্তব্য প্রত্যাহার করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হকও বক্তব্য প্রত্যাহার করে সাংবাদিকদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের ৯ দফা দাবি নিয়ে বৈঠকের পর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রসঙ্গ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিহত সাংবাদিক দম্পতি সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলেন।
সাগর-রুনি হত্যাকোণ্ডের বিচারের অগ্রগতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ নেতারা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অগ্রগতির বিষয়টি তুলে ধরেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সাংবাদিকরা আলামত নষ্ট করেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
এ সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলেন।
আলামত নষ্টের বিষয়টি স্পষ্ট করার এক পর্যায়ে মিডিয়ায় প্রচার না করার কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাগর-রুনিকে নিয়ে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে প্রতিবাদ জানান, বিএফইউজের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদসহ সাংবাদিক নেতারা।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, “মৃত সাংবাদিক দম্পতির চরিত্র হননের জন্য আপনাকে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানাননি। আপনার কাছে এসেছিলাম, বিচার চাইতে। আপনি বিচার করেননি। আমি সব সাংবাদিকদের পক্ষে নিন্দা জানাই, প্রতিবাদ জানাই।”
এক পর্যায়ে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। উঠে দাঁড়ান সাংবাদিকরা। বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য ইকবাল সোবহান চৌধুরী চাপ সৃষ্টি করে চলে যেতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাত ধরে টেনে নিয়ে সবার সামনে বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”
ইকবাল সোবহান চৌধুরীর হাত ধরে টেনে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সোবহান আমার বন্ধু। একসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে লেখাপড়া করেছি।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর পরিস্থিতি সামাল দিতে সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বিষয়টি প্রকাশ করা যাবে না বলেছি।”
এক পর্যায়ে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে নিয়ে তার দফতরে যেতে চাইলে তিনি বেরিয়ে যান।
এদিকে সাংবাদিকদের শান্ত করতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, অতিকথনের ফলে ছিদ্র পথে বিতর্কের জন্ম নিতে পারে। মন্ত্রী মহোদয় বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।”