somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শোনা: The Art of Listening

২৪ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১) প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ছাড়াই আপনি একটি পরিস্থিতিতে বিয়ে করেছেন। সেটি করেছেন প্রেম করে এবং পরিবার-পরিজনকে না জানিয়ে। এর যথাযথ কারণ এবং যুক্তি আপনার কাছে হয়তো আছে। কিন্তু ভিন্ন সম্প্রদায়ে বিয়ে হবার কারণে পরিবার এবং সমাজও আপনার প্রতিপক্ষ হয়ে আছে। ভীষণ মানসিক চাপে আপনি একেকটি ঘণ্টা অতিক্রম করছেন। এপরিস্থিতিতে আপনার বাবাই, যিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও, আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হলো আপনার বাবা কখনও আপনাকে প্রাপ্তবয়স্ক এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে মেনে নেন নি। এবং এক্ষেত্রেও বাবা হবেন আপনার প্রধান সমস্যা। আপনার ধারণা আপনার কঠোর বাবা যদি আপনার যুক্তিগুলো শুনেন, তবে অবশ্যই আপনাদেরকে মেনে নেবেন। তিনি যদি তা মেনে নেন, তবে কেউ আর আপনাদেরকে বিপদে ফেলতে পারবে না। অন্যদিকে যদি কথাগুলো না শুনাতে পারেন, তবে পরিস্থিতি হবে সম্পূর্ণ বিপরীত। কিন্তু যদি আপনার বাবা আপনাকে না শুনেন তবে কেমন হতে পারে পরিস্থিতি?

আপনি মন-প্রাণ দিয়ে যাচ্ছেন কেউ আপনার কথাটি অন্তত শুনুক। আপনার ভেতরে অনেক কথা/ অভিমত/ তথ্য জমে আছে, আপনি যাচ্ছেন নির্দিষ্ট ব্যক্তিটি সেটি শুনুক। সে আপনার কথায় সম্মতি দিক অথবা না দিক, অন্তত আপনার কথাগুলো শেষ হতে দিক – এরকম পরিস্থিতি আপনার কি কখনও মনে হয়েছে? আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে, কেউ আপনার কথায় কর্ণপাতই করে নি? অথবা শুনেও শুনে নি? অনেক চেষ্টা করে কারও মনযোগ আকর্ষণের কথা কি আপনার মনে পড়ে? এরকম অসহায় পরিস্থিতিতে আপনার কেমন লাগে?




২) একটা সময় ছিল যখন বলা হতো, মানুষের অন্তরের প্রবেশের পথটি হলো তার পাকস্থলি। অর্থাৎ, মানুষকে ভালোভাবে ভোজন করিয়ে তার অন্তরে প্রবেশ করা যায়। কিন্তু আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় যোগাযোগের মাধ্যম যেমন বদলেছে, তেমনই বদলেছে মানুষের অন্তরের প্রবেশের রাস্তা! এই ব্যবস্থায় মানুষের অন্তরে প্রবেশের পথটি হলো তার কথায় কর্ণপাত করা। মানুষ যত রাবিশ বলুক, সে চায় তার কথা শুনাতে। তার কথা যে শুনবে, সেই পাবে তার অন্তরে প্রবেশের গোপন চাবি। বর্তমান সমাজে একজন ভালো শ্রোতা মানেই হলো ভালো বোদ্ধা। “ভালো একজন শ্রোতা শুধুই জনপ্রিয় নন, অবশেষে দেখায় যায় যে, চূড়ান্ত কথাগুলো তার কাছে জমা হয়ে আছে।” (উইলসন মিজনার) আজকের লেখাটি পৃথিবীর ভালো শ্রোতাদেরকে উৎসর্গ করছি, যারা বিশেষ কিছু করে নয়, শুনেই মানুষের মনে শান্তি এনেছেন।

একটি ব্যস্ততম কল সেন্টারের ব্যবস্থাপককে জিজ্ঞেস করা হলো, কীভাবে তিনি অগণিত অভিযোগের নিষ্পত্তি করেন। ব্যবস্থাপক শুধু সংক্ষেপে জানালেন যে, ৮০% অভিযোগ শুধু শুনে এবং লিখে রাখাতেই সমাধান হয়। বাকি ১০% অভিযোগ শেষ হয় অপেক্ষায়। অর্থাৎ কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখলেই ১০% অভিযোগের সমাধান হয়। মাত্র ১০% অভিযোগ নিয়ে বাস্তবিকভাবে তাদেরকে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি হলো, গ্রাহকের অভিযোগগুলো পূর্ণ মনযোগ এবং সহানুভূতির সাথে শুনে যাওয়া।

দেশের ডাক্তারদের নিয়ে যখন সমালোচনা হয়, তখন একজন সুদক্ষ শ্রোতা এবং ব্যতিক্রমী ডাক্তারের কথা আমি স্মরণ করি। তাতে ডাক্তারদের প্রতি আমার অসন্তুষ্টি থাকে না। কর্মজীবনে আমি এই ডাক্তারকে পেয়েছি, যিনি আমার প্রকল্পে কাজ করেছেন আমার টিমমেট হিসেবে। সুন্দর হাতের লেখায় তার প্রেসক্রিপশনও ছিলো ব্যতিক্রম - সবাই পড়তে পারতো। তার কাছে রোগী আসতো অন্যের কাঁধে হাত দিয়ে আর ফিরে যেতো একা হেঁটে। এটি কোন বিস্ময়কর বিষয় নয়, অথবা ডাক্তারেরও যে খুব বেশি হাতযশ ছিলো তা নয়। বিষয়টি হলো সম্পর্কের। তিনি সবার সাথে মিশতে পারতেন এবং আন্তরিকভাবে শরীর সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারতেন। সবচেয়ে বড় বিষয়, তিনি ছিলেন একজন উত্তম শ্রোতা। তার সাথে কথা বলে রোগী মানসিক শক্তি তখনই ফিরে পেতো। বাকিটুকু ওষুধ আর বিশ্রামের বিষয়।




৩) আমি তোমাকে শুনি = ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’

আমাদের সমাজের অবস্থা হলো এরকম: বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, নিয়েছে আবেগ। পাশাপাশি বসে স্মার্টফোনে আঙ্গুল চালাচ্ছি, অথচ পাশে বসা আপন মানুষটির কথা শুনছি না। এত কাছে থেকেই আজ আমরা কত দূরে চলে গেছি। ইমেলের পর যেমন চিঠিলেখার প্রচলন চলে গেছে, তেমনি স্মার্টফোনের ফ্রি-চ্যাটিং এর যুগে কথা বলা ও কথা শোরনার প্রচলন কমে যাচ্ছে। মানুষ হয়ে যাচ্ছে দারুণভাবে আত্মকেন্দ্রিক। এরকম এক ধ্বংসায়মান সমাজ ব্যবস্থায়, ‘অন্যের কথা মনযোগ দিয়ে শোনা’ একটি বিরল মানবিক গুণে পরিণত হচ্ছে। শুনলেও অন্যকে চেনা যায়, সম্পর্ক গড়া যায়; এগিয়ে যাওয়া যায়। এখন ‘তোমাকে আমি শুনি’ হলো ‘তোমাকে আমি ভালোবাসি’ বলার আধুনিক রূপ। (অবশ্য, ব্লগীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিষয়টি হতে পারে একটু অন্যরকম: ‘আপনার লেখা আমি পড়ি’।)

‘ভালোবাসার প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে শোনা।’ (পল টিলিচ) কিন্তু এবিষয়ে আমার ব্যক্তিগত দুর্বলতাটি অত্যন্ত সহজাত। তাহলো আমি কোনকিছুতে যখন মনযোগ দেই, তখন আমার দেহ-মন-প্রাণ চলে যায় সেটিতে। কী বই, কী কম্পিউটার, কী টিভির সংবাদ অথবা নাটক। তখন অন্য কোনকিছু আমার কানেও আসে না, চোখেও ভাসে না। ধরুন টিভিতে খবর দেখছি, তখন আমার সঙ্গীনীটি কোন বক্তব্য বা অভিমত বা অভিযোগ নিয়ে আসলেন, প্রথমমত সেটি আমার কর্ণেই প্রবেশ করে না। অভ্যাসগতভাবে হুম বা হ্যাঁ দিয়ে অনেক বার ধরা পড়েছি। কিন্তু আমার সঙ্গীনীটি খুব অভিমানী। যখনই প্রমাণিত হয়েছে যে, আমি না শুনেই জবাব বা সম্মতি দিয়েছি অথবা যখন সাব্যস্ত হয়েছে যে, তার গুরুত্বপূর্ণ কোন কথা আমি শুনি নি, তখন থেকেই ‘অবরোধ’ শুরু। মানে তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অন্তত বেশ কিছু সময় চলে যাবে, স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে। তার যুক্তিটি হলো, আমি তার কথায় গুরুত্ব দেই না। অথচ সে যে আমাকে অন্য কিছুতে ব্যস্ত থাকার পরও কথা বলেছে, তার কোন দোষ নেই! এ নিয়ে আমাদের মধ্যে প্রায়ই খুঁনসুঁটি হয়। তার হিসাবটি খুব সোজা, তার ধারণা তার কথা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। সামান্য একটি শোনার বিষয় থেকে সম্পর্ক অবনতির দিকে যেতে পারে, যদি অন্যান্য বিষয়ও অনুকূল না থাকে।



সম্প্রতি একটি টিভি শো’তে অনুষ্ঠানের পরিচালক পুরস্কার বিজয়ী শিশুটিকে জিজ্ঞেস করলেন,
-তো, তুমি বড় হলে কী হতে চাও?
-বড় হয়ে আমি পাইলট হতে চাই।
মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের হারিয়ে-যাওয়া বিমানটির কথা মনে করে দর্শকরা হেসে ওঠলো। তাতে শিশুটিকে আড়ষ্ট দেখাল।

সঞ্চালক একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ফের জিজ্ঞেস করলেন,
-ভালো কথা। ধরো তোমার বিমানটির সকল মেশিন একসাথে বন্ধ হয়ে গেলো। তখন তুমি কী করবে?
-সকলকে বলবো সিটবেল্ট বেঁধে শক্ত হয়ে বসে থাকতে।
-আর তুমি?
-আমি সাথে সাথে প্যারাশুট পড়ে বিমান থেকে জাম্প দেবো।
এবার দর্শকদের হাসিতে সঞ্চালক নিজেই প্রায় থেমে গেলেন। কিন্তু দর্শকদের হাসির মধ্যে শিশুটি তখন কাঁদছে। শিশুটির প্রতি সঞ্চালক তার মনসংযোগ কমালেন না।
-কেন তুমি জাম্প দেবে?
-আমি তো তাদেরকে ফেলে যাবো না! আবার ফিরে সাহায্য নিয়ে আবার ফিরে আসবো।


শেষ কথাটি না শুনে আমরা প্রায়ই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি, অথবা নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে অন্যের কথা বিচার করি। ঠিক এই বিষয়টি মানুষকে ভালো শ্রোতা হতে দেয় না। আমরা অর্ধেক শুনি, এক চতুর্থাংশ বুঝি এবং প্রতিক্রিয়া করি দ্বিগুণ। আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেছেন, “কেউ কিছু বললে তাকে পুরোপুরি শুনুন। কিছু মানুষ আছে তারা কখনও অন্যের কথা শুনে না।”







৪) ভালোভাবে শোনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

শোনার অভ্যাস ‘সম্পর্ক তৈরি ও রক্ষায়’ দারুণ সহায়তা করে।
•তাদের আস্থা বেড়ে যায়
•তারা সম্মানীত বোধ করে
•সহজেই আপন হয়
•শ্রোতার প্রতি আনুগত্য বেড়ে যায়
•ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়
•সম্পর্ক গড়ে ওঠে/ বৃদ্ধি পায়


অন্যের কথা শুনলে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রোতা যেসব সুবিধা পেয়ে থাকেন:
•বক্তার মনের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়
•শ্রোতা সম্পর্কে কোন নেতিবাচক অনুভূতি থাকলে সেসম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়
•ভবিষ্যতে কীভাবে তার সাথে আচরণ করতে হবে, তা জানা যায়
•ব্যক্তিগত দুর্বলতা/সবলতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়
•শ্রোতার প্রতি শ্রদ্ধা/আনুগত্য সৃষ্টি হয়


শোনার জন্য যেসব মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন:
•নিজের মনে আগ্রহ সৃষ্টি করা
•সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা দূর করা
•বিষয়টির সাথে মানসিকভাবে সম্পৃক্ত হওয়া
•ভেতরের বাধাগুলো দূর করা;
•মনকে উন্মুক্ত করে দেওয়া;


বাহ্যিক প্রস্তুতি:
•যে কথা বলে, তার দিকে তাকানো;
•স্বাভাবিক এবং স্বস্তিতে থাকা – অস্থিরতা না দেখানো;
•চোখে চোখ রাখা (ভুল প্রয়োগ যেন না হয!);
•বাইরের বাধা-বিপত্তিগুলো সরিয়ে রাখা;
•সঠিকভাবে ‘সারা’ দেওয়া;
•অভিযোগ শুনলেও কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা;
•একই অভিমত বা একই অভিজ্ঞতা থাকলেও সেটি এখন বলার দরকার নেই;
•বক্তার কথায় মনযোগ দেওয়া, অন্য কোন কথা বলার প্রস্তুতি বন্ধ করতে হবে;


আচরণগত বিষয়গুলো:
•স্মিত হাস্যে বক্তাকে কথা বলা চালিয়ে যেতে দেওয়া
•পরিস্থিতি বুঝে ‘আচ্ছা/ তাই নাকি/ হুম/ বুঝতে পেরেছি/ বলতে থাকুন’ ইত্যাদি বলা
•মুখমণ্ডলে একই বক্তব্য রাখা: বিরক্তি বা অস্বস্তির চিহ্ন না রাখা
•‘আপনার কথা আমি যাচাই করে দেখছি/ দেখবো’ এরকম মনোভাব না দেখানো
•বক্তার কথাকে বুঝার জন্য অথবা আরও স্পষ্ট হবার জন্য প্রশ্ন করা যায়
•কিছু বলতে/ যোগ করতে চাইলে, কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা


সাবধানতা:
•‘আপনি কি নিশ্চিত?’ এরকম বক্তব্য না দেওয়া
•‘পরিস্থিতি এত খারাপ না’ এরকম কথা না বলা
•কোনভাবেই বিতর্ক বা বক্তার কথাকে চ্যালেন্জ না করা
•বিষয় পরিবর্তন না করা, বা অন্য বিষয়ে জাম্প না করা
•কোনভাবেই কথায় বাধা সৃষ্টি না করা
•কোনভাবেই বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ না হওয়া
•‘অধিকাংশ মানুষই শুনে বলার জন্য।’ বলার সুযোগের অপেক্ষায় শুনবেন না।



অন্যের কথা শুনতে যেসব বিষয় বাধার সৃষ্টি করে:
•মানুষটি (বক্তা) সম্পর্কে নেতিবাচক পূর্বধারণা
•আগে থেকেই কিছু ধারণা করে ফেলা
•অন্যমনষ্কতা
•বক্তা সম্পর্কে অসম্মানবোধ
•বক্তা সম্পর্কে গোপন অভিযোগ/অভিমান
•আত্মঅহমিকা


অন্যের কথা শুনতে পারা একটি শিল্প: অভিজ্ঞদের পরামর্শ:

•কাজ বন্ধ করুন – যে কথা বলতেছে তার দিকে দৃষ্টি দিন
•তার কথা শুনুন এবং শান্ত হয়ে বসুন/দাঁড়ান
•হ্যাঁ বলে অথবা মাথা দিয়ে সাড়া দিন
•না বুঝলে অথবা আরও পরিষ্কার হবার জন্য প্রশ্ন করুন
•গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিশ্চিত হবার জন্য আবার পুনরাবৃত্তি করতে পারেন।
(উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন হতে পারে।)







৫) ‘শোনা’ সম্পর্কে বিখ্যাত কয়েকটি উক্তি:

ভালোবাসার প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে শোনা। -পল টিলিচ

•শুনতে আমি পছন্দ করি। শোনা থেকে আমি অনেক শিখেছি। অধিকাংশ মানুষ শুনতে চায় না। -আরনেস্ট হেমিংওয়ে

•যেসব সফল ব্যক্তির কথা আমি শুনেছি, তারা অধিকাংশই বলেছেন কম, শুনেছেন অনেক বেশি। -বারনার্ড বারুচ

শোনার জন্য চেষ্টা লাগে। শুধুই শুনে যাওয়ার মধ্যে কিছু নেই – হাসেরাও শুনে। -আইগর স্ট্রাভিনস্কি

ভালো একজন শ্রোতা শুধুই জনপ্রিয় নন, অবশেষে দেখায় যায় যে, চূড়ান্ত কথাগুলো তার কাছে জমা হয়ে আছে। -উইলসন মিজনার

•মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রয়োজনটি হচ্ছে অন্যকে বুঝা এবং বুঝতে দেওয়া। অন্যকে বুঝার সবচেয়ে উত্তম পথটি হচ্ছে, তাদের কথা শুনা। -ড. র্যা লফ নিকোলস

ভালো শ্রোতা হতে মহৎ মানুষ হতে হয়। -ক্যালভিন কুলিজ

আমাদের কান দু’টি কিন্তু মুখ একটি। অর্থাৎ আমাদেরকে বলার চেয়ে বেশি শুনতে হয়। -জেনো অভ সিটিয়াম

অধিকাংশ মানুষই বুঝার ইচ্ছা নিয়ে শুনে না; তারা বলার প্রস্তুতি নিয়ে শুনে। -স্টিফেন আর কোভি

শোনার বিষয়টি হৃদয় হতে আসে; অন্যের কাছে আসার অকৃত্তিম ইচ্ছা, যা উভয়কেই আকর্ষিত করে এবং শান্তি দেয়। -সারা হার্ট




৬) সর্বাঙ্গে শুনা

চোখ রাখুন বক্তার চোখে – এদিক ওদিক তাকাবেন না, আকাশের তারা গুণবে না
কর্ণযুগল সদা প্রস্তুত – অনেক কিছু না শুনতে চেয়ে শুধু কথা শুনায় মনোযোগ দিন
মুখ থাকুক বন্ধ - গুণ গুণ করে গান গেয়ে ওঠবেন না!
হাতগুলো শান্তভাবে কোলে/টেবিলের ওপর রাখুন - পকেটেও রাখতে পারেন!
পদযুগল – মেঝেতে রাখুন – কটকট করে ফ্লোরে সুর তুলবেন না
দেহখানি বক্তা বরাবর ধরে রাখুন – তবে যথা দূরত্বে!
মস্তিষ্ক – মহাদুষ্টু। একে একান্তই আলোচ্য বিষয়ে ধরে রাখুন!
হৃদয় – বক্তার বিষয়ের প্রতি আন্তরিক হোন। শোনার বিষয়টি হৃদয় হতে আসে







*** কর্মজীবন/জীবন দর্শন নিয়ে অন্যান্য পোস্টগুলো:

সাউথপোলার/ স্বশিক্ষিত ক্ষণজীবীরা
কর্মক্ষেত্রের শুরুর দিনগুলো কেমন হওয়া চাই
ইনার পিস - আত্মার শান্তি
কৃত্তিম উপায়ে হাসুন!





-----------------
পরিশিষ্ট:

ক. ‘অন্যকে শোনা’ নিয়ে ব্যক্তিগত অনুসন্ধানের একটি লিখিত রূপ এটি। লেখক নিজেও এবিষয়ের শিক্ষার্থী!
খ. বিভিন্ন উৎস থেকে ছড়িয়ে থাকা তথ্যগুলো একসাথে করে উপস্থাপন করা হলো। কিছু কিছু কনসেপ্ট সংগৃহীত হলেও ভাষাগত সত্ত্ব লেখকের নিজের।
গ. ইংরেজি বক্তব্যের ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।
ঘ. বাংলা বক্তব্যের ছবিগুলো লেখকের নিজের।
ঙ. অন্যকে শোনা নিয়ে লেখকের অনুসন্ধান চলতেই থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×