somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাজি

২০ শে আগস্ট, ২০০৬ ভোর ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

----(1)----

'আসবে না'
'সিওর?'
'ড্যাম শিওর'
'বাজি হয়ে যাক!'
'সই'
'গ্র্যান্ড প্রিন্স এ খাওয়াতে হবে কিন্তু?'
'এ্যানি হোয়্যার'
'2 দিন সময় নিলাম; এর মধ্যে ও তোর সামনে হাজির হবেই :) শালার কপালের ঝোল আমি মাটিতে ফেলবোই!'
'শুধু ঘাম ফেললেই হবে না; নাকানিচুবানিও খাওয়ানো লাগবে'
'হা হা হা, ওকে; দ্যাখ না কি করি ;)'

----(2)----

হ্যালো- রাখাল?
'কি ব্যাপার মহারাজ... এতদিন পর?'
'আরে বলিস না; লাইফ আমার হেল হয়ে গেছে'
'ঐটাতো আগেও ছিল!'
'দ্যাখ ফাজলামি করবি না; মনটা বহুত খারাপ'
'তাই নাকি?'
'হুম, সকাল থেকেই অদ্ভুত সব ফোনকল আসতাছে, বলছে- আপনি কি পাত্র?'
'বলিস কি?'
'সত্যিই তাই; অনেকেতো গালিগালাজও দিল। আচ্ছা তোর কাছে প্রথম আলো পত্রিকা আছে?
'নাহ, কেন বলতো?'
'তুই নির্মলের বাসায় থাক; আমি বাসা হয়ে আসতাছি'
'ঠিক হ্যায়'

----(3)----

তারপর? নির্মল খুব আগ্রহ ভরে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
'মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করতাছে। ঘরে ঢুকেই দেখলাম ভাইয়া, ভাবী আর আত্মীয়স্বজনরা গোল মিটিং করতাছে। দুলাভাই আমাকে দেখে বলছে- 'তুমি যে বড় হয়েছো, সেটাতো আমাদের আগে জানাবা, নাকি?'
আমিতো তাজ্জব। সকাল থেকে আজব ফোন পেয়ে তিক্তবিরক্ত, বাসায় ফিরেও যদি এমন আজব কথা শুনি কেমন লাগে বল? দেখলাম, আমার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে! বড় ভাই প্রথম আলো'র একটা পৃষ্ঠা ছুঁড়ে দিলেন। ঠোঁট বাঁকিয়ে নাকি সুরে বললেন- পাত্রকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা থাকতে হবে...।

পত্রিকা পড়ে আমিতো বেকুব বনে গেছি। ভাবী বলছে, 'ইদানিং ওর আচার আচরন আমার কাছে কেমন যেন ঠেকছিল। ভেতর ভেতর যে কিছু একটা ঘটাচ্ছে তা টের পাচ্ছিলাম'। ভাইয়া বলছে- 'আমার সংসারে যদি তোর মন না টেকে তাহলে আর কাউকে না হয়, আমাকেতো বলা উচিৎ ছিল তোর। নাকি?'। এসব কথা শুনে দুকান দিয়ে ঝাঝা করছিল। আর কি বলবো, বল? সবইতো শুনলি।

'হুম, খুবই মর্মস্পশী, খুবই হৃদয়বিধারক কাহিনী! তা পত্রিকায় কি লেখা ছিল?'
ও খবরের কাগজের পৃষ্ঠাটা ছুঁড়ে দিল। পাত্র/পাত্রী চাই কলামের তিন নাম্বার সিরিয়ালে লেখা-

'জরুরী ভিত্তিতে পাত্রী চাই। বিবিএ তে (শেষবর্ষ) অধ্যায়নরত সুদর্শন, স্মার্ট, ভদ্র, নামাজী পাত্রের (5-7''/23) জন্য সুন্দরী, মার্জিত, সংস্কৃতমনা অবিবাহিত পাত্রী চাই। পাত্রকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা থাকতে হবে। সরাসরি যোগাযোগ- 017119712....?

হাসতে হাসতে নির্মল বেড থেকে নিচে পড়ে গেছে। থেমে থেমে বলছে- পাত্রকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা থাকতে হবে? হা হা হা হা হা।
'রাজু হাবার মত তাকিয়ে আছে'
'চল তোকে আজ গ্র্যান্ড প্রিন্স এ খাওয়াই। দিনটাকে সেলিব্র্যাট করি' ;)
'তুই খাওয়াবি? তুই? ফকির রাখাইল্যার ব্যাংকে দেখি টাকা উপছে যাচ্ছে!'
'তা বলতে পারেন। আজকে বড় একটা দাও মেরেছি কিনা।'
শুনে নির্মল চুপশে গেছে!

----(4)----
(গ্র্যান্ড প্রিন্স)

'দেখলি? দোস্তদের ভুলে থাকলে এমনই হয়'
'ঠিক ঠিক' মাথা নেড়ে সায় জানায় নির্মল।
'তার মানে?'
'নিয়মিত দেখা সাাৎ করলে এমনটা নাও হতে পারতো। মানে, আমরা সব কিছু ম্যানেজ করে দিতাম'
'ম্যানেজ করে দিতি মানে?'
'ম্যানেজ মানে এখন তোর বাসায় যেয়ে ভাইয়াকে বলতাম, ভাইয়া ওর কোনো দোষ নাই- ওটা একটা প্রিন্টিং মিসটেক ছিল। কিন্তু এখন আমরা যাব না; কারন তুই দোস্তদের ভুলে গেছস!'
'দেখ, আমার কিন্তু সন্দেহ হইতাছে, কাজটা তোরা করস নাইতো?'
রাখাল আর নির্মল একে অপরের দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে সমস্বরে বলে-
'মোটেই না, মোটেই না!'

----(5)----

বাসে উঠে গেছে রাজু। জানলা দিয়ে বলছে- 'দোস্ত কাজটা তোরা করিস নাইতো?'
'গ্র্যান্ড প্রিন্সে তোকে খাওয়ালাম, তারপরও সন্দেহ আছে?'
'কী??? শালা তোদের আমি...'

বাস থেকে নেমে রাজু দুজনের কাউকে দেখতে পেল না। ওরা হাসতে হাসতে ভিড়ে মিশে গেছে। একবুক স্বস্তির শ্বাস ফেলে ও গাড়িতে চেপে বসে। বাস চলে যাওয়ার জন্য অপো করছিল ওরা দুজন। নির্মলের কাধে হাত ঝুলিয়ে রাখাল বলে-

'ক্যামন দেখলি?'
'তোর কোন তুলনা নাই'
'ওরকম শুষ্কা মুখে এত সুন্দর কথা মানাচ্ছে না। একটু হাসি দিয়ে বল :)'
'টাকাতো আমার গেছে, তোর যায় নাই'
'চল শোধবোধ করে দেই'
'ক্যামনে?'
'স্পেশাল চানাচুর খাওয়াবো তোকে আজ! জিবে পানি এসে যাচ্ছে!'
'দুই টাকায় সব শোধবোধ? হা হা হা, শালা তুই মানুষ হবি না'
'বড়লোক হয়ে নেই, তারপর তোদের সামনে মানুষ হবোনে, দেখে নিস? :) সন্দেহ থাকলে আবার বাজি ধরতে পারিস হা হা হা'
'আবার বাজি? কাভি নেহি, কাভি নেহি! :)'
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ওহাবী-সালাফি-মওদুদীবাদ থেকে বাঁচতে আরেকজন নিজাম উদ্দীন আউলিয়া দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৩৩

১.০
ঐতিহাসিক জিয়া উদ্দীন বারানী তার তারিখ-ই-ফিরোজশাহী বইতে শায়েখ নিজাম উদ্দীনের প্রভাবে এই উপমহাদেশে জনজীবনে যে পরিবর্তন এসেছিল তা বর্ণনা করেছেন। তার আকর্ষণে মানুষ দলে দলে পাপ থেকে পূণ্যের পথে যোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই ৩০ জন ব্লগারের ভাবনার জগত ও লেখা নিয়ে মোটামুটি ধারণা হয়ে গেছে?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৬ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৯



গড়ে ৩০ জনের মতো ব্লগার এখন ব্লগে আসেন, এঁদের মাঝে কার পোষ্ট নিয়ে আপনার ধারণা নেই, কার কমেন্টের সুর, নম্রতা, রুক্ষতা, ভাবনা, গঠন ও আকার ইত্যাদি আপনার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্তনাদ

লিখেছেন বিষাদ সময়, ১৬ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২১

গতকাল রাত থেকে চোখে ঘুম নাই। মাথার ব্যাথায় মনে হচ্ছে মাথার রগগুলো ছিঁড়ে যাবে। এমনিতেই ভাল ঘুম হয়না। তার উপর গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে উচ্চস্বরে এক ছাগলের আর্তনাদ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন তার আকাশের বলাকা || নিজের গলায় পুরোনো গান || সেই সাথে শায়মা আপুর আবদারে এ-আই আপুর কণ্ঠেও গানটি শুনতে পাবেন :)

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:০০

ব্লগার নিবর্হণ নির্ঘোষ একটা অসাধারণ গল্প লিখেছিলেন - সোনাবীজের গান এবং একটি অকেজো ম্যান্ডোলিন - এই শিরোনামে। গল্পে তিনি আমার 'মন তার আকাশের বলাকা' গানটির কথা উল্লেখ করেছেন। এবং এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×