somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্রলীগ কর্মীর নির্যাতনে বিবর্ণ সাইফুলের সব স্বপ্ন

২৭ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভূমিহীন কৃষক বাবার বড় সন্তান সাইফুল ইসলাম। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কবি জসীমউদ্দীন হলে ছাত্রলীগের বহিরাগত এক কর্মী তাঁকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার পর এখন তাঁকে হাঁটতে হয় খুঁড়িয়ে। জীবন বাঁচাতে আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সহায়তা চান দরিদ্র ওই ছাত্রটি।
সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। থাকতেন জসীমউদ্দীন হলের ২৩২ নম্বর কক্ষে। নিরাপত্তা চেয়ে ১৯ অক্টোবর তিনি শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কে এম সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটি আমার কাছে একটি আবেদনপত্র দিয়েছে। তাতে ঘটনার যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা মর্মান্তিক ও মর্মস্পর্শী। এভাবে একটি মেধাবী ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে যেতে পারে না। শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রক্টরের কার্যালয়ে দেওয়া সাইফুলের আবেদনপত্র থেকে জানা যায়, মিরাজ হোসেন শেখ নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীর মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীমউদ্দীন হলে ওঠেন। বাড়ি থেকে টাকা দেওয়ার কোনো সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। হলে থাকার নিশ্চয়তা দেন মিরাজ। বিনিময়ে তাঁকে ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে হতো।
সাইফুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনৈতিক অনেক কাজ করাতে চাইতেন মিরাজ। হঠাৎ আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চিকিৎসার জন্য দরকার হয় ৭০ হাজার টাকা। মিরাজ আমাকে বলে সেনাবাহিনীতে তার পরিচিত লোক আছে। সে চাকরি দিতে পারবে। মিরাজের কথামতো আমি প্রার্থী নিয়ে যাই। তাদের কাছ থেকে মিরাজ দুই লাখ টাকা নেয়। কিন্তু সময় পার হলেও মিরাজ চাকরি দিচ্ছিল না। টাকাও ফেরত দিচ্ছিল না। একদিন আমাকে ফোন করে মিরাজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেতে বলে।’
পরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইফুল। বলেন, ‘টাকা দেওয়ার কথা বলে নিয়ে ওরা আমাকে রড দিয়ে পেটায়। বলে, স্ট্যাম্পে লিখে দিতে হবে যে টাকা ফেরত পেয়েছি। কিন্তু সই করতে রাজি না হওয়ায় বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। ওরা আমার ডান হাতের প্রতিটি আঙুল ও একটি পা ভেঙে দেয়। এরপর আমাকে নিয়ে যায় কালামপুর আমাতুন্নেসা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে। সেখানে আরেক দফা নির্যাতন করা হয়। জ্ঞান ফিরলে দেখি হাসপাতালের বিছানায়।’
দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় সাইফুল। তাঁর চিকিৎসার খরচ চালানোর জন্য একমাত্র বাড়ির জায়গার একাংশ বিক্রি করে দেন বাবা খলিলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকিৎসা করতে গিয়ে আমরা এখন প্রায় নিঃস্ব। কিন্তু আমি চাই, অন্তত আমার ছেলেটা যেন আবার পড়ালেখা শুরু করতে পারে।’
মিরাজ হোসেন শেখ বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না, এটা সত্যি। কিন্তু সাইফুলের সঙ্গে টাকা নিয়ে আমার ঝামেলা হয়েছে, এটা মিথ্যা। সে তার এলাকায় টাকা লেনদেন নিয়ে মার খেয়েছে বলে শুনেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভাই আমার নামে এমনিতেই একটি মামলা আছে। আমি কিছুদিন জেলে ছিলাম। দয়া করে কিছু লিখবেন না।’
জসীমউদ্দীন হলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়া সত্ত্বেও মিরাজ জসীমউদ্দীন হলের ২২০ নম্বর কক্ষে থাকেন। পাশের কক্ষেই থাকেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত। ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী মিরাজ এনায়েতের ঘনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচিত। মিরাজের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে মাদকদ্রব্যের ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে। হলের ছাত্ররা বলেছেন, হলে প্রতিদিনই এনায়েতের সঙ্গে মিরাজকে দেখা যায়। মিরাজ সব জায়গায় নিজেকে এনায়েতের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন।
তবে কাজী এনায়েত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মিরাজের সঙ্গে তাঁর তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। আপনার পাশের কক্ষেই একজন বহিরাগত কীভাবে থাকে, জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি। সাইফুলের ঘটনার বিষয়েও তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। (সুত্র: প্রথম আলো, সরাসরি প্রকাশিত)

ছাত্রলীগের বন্ধুদের কাছে আমি প্রশ্ন করব, আর কত জীবনের বিনিময়ে এদেশের মানুষ মুক্তি পাবে ? পাবে বিজয়ের প্রকৃত স্বাদ।

আর আসেন লীগ সমর্থক ব্লগাররা আমার পোষ্টে মাইনাস দিয়ে যান, তবু প্রকৃত ঘটনাটা জানুনতো একবার।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:১৬
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×