somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা - এর প্রতিকারে সমাজ ও আমাদের দায়িত্ব

০৮ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আত্মহত্যা করতে যাওয়া মানুষেরা অনেক দিন ধরেই একটু একটু করে ‘কিউ’ দিতে থাকে, জানান দিতে থাকে তাদের আত্মহত্যার সম্ভাবনা। দুর্ভাগ্যবশত আমরা, তার চারপাশের মানুষেরা সেই ইশারা বা কিউগুলির অর্থ বের করতে পারি না। হয়তো খেয়াল করি না বলে ধরতে পারি না, বুঝতে পারি না। যদি পারতাম, তাহলে রুখে দেওয়া সম্ভব আত্মহত্যার প্রক্রিয়াটি।

কিছুদিন আগে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে একটি মেয়ে পরে আত্মহত্যা করেছিল। আত্মহত্যার পূর্বে একাধিক জনকে ফোন করে করে সে বিরক্ত করেছিল। এই তীব্র সময়ে তাকে সাহায্য করার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি! না নিকট না দূরের কারো সাহায্য পায়নি সে, পায়নি কারো কাছ থেকে স্বান্তনাটুকু যা সে হয়তো প্রত্যাশা করছিলো।

উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, কানাডায় ডাক্তার, সোশ্যাল ওয়ার্কার, মনোচিকিৎসক, স্কুলের শিক্ষক, নার্স অথবা সামাজিক কোনো দায়িত্ববান কারও কাছে যদি কেউ ভুলক্রমেও আত্মহত্যার সম্ভাবনার কথা জানায় অথবা হুমকি দেয়, সঙ্গে সঙ্গে সেই দায়িত্ববান মানুষটির প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় এই মানুষটিকে এক মুহূর্তের জন্যেও ছেড়ে না দেওয়া। এমনকি বাথরুমেও নয়। তাকে ইমার্জেন্সিতে বা একজন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে পাঠিয়ে এই তীব্র ইমোশনের কোনো একটা তাৎক্ষণিক সুরাহা করে তবেই রেহাই! নইলে ওই পদের মানুষটির চাকরি হারাতে তো হবেই, পাশাপাশি তার জেল-জরিমানা হবার সম্ভাবনাও থাকে।

এ জন্য অন্যান্য উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও সামাজিক প্রচারণা আর সংগঠনের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের ভেতরে এই সচেতনতা তৈরি করে এ ধরণের আত্মহত্যা রোধ করা সম্ভব। দুঃখের তীব্রতা নয়, স্ট্রেস হ্যান্ডেল করার দক্ষতার অভাবই আত্মহত্যার মূল কারণ। তারপরও দুএকটি ঘটনা যে ঘটবে না তা বলা যাবে না, তবে সংখ্যাটা কমে আসবে।

বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার এ প্রবণতাটা বেশি। কারন তারা আবেগতাড়িত। হঠাৎ প্রেমে পড়া, অভিমান আর কষ্ট কোনটারই লাগাম এরা টানতে পারে না। নিজের বিশ্বাস, মূল্যবোধ, শিক্ষা ও সামাজিক মূল্যবোধের শিকার হয়ে সমাজের চাওয়া অনুযায়ী প্রাণপণে আচরণ করতে থাকে। কোথাও সেটার ব্যত্যয় হয়েছে বলে মনে করলে তার নিজের মূল্যমান নিজের কাছে ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করে। সেলফ এসটিম কমে আসার এ প্রক্রিয়ায় সে প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এ সময়ে তার অন্যের সাহায্যের দরকার হয়। অন্ততপক্ষে ভারমুক্ত হতে আস্থাভাজন কারও কাছে নিজেকে উজাড় করে সব উগড়ে দিতে হয়। তাই আপনার চারপাশের বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের খেয়ালে রাখুন। আত্মহত্যা করতে যাওয়া মানুষেরা অনেক দিন ধরেই যেহেতু একটু একটু করে ‘কিউ’ দিতে থাকে, জানান দিতে থাকে তাদের আত্মহত্যার সম্ভাবনা। তাই তাদের সেই ইশারা বা কিউগুলির অর্থ বের করার চেষ্টা করুন, তার সাথে কথা বলুন, তাকে বুঝান। তার জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, কোনো কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করা। তাঁরা কোনো জাজমেন্টে না গিয়েই গল্প শুনিয়ে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাতেই পাহাড়সমান ইমোশন-অভিমান অনেকটাই হালকা হয়ে যায়। আর আবেগপ্রবণ সে কিশোর বা কিশোরী নিজের জীবনকে ভালোবাসতে শিখবে। তাকে বলুন-

‘‘ভালোবাসা একটি নরম-দরকারি অনুভূতি আর প্রেমে পড়া একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা হতে পারে মানুষের জীবনে। তবে সবার আগে তুমি নিজেকে ভালোবাসবে। এই পৃথিবীতে তোমার নিজের চেয়ে প্রিয় আর কিছুই হতে পারে না এবং তুমি কাউকে তোমার নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পার না। তুমি নিজেকে সবচেয়ে ভালোবাস বলেই আর কাউকে তুমি তোমার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে পার না। কেউ যদি তোমাকে ‘প্রিটি’ বলে, তুমি খুশি হতে পার, কিন্তু তুমি ‘প্রিটিয়ার’ হবার চেষ্টা করতে পার না তাকে খুশি করবার জন্যে। তুমি কাউকে ভালোবাসবে তোমার ইচ্ছায়, কিন্তু তোমার চাওয়া-পাওয়ার লাগাম যেন তোমার হাতেই থাকে, তার হাতে নয়। তুমি বাঁচবে তোমার নিজের জীবন অর্থবহ করতে, আর কারও নয়।’’

সুত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×