somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা কি?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"ভালোবাসা দেয় না কিছু, শুধু নিজেকে ছাড়া;
ভালোবাসা নেয় না কিছু, শুধু ভালোবাসা ছাড়া।
ভালোবাসা অধিকার করে না কিছু্ই, না তাকে অধিকার করা যায়;
কেননা, ভালোবাসা সুসম্পন্ন
ভালোবাসাতেই।"

ভালোবাসা আসলে কি? দেয়া যায় কি ভালোবাসার কোন সংজ্ঞা? আমি মনে করি ভালোবাসার কোন সংজ্ঞা নেই, নেই কোন মাপকাঠি। ভালোবাসা হলো নিঃস্বার্থভাবে প্রিয় মানুষটির জন্য মঙ্গল কামনা। কারো প্রতি অতিরিক্ত যত্নশীলতা কিংবা প্রতিক্ষেত্রে কারো উপস্থিতি অনুভব করা । বিশেষ কোন মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ। আবার ভালোবাসাকে অনেকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখে থাকে। ভালোবাসা বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন: নিস্কাম ভালোবাসা, প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা, ধর্মীয় ভালোবাসা, গরিব, অনাথ প্রতিবন্ধিদের ভালোবাসা, আত্মীয়দের প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদি। এক্ষেত্রে আবেগধর্মী যে ভালোবাসা সেটা হলো সবচেয়ে গভীরতম ভালোবাসা। যে। যেখানে শরীরের ব্যাপারটাকে আলাদা করে দেখা যায় না। ভালোবাসার এই আবেগটাকে সেই সত্যিকার ভাবে অনুধাবন করতে পারে যখন কেউ প্রকৃত প্রেমে পড়ে। ধনাত্নক অনুভূতির কথা বিবেচনা করে ভালোবাসাকে ঘৃণার বিপরীতে স্থান দেয়া যায়। ভালোবাসায় যৌনকামনা কিংবা শারীরিক লিপ্সা একটা গৌণ বিষয়। এখানে মানবিক আবেগটাই বেশী গুরুত্ববহন করে। কল্পনাবিলাসীতার একটা ক্ষেত্র হচ্ছে এই ভালোবাসা। ভালোবাসা সাধারণত শুধুমাত্র বন্ধুত্ব্ব নয়। যদিও কিছু সম্পর্ককে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব বলেও অবিহিত করা যায়। প্রচলিত ধারণায় ভালোবাসা, নিঃস্বার্থতা, স্বার্থপরতা, বন্ধুত্ব, মিলন, পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত। ভালোবাসার নানা বিশ্লেষন করতে থাকলে ভালোবাসার ডালপালা গজাতেই থাকবে। সে ডালে ঝুলতে থাকবে ভালোবাসার নানা অনুকাব্য। বন্ধুগণ চলুন জেনে নেই লেবাননের বিখ্যাত সাহিত্যিক “কাহলিল জিবরান ” তার বিখ্যাত বই “দ্য প্রফট” -এ ভালোবাসা বিষয়ে কি বলেছেন। আমার মতে ভালোবাসা বিষয়ে তার কথাগুলিই সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও সুন্দর বলে প্রতীয়মান হয়েছে



ভালোবাসার সঙ্কেত এলে অনুসরণ করো তাকে;
যদিও পথ বড়ো কঠিন আর বিষম চড়াইয়।
যদিও তার ডানার অন্তরালে লুকানো তরবারি
আঘাত করতে পারে তোমাকে!

ভালোবাসা যখন কিছু বলে বিশ্বাস করো তাকে:
যদিও তার স্বর ভেঙ্গে ফেলতে পারে তোমার স্বপ্ন
যেমন উত্তরের বাতাস তছনছ করে দেয় বাগান।
ভালোবাসা যেমন পরিয়ে দেয় উষ্ণীষ,
তেমনি সে ক্রুশে বিদ্ধ করতে পারে তোমাকে;
যেমন সে তোমার বৃদ্ধির কারণ
তেমনি সে ছেঁটে ফেলতে পারে তোমাকে।
এমনকি, ভালোবাসা যেমন উত্তীর্ণ হতে তোমার উচ্চতায়
আর চুমু খেতে পারে তোমার কোমল ডালপালায়
যা কেঁপে কেঁপে উঠছে রৌদ্র-
তেমনি সে নেমে আসতে পারে তোমার শিকড়ে
আর আলগা করে দিতে পারে মাটির বাঁধন।

ফসলের আঁটির মতো সে সংগ্রহ করে রাখবে তোমাকে।
তোমাকে নির্বসন করে ঝেড়ে ফেলবে সব শস্য।
সমস্ত খোসা থেকে তোমাকে চেলে নেবে চালুনির মতো।
সে তোমাকে পিষে ফেলবে সমগ্র শুভ্রতায়।
তোমাকে ঠাসতে থাকবে যতক্ষণ না তুমি হয়ে উঠছো
নরম, তুলতুলে;
তারপর সে তোমাকে নিক্ষেপ করবে তার পবিত্র আগুনে-
যাতে তুমি হয়ে উঠতে পারো এককন্ড পবিত্র রুটি
ঈশ্বরের পবিত্র ভোজনের জন্য,
ভালোবাসা এইভাবে বুঝতে দেবে তোমার হৃদয়ের সমূহ গোপন,
আর সেই অর্জিত প্রজ্ঞায়
তুমি হতে পারবে জীবনের একটুকরো অংশ।

কিন্তু যদি ভীরু হয়ে তুমি খোঁজো শান্তি আর সুখ
ভালোবাসায়,
তাহলে ঢেকে ফেলো তোমার নগ্নতা আর পেরিয়ে চলো
প্রেমের শস্যমাড়াই-এর ক্ষেত-
চলে এসো এক ঋতুহীন পৃথিবীতে
যেখানে তুমি হেসে উঠবে, কিন্তু যা নয় তোমার সবখানি হাসি
যেখানে তুমি কেঁদে উঠবে
কিন্তু যা নয় তোমার সবটুকু কান্না।

ভালোবাসা দেয় না কিছু, শুধু নিজেকে ছাড়া;
ভালোবাসা নেয় না কিছু, শুধু ভালোবাসা ছাড়া।
ভালোবাসা অধিকার করে না কিছু্ই, না তাকে অধিকার করা যায়;
কেননা, ভালোবাসা সুসম্পন্ন
ভালোবাসাতেই।

যখন ভালোবেসেছো তুমি
কখনও বলোনা –ঈশ্বর হৃদয়ে আমার।
বরং বলো- ঈশ্বরের হৃদয়ে রয়েছি আমি।
ভেবোনা কখনও নির্ধারিত করে দেবে তুমি প্রেমের চলার পথ;
কেননা, যোগ্য যদি মনে করে-
প্রেমই চালিয়ে নেবে তোমাকে।

ভালোবাসার অভিলাষ নেই কোনও কিছু নিজেকে সম্পূর্ণ করা ছাড়া।
কিন্তু যদি ভালোবেসে অভিলাষ রাখতে হয় কিছু
তাহলে প্রার্থনা করো এইসব:
বিগলিত বয়ে যাও ছোট্ট সেই নদীর মতোন
রাত্রিকে গান যে শোনায়।
বুঝে নাও কোমল বেদনা।
যে টুকু বুঝেছো ভালোবাসা তাই বুঝে নির্যাতিত হও;
আনন্দে ও স্ব-ইচ্ছায় বিনির্গত হোক রক্তধারা।
জেগে ওঠো ভোরে
হৃদয়ে নতুন ডানায়,
আর একটি প্রেমাতুর দিন পেলে বলে ধন্যবাদ দাও;
দুপুরের শ্রান্তির মধ্যে ধ্যান করো প্রেমের উচ্ছ্বাস;
সন্ধ্যায় ফিরে এসো কৃতজ্ঞতায়;
রাত্রিতে ঘুমাও
প্রেমিকের জন্য বুকে রেখে নীরব প্রার্থনা,
আর দুই ঠোঁটে প্রেমময় গান।।

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:০৩
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×