somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাথাবিহীন লাশ কবরস্ত করার সময় নববধুর বিলাপ “আমি তাইনের কাছে যামু আমারে লইয়া যাও’’

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেহেদী হাসান ইলিয়াস

আজকে যখন জানাযার পর তাকে করস্থ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন তার নববধু বিলাপ করছিলেন ‘আমি তাইনের কাছে যামু আমারে লইয়া যাও’ তখন সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়’। উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন নি।

নির্মম ভাবে মেহেদী হাসান ইলিয়াস হত্যা করা হয়ঃ
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় এক যুবলীগ নেতাকে হত্যার পর তাঁর ধর থেকে মাথা কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর নাম মেহেদী হাছান ইলিয়াস (৩২)। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের বেলদিয়া গ্রামে ইলিয়াসের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত ইলিয়াস উপজেলা যুবলীগের সদস্য এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস উদ্দিন আহাম্মেদের সাবেক পিএস (ব্যক্তিগত সহকারী) ছিলেন।
ইলিয়াসের পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে আধুনিক ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ৬০-৭০ জনের একদল দুর্বৃত্ত ইলিয়াসের বাড়ি ঘেরাও করে। এরা বাড়ির প্রধান ফটক ও ঘরের চারটি দরজা-জানালা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে ইলিয়াসকে খুঁজতে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে ইলিয়াস বাথরুমে গিয়ে লুকান। ঘরে কোথাও তাঁকে না পেয়ে দুর্বৃত্তরা বাথরুমের বাইরের দিক থেকে দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করে এবং ধর থেকে মাথা কেটে নিয়ে যায়।
ইলিয়াসের ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন জানান, দুর্বৃত্তরা যখন বাড়ি ঘেরাও করে ইলিয়াস তখন মোবাইল ফোনে গফরগাঁও থানার ওসি, পাগলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জামালকে বিষয়টি জানান। ইলিয়াসের স্বজনদের আর্তচিৎকার ও মোবাইলে খবর পেয়ে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তদের একাংশের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে আলী হোসেন (২৮), মকবুল হোসেন (৩৩), জয়নাল (২৮) ও শহীদুল্লাহ (৩২) গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে আহছান উল্লাহ (২৬) ও নাজিম উদ্দিন (৪৫) আহত হন। আহতদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের মা জমিলা খাতুন বলেন, 'দুর্বৃত্তের দল বাড়ি ঘেরাও করে যখন ইলিয়াসকে পায়, তখন আমি ও ইলিয়াসের স্ত্রী নার্গিস আক্তার দুর্বৃত্তদের পায়ে ধরে ইলিয়াসের জান ভিক্ষা চাই। কিন্তু তারা আমাদের লাঠি ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায় এবং আমাকে ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেয়। পরে তার স্ত্রীর সামনেই ইলিয়াসকে জবাই করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইলিয়াসের স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, এলাকার কামরুল ডাকাত, শফিকুল ইসলাম ওরফে সমবাইরা ডাকাত ও এখলাস ডাকাতের হাতে নিগুয়ারী, টাংগাবসহ আশপাশের দু-তিনটি ইউনিয়নের মানুষ জিম্মি হয়ে আছে। এসব ডাকাতের বিরুদ্ধে সব সময় তৎপর ছিলেন ইলিয়াস। এরাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
তারা আরো জানায়, ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাতেও ডাকাতদল ইলিয়াসকে কুপিয়েছিল। সেই ঘটনায় ইলিয়াস বাদী হয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী কামরুল পালোয়ান ওরফে হাতকাটা কামরুল, তার ভাই আলাউদ্দিন পালোয়ান এবং আন্তজেলা ডাকাত শফিকুল ইসলাম সমবাইরা, এখলাছ, রায়হানসহ ৩৭ জনের নামে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার পরপর এলাকাবাসী বেলদিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম সমবাইরা (ডাকাত) ও তার পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে। এর জের ধরে ইলিয়াস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম ফারুক। এ ব্যাপারে গফরগাঁও থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, মনে হচ্ছে পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩২
৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×