somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্রাজিলের ধ্রুপদী ছন্দে বিধ্বস্ত আর্জেন্টিনা

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা। তার পরও ব্রাজিলের কাছে দ্বৈরথটি ছিল টাইব্রেকারের মতো। ধারে-ভারে সেলেসাওরা আলবিসেলেস্তেদের চেয়ে এতটাই এগিয়ে যে জিতলে মনে হবে, জেতারই তো কথা। কিন্তু ব্যর্থ হলেই উঠে যাবে 'গেল গেল' রব। প্রথম লেগে আর্জেন্টিনায় গিয়ে ড্র করে আসার পর চাপটা বেড়ে গিয়েছিল আরো। সেই চাপ জয় করে পরশু মানো মেনেজেসের শিষ্যরা দেখিয়েছেন তাঁদের জাদু। আর তাতেই পরাস্ত আর্জেন্টিনা। ২-০ গোলের জয়ে সুপার ক্ল্যাসিকো জিতে নিল ব্রাজিলই।
ফিফার ক্যালেন্ডারের বাইরের সূচি বলে এই মহারণে ছিল না ইউরোপিয়ান লিগে খেলা সৈনিকরা। তাতে ব্রাজিল হারিয়েছে দানি আলভেজ, হুলিও সিজারদের মতো কয়েকজনকে। আর আর্জেন্টিনা তো লিওনেল মেসি, সার্জিও অ্যাগুয়েরো, গনজালো হিগুয়াইনসহ প্রথম একাদশের প্রায় সবাইকে। ছিলেন যাঁরা, সেই হুয়ান রোমান রিকুয়েলমে, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনদেরও কেড়ে নিয়েছে ইনজুরি। ক্যানারিনহাদের তবু ছিলেন নেইমার, রোনালদিনহোরা। এ কারণেই সংশয়াতীত ফেভারিটের তকমাটি ছিল তাদের গায়ে। প্রথম লেগে নিজেদের নামের প্রতি তারা সুবিচার করতে পারেনি বটে তবে দ্বিতীয় লেগে খেলেছে নিজেদের মতোই। সৃজনশীল সৌন্দর্যের বিচ্ছুরণে আলোকিত করেছে ঘরের মাঠ। 'জোগা বোনিতো'র প্রত্যাবর্তনের আশা আর ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের পালে তাই লেগেছে জোর হাওয়া।
স্কোরলাইন দেখাচ্ছে মাত্র ২ গোলের জয়। তবে ব্রাজিলের আধিপত্য ছিল এর চেয়ে ঢের বেশি। আক্রমণে আক্রমণে তারা ছিঁড়েকুঁড়ে ফেলেছে আর্জেন্টাইন ডিফেন্স। আর সেটি ম্যাচের প্রায় শুরু থেকেই। নেইমার-রোনালদিনহো থাকলেও স্বাগতিকদের বেশির ভাগ আক্রমণের সূত্রধর ছিলেন লুকার মোউরা। সাও পাওলোয় খেলা ১৯ বছরের এই মিডফিল্ডার তাঁর গতি-ড্রিবলিং-পাসিং-শ্যুটিং দিয়ে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টিনার ওপর দিয়ে।
প্রথমার্ধেই কয়েক গোলে এগিয়ে যেতে পারত ব্রাজিল। অষ্টম মিনিটে মার্কারকে ছিটকে নেওয়া লুকাসের শট একটুর জন্য বেরিয়ে যায় বাইরে। নেইমারের আরেকটি চেষ্টা সরাসরি চলে যায় আর্জেন্টাইন কিপারের হাতে। ৩৯ মিনিটে লুকাস একাই চার ডিফেন্ডারের মাঝ থেকে বেরিয়ে পাস দেন বোর্গেসকে। তাঁর আড়াআড়ি বলে পা ছোঁয়ালেই গোল। সেটি যে কিভাবে মিস করলেন নেইমার! মিনিট দুয়েক পর লুকাসের ভলিও পায়নি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য।
দ্বিতীয়ার্ধে আলেসান্দ্রো সাবেলার দল সামলে নেয় খানিকটা। খেলার ধারার বিপরীতে গিয়ে আর্জেন্টিনাকে লিড প্রায় পাইয়ে দিচ্ছিলেন অগাস্তো ফার্নান্দেজ। সেভ করেন জেফারসন। এরপর সেই ধ্রুপদী ক্ষণ। ম্যাচের তখন ৫৪তম মিনিট। আর্জেন্টিনার কর্নার থেকে পাওয়া বল ক্লিয়ার করে তিন পাসে সেটি চলে যায় লুকাসের পায়ে। নিজেদের সীমা থেকে দৌড় শুরু করা এই মিডফিল্ডার চোখের পলকে ছিটকে ফেলেন দেসাবাতো ও পাপাকে। ৫০ মিটারের এক অবিশ্বাস্য দৌড় শেষ হয় বলকে জালে জড়িয়ে দিয়ে। রক্ষণের বল ক্লিয়ার থেকে আক্রমণে গিয়ে গোল_পুরো প্রক্রিয়ায় সময় লাগে মাত্র ১১ সেকেন্ড!
৭৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাজিল। ব্রনো কোর্তেস থেকে বল যায় দিয়েগো সুজার কাছে। তাঁর আড়াআড়ি পাস থেকে নেইমারের টোকায় বল জালে। জয় নিশ্চিত ব্রাজিলের। এরপর ছয়জন মিলে যে উল্লাস করলেন, তাতেই বোঝা যায় এ জয়ের মাহাত্ম্য। মেনেজেসের অধীনে আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, জার্মানির মতো বড় দলগুলোকে আগে হারাতে পারেনি ব্রাজিল। পরাশক্তির বিপক্ষে এটিই তাদের প্রথম জয়। এ কারণেই এ জয়ের মাহাত্ম্য অনেক।
দ্বৈরথ শেষে ব্রাজিলের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন আর্জেন্টিনার কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা, 'এটি মানতেই হবে, দুই লেগের ১৮০ মিনিট মিলিয়ে যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে ব্রাজিল।' সাবেক ফিফা বর্ষসেরা রোনালদিনহোর উচ্ছ্বাস তরুণ প্রতিভাদের দীপ্তিময় উপস্থিতির কারণে, 'নেইমার-লুকাসের মতো তরুণ প্রতিভাদের সঙ্গে খেলা সত্যি দারুণ ব্যাপার। জাতীয় দলে আমাকে আবার ডাকা হয়েছে, ওদের সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই চেষ্টাই আমি করছি।'
রোনালদিনহো পরশু সমর্থন দিয়েছেন নেইমার-লুকাসদের। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরবেন পাওলো হেনরিক গানসো, লিয়ান্দ্রো দামিয়াওরাও। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্বপ্নে রং না লেগে পারে! ওয়েবসাইট
কালের কন্ঠ
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×