somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

... তাহলে ইসলামের "প্রানীর ছবি আকা হারাম"-নির্দেশটি কতটা যৌক্তিক ?

১৮ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[ প্রথমেই বলে রাখি আলোচ্য বিষয়টির ব্যাপারে কোন লেখা আগে পড়িনি, নিজ বিবেচনায় যতদুর উপলব্ধি হয়েছে সেখান থেকে সামান্য
"নেট"গবেষনা করে যা পেয়েছি তার উপর ভরসা করে লিখেছি ।
তবে নিঃসন্দেহে "আবালীয়" কিছু না দেয়ার চেষ্টা করেছি ...
সম"চিন্তার পক্ষের/বিপক্ষের কোন লেখা পেলে ধন্য হব, পুনর্মুল্যায়ন করব নিজেকে ... কথা দিচ্ছি । ]
.................................................................................................

আমরা সবাই জানি ... ইসলামে প্রানীর ছবি আকা হারাম ।
ঠিক মনে নেই, এটা হাদীস না কুরআন ... স্বয়ং আল্লাহ কিম্বা মুহাম্মদ (স্বয়ং আল্লাহ ঘোষিত প্রদত্ত পুরুষ) কারো'ও একজনের নির্দেশ ।

ঠিক আছে ... ... এবার আলোচনার দ্বিতীয় অংশে যাই,

আমরা সবাই জানি ভাষার বিবর্তন হয় ...
বিবর্তন হয় ভাষার Written Form'-এ ।
আজ আমরা যে হরফ, বর্ণ, অক্ষর আমরা ব্যবহার করি তা একদিনে কেউ আবিস্কার করেনি বা ঈশ্বর প্রদত্ত'ও নয় যে "পাইছি মাল খাইছি"।হাজার হাজার বছরের ক্রমবিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এসেছে এসব হরফ।

খুব স্বাভাবিক আলো বাতাস খাওয়া জ্ঞান থাকলেই উপলব্ধি করা যায় ব্যাপারটি ... সভ্যতার প্রথম দিকে মানুষ অবসর সময়ে আকাঁআকিঁ করতো ... পিচ্চি বাচ্চারা যেরকমটা আকেঁ সেরকম ...

অবসর যাপন ছাড়া'ও প্রত্যহিক কাজের বিবরন, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নিজেদের ধারনা রেখে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি কারণে তারা এসব চিত্র আকঁতো ... এবং অবশ্য'ই সেখানে মানুষ ও প্রানীকুলের সরল চিত্র'ই বেশি প্রাধান্য পেত ... আজাইরা জিনিষপাতি আকাঁর টাইম বা বুদ্ধি ছিল না তাদের ।

তো; আস্তে আস্তে মানুষ সভ্য হওয়া শুরু করলো ... তাদের জীবন যাপনে চারুবোধ আসলো ... তাদের আঁকা চিত্র গুলো'ও আরো সুচারু হতে শুরু করলো ... তাদের ভাষা লিখে রাখার প্রয়োজনে সেই চিত্রগুলোই ব্যবহার হতে শুরু করলো ... এবং এম্নে এম্নে আস্তে আস্তে ... প্রাচীন হরফ বা বর্ণ বা অক্ষর আসলো ... বলা বাহুল্য সে আমলে মানুষ, প্রানীঃ বাঘ-ভাল্লুক, গরু-মহিষ, হরিণ, প্যাচা, ঈগল, সাপ গাছ-পালা ইত্যাদি ছাড়া আঁকার আর তেমন কিছু ছিল'ও না ... আর সেই কারণেই হরফ বা বর্ণ, বা অক্ষর হিসেবে এগুলাই ব্যবহার করা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় ছিল না ।
বর্তমানের বিমুর্ত অক্ষরসমুহের বিমুর্তকরণের আইডিয়া'ও তাদের আসে অনেক অনেক পরে ... মোটামুটি সেটা আধুনিক মানুষের ইতিহাসের মধ্যে ঘটে।

[সংস্কৃত বা বাংলার ব্যাপারটা জানিনা ক্যাম্নে আসছে ... মাগার দুনিয়ার বাকীসব ভাষার হরফ বা বর্ণগুলার মোটামুটি এইরকম ইতিহাস ]

তাহলে আসেন প্রসঙ্গে ফিরে যাই ...
যথেষ্ঠ এবং যথাযোগ্য প্রমান সাপেক্ষে আমাদের প্রিয় মধ্যপ্রাচ্যীয় আরবী হরফের দিকে তাকাই ...

প্রমান সাপেক্ষ গবেষনায় দেখা যায় ... সমগ্র ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভাষার এবং এর লিখিত ফর্মের জন্ম উৎস তা হচ্ছে ... Sumero-Akkadian Cuneiform ... সেখান থেকে হায়ারোগ্লিফিক্স ( Egyptian Hieroglyphs ) ... সেখান থেকে সাত-আট ঘাটের পানি খেয়ে, বিবর্তিত হয়ে তারপর আরবী ..

সংক্ষিপ্ত এই চার্ট'টি আপনাকে সাহায্য করবে বিবর্তনটা বুঝতে ... আর ফাপড় মারতেছি মনে করলে .. Click This Link


যাই হোক ... Sumero-Akkadian Cuneiform সম্পর্কে বিশেষ কোন ধারনা পাইনি। কেউ দিলে বাধিত হব । আর চার্টে এর ঠিক নিচেই আছে হায়ারোগ্লিফিক্স। হারায়োগ্লিফিক্স সম্পর্কে কে না জানি ... যারা জানেন না তাদের জন্য সচিত্রভাবে সচিত্র-হায়ারোগ্লিফিক্স এখানে দিলাম ... দেখুনঃ




স্পটত'ই বুঝতে পারছেন কিরকম সচিত্র এই হায়ারোগ্লিফিক্স ..
আর হ্যা মানুষ, প্রানী, পশু-পাক্ষী নির্বিচারে এখানে ব্যবহৃত হয়েছে হরফ হিসেবে ...

তাহলে আরবী ভাষায় আমরা যে হরফ গুলো দেখতে পাই তা মূলতঃ এই হায়ারোগ্লিফিক্সের'ই সরলীকরণ"কৃত রূপ ( এমনকি বিমূর্ত'ও নয় ) ..

তারমানে .. মানুষ, প্রানী ... পশু-পাক্ষীর ছবি'ওয়ালা হরফ গুলি'ই সময়ের আবর্তে ... বিবর্তিত বা সরলকৃত হয়ে ... আলিফ, বা, তা, ছা-এ রুপান্তরিত হয়েছে ... তাই নয় কি ... ? ? ?

আরেকটি উৎস থেকে সিনাই যুগের পরবর্তি বিবর্তনের ধাপগুলো এবং তার সময়কাল সহ কিছু ধারনা পাওয়া যায়ঃ

অথবা সংক্ষেপেঃ


এবার আসি সেই "প্রানীর ছবি আকা হারাম" প্রসঙ্গে ..

সম্ভবত কুরানে কোথাও, কুরআন'কে আরবী ভাষায় "লিখিত" করে রেখে যাওয়ার নির্দেশ ছিলনা .. মুহম্মদের'ও সেরকম কোন ইচ্ছা ছিলোনা .. বিকৃতির আশংকায় পরবর্তিতে মুহম্মদের নির্দেশেই এবং উপস্থিতেই কুরয়ান'কে আরবীতে লিখে রাখা শুরু হয় ... যেটাকে আজ'ও আমরা ঐশ্বরিক দাবী করি ...

সেই এক'ই আল্লাহ বা মুহম্মদ যখন "প্রানীর ছবি আকা হারাম" নির্দেশ দেন .. অথচ আরবী হরফ কোন না কোন কালে ছিল মানুষ, প্রানী, পশু-পাক্ষীর চিত্র ... হয়তো আলিফ একটি দাঁড়ানো মানুষ ছিল, হয়তো নুন একটি সাপ ছিলো ... হয়তো দাল-জাল-লাম গুলো প্যাঁচা কিম্বা কাঁক ছিলো ...
অবাক বিস্ময়ে তখন বিদ্রোহী না হয়ে আর উপায় থাকেনা।

সাথে অবশ্য কয়েকটা প্রশ্ন থেকেই যায়ঃ
১. বিবর্তন বা সময়ের আবর্তে সরলীকরণ করে কি হরফ গুলোর মুসলমানী হয়ে গ্যালো নাকি ?
... নাকি অযু করা হয়ে গ্যালো হরফ গুলোর ?

২. সর্বজ্ঞাত এবং সর্বজ্ঞাতর প্রেরীত, তারা উভয়'ই কি হরফ বিবর্তনের ইতিহাস'টি জানতো না ... ? ?

৩. যদি জানত, তাহলে কি এমন উলটা পালটা নির্দেশ দিত যে ... প্রানীর ছবি আঁকা হারাম ... ? ? ?

আলাহর কোন'ও বিশেষজ্ঞ বান্দা উত্তর দিতে পারবেন কি ?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৯
১০৩টি মন্তব্য ৭৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×