মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ ফরমান “নিশ্চয়ই (উপযুক্ত অপরাধীর) মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে জীবন নিহিত রয়েছে।” অন্যত্র মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান, “যে স্বেচ্ছায় কোন মুসলমানকে হত্যা করলো তার বদলা হচ্ছে জাহান্নাম।” আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ ফরমান- “কোন মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং হত্যা করা কুফরী।” (বুখারী শরীফ) কুরআন শরীফ-এর উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ পাঠে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, আমাদের দেশে ৩০ লক্ষ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যাকারী, ৫ লক্ষ মা বোনকে পাশবিক নির্যাতনকারী রাজাকার জামাতী অনেক আগেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া উচিত ছিলো এবং এখনও কাল বিলম্ব না করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া অতি আবশ্যক। কারণ মওদুদী জামাতীদের কৃত যুদ্ধাপরাধের চাইতেও অনেক কম প্রমাণ সাপেক্ষে দেশে দেশে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, যাবতজীবন শাস্তি হয়েছে ও নানাভাবে শাস্তির বিচার হয়েছে।
মার্শাল ফিলিপ পিটেইন (১৮৫৬-১৯৫১): তিনি ছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের জাতীয় বীর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রেঞ্চ রাজাকারের ভূমিকা পালন করে গণধিকৃত হওয়ার পূর্বে এই জেনারেল ফিলিপ ফ্রেঞ্চ জনগণের কাছে মার্শাল অফ ফ্রান্স, “চিফ ডে লে’টাট ফ্রান্সিস” অর্থাৎ “চিফ অফ দ্য স্টেট অফ ভিচি ফ্রান্স” নামে সমাদৃত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথমার্ধে ফিলিপ পিটেইন ফ্রান্সের সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীনের পদ অর্জন করে। অতঃপর ফ্রান্সের জনগণকে হতবাক করে দিয়ে সে ফ্রান্সের স্বাধীনতাকে হিটলারের পায়ের নিচে ভূলুন্ঠিত করে, নিজেকে ফ্রান্স-এর মির্জাফররূপে প্রতীয়মান করে। ফলশ্রুতিতে প্রথম বারের ১৯৪০ থেকে ১৯৪৪ পর্যন্ত ফ্রান্স পরাধীনতার শৃঙ্খল পরিধান করে। ১৯৪০ সালের ২২শে জুন সে ফুয়েরার হিটলারের সাথে একটি “আর্মিস্টাইস”-এ চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার ফলশ্রুতিতে তিন পঞ্চমাংশ ফ্রান্স প্রথম দফাতেই হানাদার নাজি জার্মানির করায়ত্ত হয়ে যায়। এবং পরবর্তীকালে ওই ফ্রেঞ্চ রাজাকারেরই প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হিটলার পুরো মেট্রোপলিটন ফ্রান্সকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত শাসন, শোষণ এবং দমন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ই স্বাধীনতা প্রাপ্তির কিছুদিন পরে ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ সালে উক্ত ফিলিপ পিটেইন বিচারের সম্মুখীন হয়। বিচারে স্বজাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, দেশদ্রোহিতার দায়ে লাঞ্ছনার সাথে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষিত হলেও পরবর্তিতে তৎকালীন ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট শার্ল দ্য গলের হস্তক্ষেপে ফিলিপ পিটেইনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
প্রিয় পাঠক! খোদ ফ্রান্সে যদি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের যুদ্ধাপরাধের বিচার হতে পারে তাহলে আমাদের দেশে ’৭১-এ খুন, নারী নির্যাতনের লক্ষ-কোটি প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও রাজাকার নিজামী, রাজাকার মুজাহিদের বিচার হতে পারবে না কেন? হোক না তারা সাবেক মন্ত্রী।