বর্তমানে জামাতে মওদুদীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ওরফে রাজাকার নিজামী একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে অন্যতম ভূমিকা পালনকারী আল-বাদর বাহিনীর প্রধান ছিলো। সে পাকিস্তানি বাহিনীর একজন বিশ্বস্ত সহচর হিসেবেই যে কেবল পরিকল্পনা দিয়ে বা সংগঠিত করে তাদের সহযোগিতা করেছে তা-ই নয়; নিজেও পালন করেছে ঘাতকের ভূমিকা। নিজ হাতে মুক্তিযোদ্ধার গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করেছে আবার হত্যাকাণ্ডের নীলনকশাও তৈরি করেছে।
পাবনা জেলার সাঁথিয়া থানায় এখনো অনেক স্বজনহারা মানুষ নীরবে চোখের পানি ঝরান আর অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করেন- একাত্তরের সেই ঘাতক স্বাধীন দেশে রাজনৈতিক দলের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবির্ভুত হওয়ার ঘটনাপরিক্রমা।
১৯৭১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর যশোরে এক সমাবেশে মতিউর রহমান নিজামী ওরফে রাজাকার নিজামী বলেছিলো, ‘সমপ্রতি যারা পাকিস্তান ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে জড়িত, আল্লাহ তাদের প্রত্যেককে লাঞ্ছিত করেছেন। পাকিস্তানকে যারা আজিমপুর গোরস্তানে পাঠানোর স্লোগান দিয়েছিল তাদের পাকিস্তানের মাটি গ্রহণ করেনি। তাদের জন্য কলকাতা আর আগরতলার মহাশ্মশানই যথেষ্ট।’
একাত্তরের সেই চিহ্নিত শত্রু জামাতে মওদুদী নতুন করে লিপ্ত মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিকৃতির নিকৃষ্ট কর্মে। সশস্ত্র বাঙালির বিজয় অর্জনের দীর্ঘ ৩৯ বছর পর যে শত্রু নতুন করে নিজেদের নিরপরাধ দাবি করছে, দেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই বলে বড় গলা করছে; সেই শত্রুর বর্তমান নেতৃত্বের প্রধান- যাকে পাবনাবাসী আজো একাত্তরের কুখ্যাত ‘মইত্যা রাজাকার’ হিসেবেই চেনে। সেই মতিউর রহমান নিজামী যে এদেশে গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞের জঘন্য ও কুখ্যাততম হোতা ছিলো তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। আজো মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু মানুষ জীবিত রয়েছেন তার কুকর্ম ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের জ্বলন্ত সাক্ষী হয়ে।