জামায়াত-শিবিরের উপর দমন অভিযান শুরুর অজুহাত সৃষ্টির জন্যই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা ছিল সরকারের পূর্ব-পরিকল্পিত : নিজামী
আল ইসলাহ রিপোর্ট :
জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী গতকাল বলেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুঃখজনক ঘটনার পর সরকারের কার্যক্রম থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসলামপন্থীদের ওপর দমন অভিযানের অজুহাত সৃষ্টির জন্যই এটা ছিল এক সুচিন্তিত পরিকল্পনা। তিনি তার অফিসে বার্তাসংস্থা ইউএনবিকে বলেন, ইসলামপন্থীদের ওপর দমন অভিযান শুরুর অজুহাত সৃষ্টির জন্যই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা ছিল সরকারের পূর্ব-পরিকল্পিত উদ্যোগ।
মাওলানা নিজামী পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের মুখে রাজশাহীর ঘটনায় তাঁকে ও অন্যান্য প্রবীণ জামায়াত নেতাদের সংশ্লিষ্ট করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের ব্যাপারে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এটা সংবিধান, আইন ও মানবতার সুস্পষ্ট লংঘন। তার মতে এটা এক ঘৃণ্য কর্মকান্ড এবং সুগভীর ষড়যন্ত্রের পূর্বাভাস। আমীরে জামায়াত বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভুলে যাননি যে, সামরিক বাহিনী সমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার দলের দু'জন নেতা পুলিশ রিমান্ডে তার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে মাওলানা নিজামী বলেন, এটা এমন এক বিষয় শেখ মুজিবুর রহমান যার নিত্তি করে গেছেন। ৩৮ বছর পর এটা পুনরুজ্জীবিত করার অর্থ হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিদ্বনিদ্বদের দমন করার জন্য এটা সরকারের এক ঘৃণ্য পদক্ষেপ। তিনি বলেন, সরকার বর্তমানে যাদেরকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জড়িত করতে চাচ্ছে ১৯৭২-৭৫ সালের আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বিরুদ্ধে একটি জিডিও দায়ের করতে পারেনি।
মাওলানা নিজামী বলেন, ভুয়া তথ্য, কল্পিত অভিযোগ এবং ভুয়া প্রমাণের ভিত্তিতে কোন বিচার করা হলে তা হবে ইতিহাসের জঘন্য মিথ্যাচার। কোন ব্যক্তি যদি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে থাকে তাহলে তদানীন্তন আওয়ামী লীগ সরকারকে এসব ব্যক্তির বিচার করতে কোন আইনে বাধা সৃষ্টি করেছিল?
তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং প্রতিহিংসা প্রতিহিংসার জন্ম দিয়ে থাকে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর জামায়াত-শিবিরকে উৎখাত করার ব্যাপারে ১৪ দলের সমাবেশ থেকে দেয়া হুমকি প্রসঙ্গে মাওলানা নিজামী বলেন, পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আদর্শ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের কোন রাজনীতি নেই। জামায়াত-শিবিরের উৎখাতের অর্থ হল কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক রাজনীতির অবসান।
সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অগ্রসর হলে রাজনীতির অঙ্গনে তিনি কোন প্রতিক্রিয়ার আশংকা করছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নির্দোষ লোকজন মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় হয়রানির শিকার হলে প্রতিক্রিয়া সুস্পষ্টভাবেই হয়ে থাকে। আমরা এ অবস্থায় কোন বিশৃক্মখলা সৃষ্টি করিনি। কোন হরতাল দেইনি, কিন্তু সরকার স্বয়ং অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হলে বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্বের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষতি হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে জামায়াতের আমীর কোন মন্তব্য করতে অসম্মতি জানান। তবে তিনি বলেন, ৩৮ বছর পর মিথ্যা মামলা এবং ভুয়া প্রমাণপত্রের ভিত্তিতে কোন বিচার করা হলে তা শুধু মুসলিম বিশ্বের কাছে নয়, বরং যারা আইনের শাসন ও মানবতায় বিশ্বাসী তাদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে না।
মাওলানা নিজামী '৯০ এর দশকে আওয়ামী লীগের সাথে তার দলের যৌথ আন্দোলন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকালে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার সাথে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অবশ্য আওয়ামী লীগ সে সময় এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করেনি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




