somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোথাও পাই না তারে

০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শরতের আকাশটা কী সুন্দর, সূর্যের চিকচিক আলোর সাথে সারাক্ষণ মেঘের লুকোচুরি। একটু আগে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে, রাস্তার পাশের ছোট ছোট খানাখন্দকে এখনো জমে আছে ছোপ ছোপ জল। সূর্যটা ক্রমাগত পশ্চিম দিকে হেলে যাচ্ছে, একটু পরে হয়তো লাল আভা ছড়িয়ে সাগরের জলে ডুব দেবে। কক্সবাজার সৈকতের বিস্তীর্ণ বেলা ভূমিতে বার বার আছড়ে পড়ছে সাগরের ঢেউ, সূর্যের হলদে আলোয় তন্বীর মতো উচ্ছ্বল প্রাণের আবেগে জেগে উঠেছে ঝাউবনের সারি। সৈকতের বালুকণা, ঝাউবনের সারি, ঢেউয়ের নাচন আর সূর্যের অস্ত যাওয়া পৃথিবীটাকে রোমান্টিক করে তুলে। সৈকতের টেম্পরারি শেডে নির্জনে বসে থাকতে থাকতে ভেবে অবাক হই, আমি এখনো বেঁচে আছি, এই রোমান্টিক পৃথিবীটা এখনো আমার? অথচ আমার এতদিন বেঁচে থাকার কথা ছিল না। আজ থেকে এক যুগ আগেই এই পৃথিবীর সমস্ত মায়া, প্রেম-ভালোবাসা আমাকে ত্যাগ করেছিল, নিয়তির নিষ্ঠুর বাস্তবতার চাবুক বেঁচে থাকার সব আশা-স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করেছিল। সেদিনই আমার চলে যাওয়ার কথা ছিল। মানুষের জীবনের প্রথম প্রেমের অনুভূতিটা এত গভীর, এতই প্রকট যে, চিরজীবন এই স্মৃতি ভোলা যায় না। শিশিরসিক্ত সকাল কিংবা ক্লান্ত বিকেলে একাকী-নির্জন মুহূর্তে প্রথম জীবনের স্মৃতিগুলো ঘিরে ধরে প্রতিদিন। আতমার ভেতরে কী ছিল জানি না, হয়তো নারীর স্বাভাবিক সৌন্দর্য্যও পুরুষকে আকৃষ্ট করে বলেই প্রথম জীবনে তার প্রেমে পড়েছিলাম। আমার সমস্ত অনূভূতি আতমাকে ছুঁয়ে গিয়েছিল, শত-সহস্র জীবনকাব্য রচিত হয়েছে তাকে ঘিরেই। কেবল কবিতা-গল্পের উপাদান নয়, চিরজীবনের সুখ-দুঃখের সারথী হিসেবেই ভেবেছিলাম সেই শৈশবেই। ভালোবেসে ওর নামের শেষের বর্ণদুটিকে যুক্তবর্ণ বানিয়ে আমি তাকে ডাকতাম ‘আত্মা’ বলে। আসলেই সে ছিল আমার আত্মা, দেহের ভেতরের হৃদকম্পন, স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকার অবলম্বন। দুই বছরে আমাদের কত স্মৃতি জমা হয়েছিল, দু’জন এত কাছ থেকে গভীরভাবে দু’জনকে জেনেছি যে আমাদের মাঝে কিছু আর গোপন ছিল না। এক মুহূর্তের বিচ্ছেদ আমার পৃথিবীজুড়ে নেমে আসতো বেদনার আর্তনাদ। তারপর, একদিন সব ভেঙে চুরমার। মুহূর্তেই দূরের মানুষ হয়ে গেল প্রিয়জন। বাস্তবতার কঠিন ঝড় ভর করেছিল আতমার হৃদয়ে। তার জীবনের ‘নির্ভরতার’ নিশ্চয়তা আমাকে ঘিরে দেখতে পায়নি বলেই আমার হেরে যাওয়া। এ ব্যর্থতার সমস্ত দায় আমার। আতমার কোন দোষ ছিল না, আমি তখন তার উপযুক্ত হিসেবে নিজেকে প্রমাণ কিংবা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হই। অবশ্য, ছল-চাতুরির আশ্রয় নিলে সেটা সম্ভব হতো, কিন্তু আমি তাকে কোন কষ্ট দিতে চাইনি। তাই, পরাজয় মেনে নিয়েছি কোন অজুহাত ছাড়াই। তবুও যেহেতু বয়সটা ছিল আবেগের, হেরে যাওয়ার নির্মম ব্যথা-বেদনার ঢেউ তাই জীবনসীমান্ত অতিক্রম করতে চেয়েছিল। সেদিন আমি আত্মহত্যা করতে পারতাম, পৃথিবী থেকে লুকিয়ে যেতে পারতাম নীরবে। কিন্তু আমি তা করিনি। আমি গিয়াস ভাইয়ের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েছিলাম, কিভাবে ‘প্রিয়জন হারানোর বেদনার জ্বালা আর ব্যর্থতা থেকে জেগে উঠতে হয় মানুষকে, কঠোরভাবে বুঝে নিতে হয় জীবনকে।’ গিয়াস ভাইয়ের সাত বছরের প্রেম। বিয়েটা হয়ে যেতে পারত, কিন্তু কিন্তু দুই পরিবারের দরকষাকষি এক পর্যায়ে মনকষাকষিতে রূপ নেয়। বিয়ে নামক চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে ‘ছাড় দেয়া না দেয়া’ নিয়ে প্রেমিকজুটির মান-অভিমান তখন চরম পর্যায়ে ঠেকেছিল। সেই অভিমান থেকে মণি আপার অবচেতন মনের আবেগী একটি শব্দ সুনামির মতো মুহূর্তেই সবকিছু তছনছ করে দিয়েছিল। ‘জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে এ তিন খোদাকে নিয়ে, জোড়াতে লিখা নেই তাই হয়নি’ বলে বাবা-মা নিজেকে সান্ত¡না কিংবা আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেও গিয়াস ভাইয়ের পৃথিবীটা ভেঙে গিয়েছিল সেদিন। মণি আপা, ভালোবাসা কিংবা বাবা-মায়ের ওপর তার অভিমান এতটাই প্রকট রূপ ধারণ করেছিল যে তিনি গৃহত্যাগী হয়েছিলেন। তবে সেই হেরে যাওয়ার বেদনা-ব্যর্থতা থেকেই জেগে উঠেন তিনি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে একটি লাইব্রেরি গড়েন। তারপর চিন্তা-চেতনায় ক্রমাগত দার্শনিক হয়ে ওঠা। এ সময় তার লাইব্রেরিকে ঘিরে ‘চিরকুমার জাতীয়’ দার্শনিকদের সমাগম হতো। গিয়াস ভাইয়ের নানা আলোচনায় জীবনকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার উপাদান খুঁজে পেয়েছিলাম আমি। হেরে যাওয়া মানুষ বলেই তাকে দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, বুকের মাঝে নীরব একটি কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনিও, একটা তুষের আগুন পুড়িয়ে মারছে তাকে, সর্বদা মুখে একটা হাসি ফুটিয়ে তুলে তা লুকানোর চেষ্টা করেন। অথচ সেই হাসির রূপটা কৃত্রিম, মেকি। মানুষের ভেতরে বেদনা থাকলে শত চেষ্টার পরও তা যে ঢেকে রাখা যায় না, তার প্রমাণ মিলত গিয়াস ভাইয়ের ওই হাসির ভঙ্গিতে। আমি ভাবতাম, সাত বছরের সম্পর্ক ভাঙার পরও গিয়াস ভাই যদি সবকিছু ভুলে থাকতে পারেন, আমি দুই বছরের কষ্ট মুছে ফেলতে পারবো না কেন? আমাকে আগে দাঁড়াতে হবে। তারপরও নির্জন সন্ধ্যায় যখন সূর্যটা দিগন্তের পথ ধরতো আকাশের বহুমুখী রূপ দেখে পৃথিবীটাকে বড়ই নিষ্ঠুর মনে হতো। আমার সেই উচ্ছ্বল চঞ্চলতা থমকে গেছে, ক্রমাগত বিষণœতা আমাকে গ্রাস করছে। মানুষের মন খারাপ হলে তার একটা প্রভাব কি চেহারায়ও পড়ে? সম্ভবত পড়ে। বিষয়টি সর্বপ্রথম আঁচ করতে পেরেছিলেন আমার মা। একদিন আমাকে নির্জনে ডেকে নিয়ে জ্যোতিষীর মতো মা জিজ্ঞ্যেস করলেন, ‘কী রে, দিন দিন তোকে এমন অসহায় মনে হচ্ছে কেন, আতমার সাথে যোগাযোগ নেই? ও কি কোথাও গেছে?’ অনেক্ষণ মায়ের প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারলাম না, মাথা নুইয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছি। আতমাকে হারানো বেদনা আমাকে পুরোটাই গ্রাস করে ফেলল, পায়ের তলা থেকে ধীরে ধীরে যেন পৃথিবীটা সরে যাচ্ছে, বুকটা একটানা ধড়ফড় করতে থাকলো, দু’চোখে জলের টলমল ঢেউ। আমার অবস্থা দেখে মা সবকিছু বুঝে নিয়েছেন হয়তো। এটাও বুঝেছেন, এই বয়সটা ইমোশনাল, অতি আবেগতাড়িত হয়ে আমি কোন এক্সিডেন্ট করে বসতে পারি। মা বললেন, ‘এটা একটা বয়সের দোষ, এই বয়সে সবাই প্রেমে পড়ে। তুমি এটা বুঝতে চেষ্টা করো যে তোমার বয়স অনেক কম, কাউকে ভালোবাসলেই জীবনসঙ্গী করে পেতে হবে এমন কোন কথা নেই, এটাই বাস্তবতা এটা মেনে নাও।’ যে বাস্তবতার ঝড়ে আমাকে হেরে যেতে হলো মায়ের মুখেও একই বাস্তবতার পুনরাবৃত্তি দেখে প্রচণ্ড আবেগতাড়িত হয়ে পড়লাম। বললাম, ‘আমার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে মা, আমি ভুলে থাকতে পারছি না, আমি আত্মহত্যা করবো।’ মা আমার মুখ চেপে ধরেন। জড়িয়ে ধরে বলেন, ও কথা মুখেও আনতে নেই, ‘আত্মহত্যা মানে জীবনের কাছে হেরে যাওয়া। ধরো তুমি আত্মহত্যা করলে, পৃথিবী থেকে নিভে গেলে। তুমি যার জন্য আত্মহত্যা করবে, সে কিন্তু অন্য কাউকে বিয়ে করে দিব্যি ঘর-সংসার করবে, তোমার কথা একটিবারের জন্যও ভাববে না, মনেও রাখবে না। তার মানে তুমি হেরে গেলে! এখন তুমিই সিদ্ধান্ত নাও হেরে যাবে না জিতবে?’ মায়ের সেদিনের সেই কথা আর গিয়াস ভাইয়ের জীবনযুদ্ধ আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল, আমি আত্মহত্যা করিনি। তারপর থেকে আমার সংগ্রাম শুরু। ‘অধ্যবসায়’ শব্দটিকে আপন করে নিয়েছিলাম বলেই এর মধ্যেই অনেক অর্জন আমার জীবনে। আমি হেরে যাইনি। মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি, সম্মানজনক পেশার ভালো একটি চাকরিও করছি। জীবন-বাাস্তবতার টানে আমি আজ অনেক দূরে। এর মধ্যে দশটি বছর কেটে গেল। আতমা এখন কোথায় জানি না, হয়তো সুখেই আছে অথবা এখনো সুখের তাড়নায় বিভোর। সুখী হওয়ার ব্যাপারটি আসলে আপেক্ষিক। বিচিত্র এই জগত সংসারে কে কিভাবে কি নিয়ে সুখে থাকে তার কোন সংজ্ঞা নেই। এই যেমন, সংসার জীবনের ব্যস্ত কোলাহলের মাঝেও মণি আপা গিয়াস ভাইকে ভুলে যেতে পারেন নি। কোন জ্যৈষ্ঠের ক্লান্ত গোধূলি লগ্নে মণি আপাকে হয়তো স্মৃতির বাতায়ন পিছু ডেকেছিল নীরবে। নষ্টালজিক সিচুয়েশনটি ওভার কন্ট্রোল হওয়াতেই কি গিয়াস ভাইয়ের ফোনে রিং করেছিলেন? হয়তো তাই। অনেকদিন আগের চিরপরিচিত সুরের ‘কেমন আছেন?’ প্রশ্নে গিয়াস ভাইয়ের পৃথিবীতে এক পশলা বৃষ্টি নেমেছিল সেদিন। তারপর, দু জনের কাছে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলেনি, তবুও দুই নীড়ের দুটি পাখি শুধু কণ্ঠের আবেশে স্বস্তির সুধা খুঁজে পায় প্রতিদিন। মণি আপা এখন গিয়াস ভাইকে নিয়মিত ফোন করেন। গিয়াস ভাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনেকটা প্রেমালাপে মত্ত থাকেন। সেই আগের মতোই তাদের আবেগ, ফোনে বিরামহীন কথা বলা, মান-অভিমান। একদিন কথা বলা না হলে, বেদনায় কেঁপে উঠা-সবকিছুই। আমি গিয়াস ভাইকে বললাম, এটা কি ঠিক হচ্ছে? তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এটা অন্যায়, জেনেশুনে একটা অন্যায় করছি এর মধ্যে কিছু আত্মতৃপ্তি আছে বলেই।’ আমি আত্মতৃপ্তির সংজ্ঞা খুঁজে বেড়াই। ছোট্ট ব্যালকনিটিতে এসে দাঁড়ালে ফুরফুরে একটা শীতল হাওয়ায় প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতির বুকে এত প্রশান্তির পরশ লুকিয়ে আছে তা মাঝে মাঝে এই ব্যালকনিতে না আসলে চিরদিন অজানাই রয়ে যেত। কিন্তু এই শরীর জুড়ানো ঠাণ্ডা হাওয়াটা কেন যে ব্যালকনি পেরিয়ে রুম পর্যন্ত আসে না তা বুঝি না। ব্যালকনিতে এসেই কেন মিলিয়ে যায়, কেন তার পথচলা সেখানেই থেমে যায় তার হিসাব-নিকাশ মেলাতে পারি না। প্রকৃতির সবকিছুই একটা নিয়মের অধীন, একটা সীমাবদ্ধতা আছে সবকিছুতেই। হয়তো শীতল পরশটাও নিয়ম মেনে চলছে বলেই ব্যালকনিতেই থেমে যায়। আমার শরীরের তাপমাত্রাটা প্রায়ই অস্বাভাবিক থাকে, পৌষের শীতের রাতে যখন সবাই ঠাণ্ডায় জবুথবু, তখনও আমার রুমে সিলিং ফ্যানটা একটানা ঘুরে। মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়েও ডাক্তাররা এবনরমাল টেম্পারেচারের কোন সলিউশন দিতে পারেন নি। বলেছেন, এটা হরমোনের সমস্যা, বিয়ে করলে টক্সিক হরমোন ডিমুলিশ হয়ে যাবে, তখন তাপমাত্রা স্বাভাবিক হবে। শীতল পরশ পেতে প্রায়ই ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াই, মাঝে মাঝে গভীর রাতে যখন ঘুম ভেঙে যায় তখনও আসি। নীরব-নিস্তব্ধ রাতে একটা চেয়ার পেতে ঝিম মেরে বসে থাকি। রাতের আকাশটা খুবই সুন্দর, সাদা মেঘের ভেলা চাঁদের আলোর সাথে লুকোচুরি খেলে। ঘুমন্ত কাঁঠাল গাছটি পূণিমার সফেদ আলোয় আধো-ছায়া রহস্যময় রূপ ধারণ করে। প্রকৃতির উপাদানগুলোর মধ্যে অদ্ভূত এক সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই একটির প্রভাবে অন্যটির শোভা বৃদ্ধি পায়। জিওগ্রাফিতে এটাকে বলা হয়, ‘ইকোলজি’। প্রকৃতির এই ইকোলজি তার নিজস্ব স্বকীয়তার জোরে আমার সাইকোলজিকে প্রভাবিত করে প্রতিনিয়ত, আমি প্রকৃতির পূজারী। এই জগৎ সংসারে মানুষের জীবনটাই কি শুধু জটিল? বিচ্ছেদ, বিরহ-বেদনা কি প্রকৃতির এই ইকোলজিতে কোন প্রভাব ফেলে? তাদের মাঝে কি প্রেম-ভালোবাসার অনুভূতি আছে, প্রতারণা-বিচ্ছেদ কিংবা না পাওয়ার দহন আছে? হয়তো এসব তাদের কাছে নেই। নেই বলেই চাঁদ নিজেকে উজাড় করে আলো দেয়, হাস্নাহেনা জেগে উঠে, মৌ মৌ সুবাস ছড়ায়। মানুষের পৃথিবীটা জটিল-কঠিন বাস্তব। তবে প্রকৃতির মতো মানুষের জীবনেও বিপরীত লিঙ্গের প্রভাবে শোভা বৃদ্ধি পায়। প্রকৃতির সম্পর্কের নাম ইকোলজি আর নারী-পুরুষের সম্পর্কের নাম সাইকোলজি। মানুষের সাইকোলজি এত জটিল যে, এটাকে বুঝে ওঠাও কঠিন, নিয়ন্ত্রণে রাখা আরো কঠিন। এ কারণে জগৎ সংসারে ভাঙা-গড়ার খেলা চলতে থাকে। মাঝে মাঝে এ রকম আকাশ পাতাল ভাবি, ভাবনার মাঝে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। এই অনাত্মীয় শহরে জীবনের প্রয়োজনে সারাদিন ব্যস্ত থাকতে হয় আমাকে। তারপর জীবনানন্দ দাশের কবিতার লাইনের মতো, ‘সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন সন্ধ্যা আসে’ যখন, তখন নিজেকে বড়ই একা মনে হয়। মানুষের হৃদয় পাঠ এক রহস্যময় ব্যাপার বটে, সম্পর্কের সূত্রগুলো পীথাগোরাসের উপপাদ্য বুঝে না, কোন ব্যাকরণ মানে না। হয়তো এ কারণেই বিয়ের দশ বছর পরও একজন মহিলা তার পুরনো প্রেমিকের সাথে কথা বলে স্বস্তি খুঁজে পান। শরীরের হাই টেম্পারেচারটা আর সহ্য হচ্ছে না। ডাক্তাররা বলেছেন, বিয়ে না করা পর্যন্ত এটা থেকে মুক্তি নেই। কিন্তু কাকে বিয়ে করবো? যাকে বিয়ে করবো ভেবেছিলাম তার তো বিয়ে হয়ে গেছে। একজন ‘আতমা’ আর কোথায় পাবো আমি? বাড়ি গেলেই মা বিয়ের জন্য চাপাচাপি করেন। পৃথিবীজুড়ে সেই শৈশবের ‘আত্মা’কে খুঁজে বেড়াই, কোথাও পাই না তারে। পৃথিবীর কোন নারীকে আতমার সাথে তুলনা করতে পারি না, এটা এক ধরনের সাইকোলজি, যার ভেতরে বন্দি হয়ে পড়েছি আমি, যেখান থেকে মুক্তির কোন উপায় আমার জানা নেই।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×