somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অর্থমন্ত্রীর আক্ষেপ এবং আমজনতার শংকা

২৪ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অর্থমন্ত্রী আক্ষেপ করেছেন, দেশে প্রাইভেট কারের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে। অর্থমন্ত্রীর আক্ষেপের সুরে অসহায়ত্বের ছাপ, ‘আমরা এতোই বিত্তশালী যে সিএনজির দাম বাড়িয়ে বা অধিক হারে শুল্ক আরোপ করেও প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে কোনো লাভই হচ্ছে না।’ তিনি আক্ষেপের সুরেই এর সমাধানও দিতে চেয়েছেন। বলেছেন, ‘এ জন্য সিএনজির দাম আরো বাড়ানো হবে।’ অর্থমন্ত্রীর আক্ষেপের যৌক্তিক কারণ আছে বটে, কিন্তু তিনি যে পথে সমাধানের কথা বলেছেন তা কি আদৌ সঠিক? অর্থাৎ সিএনজির দাম বাড়ালেই কি প্রাইভেট কারের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে? অর্থনীতির সাধারণ সমীকরণেও এক কথায় বলে দেয়া যায়, জ্বালানির মূল্য বাড়ালেই বিত্তশালীদের বিলাসিতা থমকে যাবে না। যাদের কাছে কাড়ি কাড়ি টাকা আছে, যারা কোটি টাকার বিএমডব্লিউ কিংবা মার্সিডিজ বেঞ্জ ক্রয় করার সামর্থ্য রাখে তাদের জন্য সিএনজির দাম আরো ১০ টাকা বাড়লেও কিছু যায়-আসে না। কিন্তু সিএনজির দাম বাড়ালে এর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর। প্রশ্ন হলো, বিত্তশালীদের বিলাসিতা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর দুর্ভোগের বোঝা আর কত বাড়ানো হবে?

ঘনীভূত প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজি নামক জ্বালানি পদার্থটি আমাদের দেশে গত দশকে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এশ কারণ হলো, অন্যান্য জ্বালানির তুলনায় এটির দাম কম। দেশে সিএনজির প্রচলন হওয়ার সাথে সাথে গাড়িগুলোর ইঞ্জিন সিএনজিতে রূপান্তরের হিড়িক পড়লো সারা দেশে। ইঞ্জিন রূপান্তরের কিছু টাকা খরচ করে গাড়ির মালিকরা জ্বালানি খরচ অর্ধেকের বেশি কমিয়ে ফেলল। প্রাইভেট গাড়ি থেকে শুরু করে গণপরিবহন এর অধিকাংশই এই সুযোগ নিল। গাড়ি মালিকরা তাদের খরচ কমালো বটে কিন্তু পাবলিক পরিবহনগুলোর ভাড়া একটাকাও কমানো হল না। কয়েক বছর পর সরকার যখন সিএনজির দাম বৃদ্ধি করলো, সাথে সাথে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হলো। যারা প্রাইভেট গাড়ি রাখার সামর্থ্য রাখেন তারা সবাই কোটিপতি, সিএনজির দাম বাড়লেও এসব কোটিপতিদের খুব একটা অসুবিধায় পড়তে হয় না। কেননা, বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি এখন পুঁজিবাদী। পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে, ‘টাকায় টাকা আনে।’ পুঁজিপতির পুঁজি বসে থাকলেও বৃদ্ধি পায়। সুতরাং সিএনজির দাম বাড়লেও তাদের বিশেষ কোন ক্ষতি নেই। পক্ষান্তরে সিএনজির দাম বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাবটি পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর। বিশেষ করে, মধ্যবিত্ত শ্রেণী যারা সীমিত আয়ের ওপর নির্ভরশীল বা নির্ধারিত আয়ে যাদের সংসার চলে তাদের ওপরই চাপটি গিয়ে পড়ে। জ্বালানির দাম বাড়লে, গাড়ি ভাড়া বাড়ানো হয়। গাড়ি ভাড়া বাড়লে নির্ধারিত আয়ের মানুষজনের খরচ বেড়ে যায়। যেহেতু তাদের আয় সীমিত বা নির্ধারিত তাই তারা পারিবারিক ব্যয় সংকোচন করে। এ অবস্থায় তাদের জীবনযাত্রার মান আরেক দফা কমে। এটি সাধারণ চোখে অর্থনীতির সাধারণ সূচক। এই হিসাব দেশের অল্পশিক্ষিত মানুষও হুট করেই বুঝে যায় এবং এ জন্যই জ্বালানির দাম বাড়ানোর কথা উঠলেই তারা ভয়ে শিউরে উঠেন। তারা শংকিত হয়ে পড়েন, কিভাবে নির্ধারিত আয়ের টাকায় সংসারের খরচ সামলাবেন তা ভেবে। কিন্তু বুঝলেন না আমাদের অর্থমন্ত্রী এবং সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এরই মধ্যে এ পর্যন্ত তিন দফায় সিএনজির দাম বাড়ানো হলো এবং প্রতিবারই গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিবারই দাম বৃদ্ধির চাপ পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর, তাদেরকে পারিবারিক ব্যয় সংকোচন করতে হয়েছে এবং দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।

যাহোক, গতবার দাম বৃদ্ধি করার সময় অজুহাত ছিল, ‘জ্বালানি খাতে সরকারকে প্রচুর ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, এই খাতে এত পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দেয়া সম্ভব নয়, তাই সরকার বাধ্য হয়েই সিএনজির দাম বাড়াচ্ছে।’ কিন্তু এবারের অজুহাত ভিন্ন, এবার ভর্তুকির প্রসঙ্গ আসেনি। এবারের কারণ, ঢাকা শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণ তথা বিত্তবানদের বিলাসিতা দমন! রাজধানীতে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে সিএনজির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন ‘যানজট অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তবে এসব ব্যাপারে উদ্যেগ নিলেও বিত্তশালীদের ঠেকানো যাচ্ছে না। এ কারণে সিএনজির দাম আবারো বাড়ানো হবে। আর গাড়ির ওপর শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এর আগে গত মার্চে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘শিগগিরই রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসছে।’ এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন অর্থমন্ত্রী। আর তার জন্য সিএনজির দাম বাড়ানো হবে এ সিদ্ধান্ত তিনি দিয়েই দিলেন কিন্তু শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে তিনি আলোচনার কথা বললেন। এর অর্থ কি? সিএনজির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত তিনি দিতে পারলেন কিন্তু শুল্ক বাড়ানোর জন্য আলোচনা করতে হবে কেন? কাদের সাথে আলোচনা করবেন অর্থমন্ত্রী? প্রশ্ন হচ্ছে, বিত্তবানদের বিলাসিতা ঠেকাতে বা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কোনটি বেশি কার্যকর, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা নাকি শুল্ক বাড়ানো? কোনটি সরাসরি প্রভাব ফেলবে প্রাইভেট গাড়ির ওপর? অথবা কোনটির মাধ্যমে সরকার বেশি লাভবান হতে পারে? এই প্রশ্নগুলো নিশ্চয় অর্থমন্ত্রী ভেবে দেখেননি। অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন ‘সিএনজির দাম বাড়িয়েও প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কোন লাভই হয়নি’। প্রশ্ন হলো, সিএনজির দাম কয়েক দফা বাড়ানোর পরও কি প্রাইভেট গাড়ি আমদানি কমেছে? নিশ্চয় কমেনি। তাহলে যে পথে কয়েকবার গিয়েও সমাধান আসেনি, সেই পথেই আবার যাওয়া কেন? অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী কিভাবে ভাবলেন যে সিএনজির দাম বাড়ালেই বিত্তশালীদের বিলাসিতা নিয়ন্ত্রণে আসবে? প্রাইভেট গাড়ি কমবে? কয়েক দফা সিএনজির দাম বাড়ানোর পর যে সাধারণ মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা নিঃসন্দেহে সত্য। প্রাইভেট গাড়ি কারা ব্যবহার করে? কোটি টাকার মার্সিডিজ বেঞ্জ কারা কেনে? যারা বিভিন্ন উৎস থেকে প্রতিমাসে কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করে, যাদের অঢেল সম্পদ রয়েছে কিংবা যাদের টাকার কোন অভাব নেই-তারাই তো প্রাইভেট গাড়ি কেনে। যারা কোটি টাকার গাড়ি কেনার সামর্থ্য রাখে তাদের কাছে সেই গাড়ির জন্য মাসে দশ হাজার টাকার জ্বালানি খরচ করা কোন ব্যাপারই নয়। তার ওপর জ্বালানির দাম বেড়ে মাসে পনের হাজার টাকা খরচ করতে হলেও তাদের কিছু যায় আসে না! কিন্তু এর কারণে গাড়ির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে তা ভাবাটা বোকামি। সুতরাং প্রাইভেট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সিএনজির দাম বাড়ানোর উদ্যেগ অযৌক্তিক। বরং বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে শুল্ক বাড়ানো কিংবা শর্তারোপ করা যেতে পারে যে, গাড়ির কেনার জন্য যে টাকার প্রয়োজন তার উৎস কি? সরকারের এই জবাবদিহিতা কঠোরভাবে নিশ্চিত করা দরকার যে, কোন আয় থেকে কারা প্রাইভেট গাড়ি কিনছে? কাদের গাড়ির প্রয়োজন আছে? এ প্রসঙ্গে আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করা দরকার যে, অর্থমন্ত্রী শুধু ঢাকার যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্যই সিএনজির দাম বাড়ানোর কথা বলেছেন। দেশের রাজধানী হিসেবে ঢাকায় বিত্তশালীদের সংখ্যা যেমন বেশি, প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যাও বেশি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু শুধু ঢাকার হিসাব করে সারা দেশের সাধারণ মানুষের ওপর চাপ পড়বে এমন কোন সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক সরকারের নীতিনির্ধারকদের নেয়া উচিত হবে না। তাই সিএনজির দাম বাড়ানোর আগে অর্থমন্ত্রীকে দেশের সাধারণ মানুষের কথা আরো একবার ভেবে দেখতে বলব। দেশে এমনিতেই

মুদ্রাস্ফীতির চাপ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ এখন দিশেহারা। দেশের অর্থনীতির ‘পুঁজিবাদী প্রবণতা’র চাপে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য প্রকট। পুঁজির যোগান ও সংকট দেশের মানুষকে স্পষ্ট দুটি ভাগে বিভক্ত করছে। কিছু মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে ক্রমাগত, কিছু মানুষের জীবনযাত্রার মান কমছে দ্রুত। শেষোক্ত মানুষের সংখ্যা-ই বেশি, যারা আমজনতা হিসেবে পরিচিত। নতুন করে সিএনজির দাম বাড়ানো হলে এর চাপ সাধারণ মানুষের ওপরই পড়বে, তাদের জীবনযাত্রার মান আরো কমবে এটা নিঃসন্দেহে সত্য। সিএনজির দাম বৃদ্ধি বিত্তশালীদের বিলাসিতার মূলে কখনোই কুটারাঘাত হানতে সক্ষম নয়, কেবল দুর্ভোগ বাড়াবে সাধারণ মানুষের।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×