somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিচ্ছিন্ন শব্দের কথামালা অথবা নির্ভেধের জন্য ভালবাসার অর্ঘ্য

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই তোমাকে খুঁজেছি আমি
এত কাল ধরে, এত মানুষের ভীড়ে,
এই তোমার ভালোবাসা পেয়েছি আমি
শত পথে শত ভালোলাগা বিসর্জন দিয়ে,
এই তোমাকে বেঁধেছি আমি
কত প্রার্থনা করে, সময়ের অজেয় স্রোতে।

তুমি আসবে বলে সব ভূলে জাগ্রত আমি পুনর্বার
তোমাকে বলবো বলে লিখেছি কত কবিতা, কত গান,
তোমাকে দেওয়ার মতো কোন অর্ঘ সাজাতে পারিনি
তোমার মুগ্ধতায়, তোমার পূর্নতায়, তোমাতে বিলিন আমি।

“তোমাকে দেওয়ার মতো কোন অর্ঘ্য সাজাতে পারিনি” – তোমার জন্য এই মুহুর্তের সবচেয়ে বড় বাস্তবতা। বিচ্ছিন্ন শব্দের কথামালায় অসহায় আত্মসমর্পণের শাব্দিক প্রয়াস আমার এই লেখা।

তোমার দুই বছরে পদার্পন বাবা হিসেবে আমার কাছে গত বছরের চেয়ে একটু অন্যরকম। কেন? কারন এই অতীত বছরটিতে সম্ভবত তুমি একজন ব্যক্তি হিসাবে কী হতে যাচ্ছ সে সম্পর্কে একটি ধারণা পেতে শুরু করেছি। আর হয়তো এই কারনেই তোমাকে বড় হতে দেখাটা শুধু দেখার চেয়ে বেশী কিছু।

তুমি এখন অনেক বেশি স্বাধীন হয়ে উঠছ আর তাই তোমাকে নিয়ে আমার গর্বিত হওয়ার সময় এখন থেকে শুরু হচ্ছে। তোমার অনুভূতি আর অভিব্যক্তি প্রকাশের ক্ষমতা দিন দিন স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে। তোমার মধ্যে অভিমান প্রকাশের আশ্চর্য মনোভাব মাঝে মাঝে আমাকে বিচলিত করে। তবে গত দুই বছরে একটি জিনিস আমার কাছে একই থেকে গেছে… তা হলো তোমার স্পর্ষে মুগ্ধতা। এই বছরে এর সাথে যুক্ত হয়েছে তোমার কথা বলার ক্ষমতা, যা আমার আরো একটি ইন্দ্রিয়ের সার্থকতার স্বাক্ষর!

গত দু’বছর ধরে, আমি দেখেছি যে তুমি একটি মিষ্টি নবজাতক থেকে একটি সুন্দর বাচ্চা হয়ে উঠছো। আমি জানি তুমি বড় হচ্ছো… এই বড় হওয়ার যাত্রায় প্রতিদিন তুমি যে নতুন শব্দগুলি বাছাই কর সেগুলি এক একটি স্মরণীয় বিস্ময়। তোমার বাবা বলে চিৎকার করা, আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, খেলার ছলে ১ থেকে ১০ গণনা করে নিজের পূর্নতা প্রকাশে হাততালি ইত্যাদি।

অন্যান্য অনুভূতির পাশাপাশি তোমার খেলার প্রতি একাগ্রতা পূর্নতার নতুন মাত্রা হিসেবে যোগ হচ্ছে। তোমার প্রিয় খেলনাগুলোর মধ্যে আছে গাড়ি আর বল। তোমার মায়ের অনুকরণে গাড়ি আর বলের সাথে তোমার সম্পর্কের সেতু এক অনন্য জীবনীশক্তির উৎস। আর গত কিছুদিন ধরে তোমার জানার আকাঙ্ক্ষা আমাদের সময়কে আরো রঙ্গিন করে তুলছে। “এটা কি?” এবং “কি হয়েছে?” – এই দুটি প্রশ্ন তোমার পাশাপাশি আমাদেরও ব্যস্ত করে তোলে। তুমি শুধু খেলতে ভালবাসো তা না… জিনিসগুলি কীভাবে কাজ করে তা তুমি বুঝতে শিখছো। তোমার এই অভিযাত্রায় প্রতিবার তুমি যখন কোনও কিছু বের কর তা এক একটি চমক হয় যার বহিঃপ্রকাশে ভাষার সংকীর্ণতা সীমাহীন।

এখানে এসে অযথা কোন স্বজন খুজোনা
…. স্বজন বিতারিত রাজ্যর শূন্যতায় কবিদের বসবাস
দৃষ্টি নন্দণ ভূলে কবিরা নাকি বড়ো অসামাজিক
হতে পারে, কবিরাতো শব্দের বুনোটে সেই নিমগ্ন গুনিজন
বদ্ধ কুটিরে যারা গড়ে তোলেন ধ্রপদী সৃষ্টির কোলাহল।
(কবির কোন স্বজন থাকেনা, হোসেন মৌলুদ তেজো)

আমি কবি না, আর যখন তোমাকে নিয়ে লিখতে চাই তখনতো আরো না! এখন লিখাটা অনেকটা অভিলাষ আমার কাছে, এখন লিখাটা একটা আয়োজন – তবুও আফসোস হয়না। কারন, মাঝে মাঝে মনে হয় তুমিই আমার সেই হারিয়ে যাওয়া “ধ্রপদী সৃষ্টির কোলাহল”!

তোমার জীবনের দুই বছর পূর্তিতে এই লেখা শুরু করেছিলাম তোমার অনুভূতি আর আনুভবের কথা দিয়ে। গত এক বছরে তোমার পূর্নতার বিচ্ছিন্ন ছবিগুলো মনের ক্যানভাসে সাজানো স্বপ্নের ফ্রেমে। তুমি বেড়ে উঠছো, ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছো সেই কাংখিত পূর্নতার পথে। তোমার দ্বিতীয় জন্ম বার্ষিকীতে তোমার জন্য আমার বার্তা খুব সরল – পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর ভালোবাসা ছাড়া বেড়ে উঠা পৃথিবীর জাগতিক অপূর্নতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। তাই তুমি বেড়ে উঠো নিরবিচ্ছিন্ন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বলয়ে – এই প্রার্থনায়।

এ কোন কল্পনা কাব্য নয়, এ আমার অনুভব
তোমার ভালবাসার অর্ঘ্য ভেবে গ্রহণ কর- হে প্রিয়,
সজ্ঞানে, প্রকাশ্যে, এ কবিতাকে সাক্ষী রেখে
তোমার চরনে করলাম সমর্পন- আমার পুনর্জাগরন।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×