somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শরৎ মেয়ে

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাত সকালে ঘুম ভাঙতে না ভাঙতে পাজি মেয়েটার শ্বাসরুদ্ধকর লং ড্রাইভের লোভে উঠে যেতে হল।যে সে ড্রেস এ বের হওয়া যাবে না আবার।নীল শাড়ী , নীল চুড়ি পরতে হবে তার সাথে যাতে হলে।কি আর করা?মজা হয়েছে বললে ভুল হবে,জীবনের সব চেয়ে বেশি সুখ পেয়েছি।মেয়েটা সত্যি যানে সুখ কাকে বলে।



শুরু থেকেই বলি।মেয়েটা ড্রাইভ করছিল সকালের মিষ্টি রোদে।আর আমি ছিলাম তার পাশে।রবি ঠাকুরের গান একটার পর একটা বেজে যাচ্ছিল।আর স্নিগ্ধ নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ঐ তুষার শুভ্র মেঘেদের সাথে লুটুপুটি খাচ্ছিলাম।ঘড়ির কাটা ঘুরে যখন রোদেলা দুপুরে পৌছলাম তখনও শুভ্র তুলোর মতো মেঘেরা ঐ গহীন নীল আকাশটার স্নিগ্ধতা এতটুকু কমতে দেয়নি।অতন্দ্র প্রহরী যেন দিবালোকে।

হাইওয়ের পাশের এক স্বপ্নলোকে নিয়ে গেল পাজি মেয়েটা আমায়।সব লোভনীয় খাবার সেখানে।নাহ।মেয়েটা আমার ফিগারের বারটা বাজাবে।খাওয়ার পর স্বপ্নালোকের বেলকনিতে গিয়ে একটা ধাক্কা খেলাম।সচ্ছ টলটলে জলে ভরা বিশাল পুকুরে হাসের দল সাতার কেটে বেড়াচ্ছে।পাশে যেন আগুন ধরে গেছে।গোলাপ আর গোলাপ।টকটকে লাল গোলাপে ভরা বিশাল বাগান।এক সাথে এত্ত গোলাপ আমি জীবনেও দেখিনি।এও গোলাপ।পাজি মেয়েটার ডাকে যেন ধ্যন ভেঙ্গে গেল।যেতে হবে বলল।

চলতে চলতে ঘুমিয়ে পরলাম নাকি?বোধহয়।তা না হলে মেঘের মাঝে চলছি যে?শুভ্র মেঘের মাঝে লুটুপুটি।আর উপরে ঘন...............হুমম,খুব ঘন নীল আকাশ।অনেক নীচে আরও খুব নীল দেখতে পাচ্ছি।গহীন কাল সাগর।খুব ভালোবাসার সাগর।ওমা!ফড়িং এল কোথাথেকে?


সাদা......গোলাপী......লাল......বেগুনী......নীল......গাঢ় সবুজ...............।উফফ...কি কুচকুচে কাল।এমা......!এরা দেখি সব পরীর দল!ছোট্ট ছোট্ট মিষ্টি পরী।রুপকথার রাজ্যে এলাম নাকিরে বাবা?

ঘন কালো এক জোড়া চোখ।আয়নাতে চোখে চোখ রেখে কাজল দিতে গেলে যেমন করে ভেতরটা,ঠিক তেমন।চোখ বন্ধ করলাম।এরপর সাহস করে তাকালাম।চারপাশে যেন হাজার তারা ঝিকমিক করে মিলিয়ে গেল।হায় আল্লাহ...!!!একি দেখছি?আমরা সোজা সমুদ্রের দিকে যাচ্ছি!পাগল নাকি মেয়েটা?একি করছিস......গাড়ী থামা পাগল?!একটা স্রোতের ওপর দিয়ে গেলাম মনে হয়।সমস্ত গাড়ীটা কেপে উঠেছে।আরেকটা স্রোত আসছে।ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।দুকান শক্ত করে চেপে বসে আছি।এই উথাল পাথাল সমুদ্রের চিতকার আমি আর এক মূহুর্তের জন্যও সহ্য করতে পারছি না।কেন স্তব্দ হচ্ছে না সারা বিশ্ব?কেন প্রতিটি স্পন্দন থেমে যাচ্ছে না?সব কিছু থেমে যাক।মনে প্রানে চাচ্ছি।প্রচন্ড ভয় লাগছে।প্রচন্ড ভয়।খুব বেশি ভয়।মৃত্যুর ভয়।আচ্ছা?মৃত্যুত একদিন আসতোই।তাহলে আমার পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষের পাশে থেকে এও ভয় কেন লাগছে?খুব ভয়।নিশ্বাঃসের প্রচন্ড কাপন আর হৃদপিন্ডের দামামা মিলে মিশে এক হয়ে গেছে।আর কিছু শুনতে পাচ্ছি না।হঠাত খুব জোরে ঝাকুনি,খুব জোরে।উফফফ...খুলবনা চোখ আমি।খুলবই না।খুব পরিচিত একটা গান শুনতে পাচ্ছি যেন,খুব পরিচিত।

তাকালাম!!!

পাগলের মত হাসছে মেয়েটা,পাগল যেন একটা।ভাবতে অবাক লাগছে।আমার এই ছোট্ট পরীটা দিনে দিনে কত বদলে যাচ্ছে।এইত গত বছর চুলগুলো কেটে কি করলইনা,এখনত চুলগুলো খুব বড় হয়েছে,কি সুন্দর লাগছে দেখতে।কি মায়াবী চোখ।উফ এও হাসতে পারে মেয়েটা!?এইত সেদিন আকাবাকা কিছু দাত নিয়ে আর কিছু দাত হারিয়ে হাসছিল।তার আগে নুতন নুতন দাত নিয়ে।তারও আগে একদম দাত ছাড়া।তারও কিছু আগে খুব হাসত।আমি দেখতে পেতাম না,শুনতেও পেতাম না।কিন্তু বেশ অনুভব করতে পারতাম।আমার ভেতরের আরেক আমিকে যখন খুব করে অনুভব করতাম তখন মাঝে মাঝে এমন করে হাসত যে সে।খুব ভালবাসি।খুব বেশিই।ঠিক প্রথম যেদিন ওর অস্তিত্ব অনুভব করেছিলাম সেদিনকার মত।না।আজ যেন আরও বেশি।সব করতে পারি,সব।শুধুই ওর জন্য।জীবনকে দূরে ঠেলে মৃত্যুকে কাছে টেনেছি কত্ত বার।ভয় পাইনি তা বলব না,কিন্তু এসব কিছুই করেছি শুধুই ওকে ভালোবাসি বলে।আমার চেয়ে বেশি ভাল ওকে আর কেউ কোন দিন বাসতে পারবে না।কেউ না।


সূর্যটা প্রায় ডুববে ডুববে করছে।মেয়েটা বালুতে বসে আছে।একটু দুরে।খুব ঘুম পাচ্ছে।ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসার ঠিক আগ পর্যন্ত মেয়েটার উরন্ত এলোমেলো চুল দেখলাম...........



সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×