"নাই কাজ তো খই ভাজ" বাংলায় অতি প্রচলিত একটি প্রবাদ বাক্য। বর্তমান সময়ে অনেক মানুষ কাজহীন অফুরন্ত অবসর উপভোগ করছেন। সংকট ময় এই পরিস্থিতিতে প্রায় সকলই যেন খই ভাজার কাজটি সম্পাদন করছেন। খই ভাজা খারাপ কিছু নয়। গরুর দুধের সাথে খই খেতে বেশ সুস্বাদু।
তবে সকলেই যে উপাদেয় খাবার সরবরাহ করছেন না সেটা বদনবুক ভ্রমণ করলেই বুঝতে পারা যাচ্ছে। নানামুখী আলোচনা ও সমালোচনা কান পাতলেই শুনতে পারা যায়। তবে এসব আলোচনা সমালোচনায় ইতিবাচক দিকের চেয়ে নেতিবাচক মনোভাবই বেশি ফুটে উঠছে।
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট মোকাবেলা করছে গোটা বিশ্ব। করোনা মহামারী চীন, ইউরোপ, আমেরিকা প্রায় সকল মহাদেশই বিস্তার লাভ করেছে। সব দেশের সরকারই এই মহামারী ঠেকাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করাটাই কি অধিক যুক্তিযুক্ত নয়?
করোনা প্রমাণ করেছে কোন দেশই সীমাবদ্ধতার বাইরে নয়। উন্নত দেশগুলোর অধিক মৃত্যুহার এরই সংকেত প্রদান করছে। আমরা সবাই জানি বাংলাদেশ নানা সমস্যায় জর্জরিত একটি দেশ। এখানে প্রতিটি সেক্টরে রয়েছে মাত্রাহীন সীমাবদ্ধতা। এই সীমাবদ্ধতা আমার আপনার কথার ফুলঝুরিতে রাতারাতি সংশোধন হয়ে যাবে না। তাই এ নিয়ে এখন বাদানুবাদে লিপ্ত হওয়া উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মতই ভিত্তিহীন।
এই সীমাবদ্ধতা নিয়েই আসন্ন করোনা যুদ্ধে আমাদের রুখে দাড়াতে হবে। এই মুহুর্তে প্রতিটি জনগণকেই হতে হবে একজন সৈনিক। নিজে নিরাপদ থাকার পাশাপাশি অন্যকেও নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। নিজে সচেতন থেকে অন্যকেও সচেতন থাকার পরামর্শ দিতে হবে। কেননা এটা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে সচেতনতাই এই রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহায্য করছে।
ভীতি ছড়িয়ে নয়, কাউকে দোষারোপ করে নয়, সকলে মিলে ঐক্যের ডাক দিতে হবে। কেন এই রোগ ছড়িয়ে পড়ল, কেন সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করল না, এসব প্রশ্ন উত্থাপনের সময় এখন নেই। কারন, এসবের প্রশ্নের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এই বিপদ মোকাবেলার কোন সমাধান দিবে না। উপরন্তু এই কালক্ষেপণ সংকট আরো বাড়িয়ে দিবে। সব ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের পাশে দাড়নোর এখনই উপযুক্ত সময়। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না কামিনী রায়ের সেই আহবান -
"সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে "
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩০