somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাহে রমজানঃ কিছু স্মৃতি কিছু উপলব্ধি

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিশ্বাসী মানুষের জন্য রমজান হল আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশাল নেয়ামত। কৃত কর্মের সংশোধন ও নিজেকে পরিশুদ্ধ করার ক্ষেত্রে রমজানই হল শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। ছোটবেলায় রমজানের চাঁদ দেখার পর থেকেই দিন গণনা শুরু করতাম ঈদের দিনের জন্য। নতুন কাপড় পরিধান করে দিনভর ঘোরাঘুরির জন্য মনটা সারাক্ষণ আকুপাকু করত। মনে হত রোযার দিনগুলো যেন চোখের পলকেই শেষ হয়ে যায়।

সময়ের পরিক্রমায় চিন্তার নিজের বাচ্চামি চিন্তা পরিপক্কতা পেয়েছে। এখন মনে হয় রমজানের দিনগুলো দীর্ঘায়িত হলেই ভাল হত। পরকালীন মুক্তির জন্য অনেক বেশি কিছু সঞ্চয় করতে পারতাম। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অসীম করুণা তিনি তাঁর বান্দার জন্য প্রতি বছরে একটা সুযোগ করে দিয়েছেন জীবন চলার পথের ভুলগুলো শুধরিয়ে নেয়ার জন্য। এটা যে কত বড় নেয়ামত ভাবলেই মস্তক অবনত হয়ে পড়ে শুকরিয়া আদায়ের জন্য।

আমরা মানব জাতি এতটাই অকৃতজ্ঞ যে, যাপিত জীবনের নিত্য কর্মকাণ্ডের মাঝে নিজের স্রষ্টাকেই ভুলে যাই। কাজের পরিধি , ব্যস্ততার তীব্রতা সময়ের সাথে সাথে এতই বেড়ে যায় যে আল্লাহর স্মরণে আমাদের হৃদয় ব্যাকুল হতেই ভুলে যায়। ব্যাকুল হিয়ার আকুল আর্তি শুধু দুনিয়াবী সফলতাকেই রোজ নিমন্ত্রণ পত্র পাঠায়। ভুলো মনের এই মানব জাতিকে স্রষ্টার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে রমজান মাস অনুপম আর্শীবাদ রূপে প্রতিবছর হাজির হয়।

পুরো বছর স্রষ্টাকে ভুলে থাকলেও রমজান মাস যেন মানব জাতির ঘুমন্ত হৃদয়কে একটা জোরেশোরে ঝাঁকুনি দেয়। কেননা রমজানের আবির্ভাবে চারিদিকে একটা আমেজের বন্যা বয়ে যায়। সাহেরী, ইফতারি, তারাবীর রমরমা আয়োজন কিছুটা হলেও মানব জাতিকে স্রষ্টার সান্নিধ্যে নিয়ে আসে। নিজের কৃত কর্মের ভুল স্বীকার করে আল্লাহর দরবারে তওবা করার একটা মোক্ষম সুযোগ দরজার দোরগড়ায় সর্বদা উপস্থিত থাকে। এর পরেও যারা নিজেকে স্রষ্টার সমীপে সঁপে না দেয় তার মত হতভাগা আর কেউ নেই? আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমজান পেল। কিন্তু রমজান বিদায় হয়ে গেল এই অবস্থায় যে, সে ক্ষমা লাভ করতে পারল না, তার প্রতিও আল্লাহর অভিশাপ”।

পরম করুণাময় আল্লাহ তাঁর কোন বান্দার প্রতি অভিশাপ দিতে চানা না বলেই মানব জাতিকে বারবার সুযোগ প্রদান করেন। এই সুযোগকে কাজে লাগানোর মধ্যেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে। পরকালের কঠিন আযাব থেকে মুক্তি পেতে রোযা ঢাল স্বরূপ কাজ করবে ও এই একটি মাত্র আমল যার পুরষ্কার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজ হাতেই দিবেন১। একজন মানুষের জন্য এর চেয়ে বড় পুরষ্কার আর কিছু হতে পারে না।

রমজান মাসে রোযা নিয়ে আলোচনা হলেই একটি কথা বেশ শোনা যায় তা হল রোযার মূল উদ্দেশ্য হল তাকওয়া অর্জন করা। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বয়ান শুনলেও হৃদয়ে ধারণ করতে পারার মত মানুষ নিতান্তই অল্প। অল্প বলেই হয়ত আমাদের সমাজে অসৎ মানুষের আধিক্যই বেশি। ইসলামী নৈতিকতার তৃতীয় স্তর হচ্ছে তাকওয়া। সাধারণ অর্থে তাকওয়া হল আল্লাহভীতি। তবে তাকওয়া অর্থ শুধু ভয়ভীতি নয়। ভয়ভীতির আরবি প্রতিশব্দ হল খাওফুন ও খাশিয়াতুন। তাকওয়া শব্দের উৎপত্তি হল ওয়াকিইয়া ও ইয়েকেয়ী থেকে । এর অর্থ হল বাঁচা, আত্নরক্ষা বা নিষ্কৃতি ইত্যাদি হয়ে থাকে ( তথ্যসূত্রঃ মাহে রমজানঃ তাকওয়ার পিরামিড)

সামগ্রিক অর্থে- আল্লাহর ভয় ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যাবতীয় অন্যায় অপরাধ ও অপছন্দনীয় চিন্তা, কথা ও কাজ থেকে আত্নরক্ষার মনোভাবকে তাকওয়া বলা হয়। তাকওয়া একটি মাত্র শব্দ কিন্তু এর আহবান কত বিশাল চিন্তা করলেই হৃদয়ের কু-প্রবৃত্তি মাথা চাড়া দেয়ার সুযোগই পাবে না। স্বপ্ন দেখি আশায় কালাতিপাত করি একদিন হয়ত আমরা সবাই উপলব্ধি করতে পারব। পবিত্রতম অনুভূতির শুদ্ধতম কর্মে নিজেকে আলোকিত করব।

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:০০
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×