somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউনির্ফম, ইসলাম ও ৭১ এর পাকিস্তানি যোদ্ধা।

২৭ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাকিস্তানিরা যোদ্ধারা কি সাচ্চা মুসলমানই না ছিল? উর্দী পড়া দাড়ি গোঁফওয়ালা পরিপাটি সুসজ্জিত সাচ্চা মুসলমান, যুগপৎ (ভারতীয় যোদ্ধা অপেক্ষা) শ্রেষ্ঠ যোদ্ধার দাবিদারও বটে। বাংলাদেশের নিরস্ত্র রমণীদের উপর পাকিস্তানি যোদ্ধারা বীরত্ব দেখিয়ে বীরত্বের অনন্য সাধারণ মানদণ্ডের নজির তৈরি করলেন। ‌ঐ বীরত্বের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দেয়া আর তা হজম করতে গেলে আমাদের সবাইকে অবশ্যম্ভীভাবেই শতভাগ প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে হবে। আবারো বলছি পাকিস্তানি যোদ্ধার ঐ বীরত্ব গাঁথা সবার জন্য নয়। পাকিস্তানিরা যে পর্যায়ের/অবস্থানের যোদ্ধা কিংবা তথাকথিত সাচ্চা মুসলমান সেই পর্যায়/অবস্থানে নিজেকে নামিয়ে আনতে না পারলে তা হজম করা যাবে না কস্মিনকালেও।

অতীত ইতিহাসের পাতা ঘেটে কতই না মুসলমান বীর যোদ্ধা/সেনাপতিদের গল্প পড়েছি। তারা শত্রু পক্ষের সেনাদের জন্য ছিলেন রীতিমতো ত্রাস, সাক্ষাৎ যমদূত। অথচ শত্রু শিবিরের নারী, বয়ঃবৃদ্ধ, শিশুদের কাছে ছিলেন মানবিকতা শব্দটির মুর্ত প্রতিক, আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে বলতে হয় মানবিকতা শব্দটির শতভাগ সমার্থক। দূরবর্তী অতীত ইতিহাস পার হয়ে যদি নিকট অতীতে এসেও থামি তাহলেও আমরা পাই জেনেভা কনভেনশন। অবশ্যই পাকিস্তান জেনেভা কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী একটি দেশ ছিল। ‌


একজন যোদ্ধার পোশাক বা উর্দী বা ইউনিফর্ম যাই বলি না কেন অত্যন্ত পবিত্র। যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করলে শহীদের কোন গোসল হয় না। তার পোশাকই হয়ে যায় তার কাফনের কাপড়। ‌ কিন্তু এই সামরিক কাপড় গায়ে সাটিয়েই পাকিস্তানি ফৌজিরা কি অবলীলায় নির্বিচারে বাংলাদেশের নারীর উপরে পুরুষত্ব (?) দেখিয়েছে। উর্দু না হিন্দিতে একে খুব সম্ভব "মার্দানি" বলা হয়। তো কি অবশিষ্ট রইল? না সামরিক পোশাকের মর্যাদা রইল, না ইসলাম ধর্মের মূল্যবোধ। আর জেনেভা কনভেনশন? আসলে মানব রুপী পাকিস্তানি দানবের কাছে এইসব সভ্য মানবীয় বৈশিষ্ট্য সমূহ আশা করা আর চূড়ান্ত নৈরাশ্যময়তার অন্ধকার খাদে নিজেরই আপাদমস্তক হারিয়ে যাওয়া একই কথা।

দানব তো একদিন বা এক রাতের মধ্যে তৈরি হয় না। খুব সচেতনতার সাথে সময় নিয়ে তাকে এমনভাবে প্রশিক্ষিত করা হয় কিংবা তার মস্তিষ্ক ধোলাই করে দেয়া হয় যেন কোন প্রকার ব্যর্থতা ব্যতিরেকেই দানবে রূপান্তরিত হতে পারে। একটা দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ববঙ্গের জনগোষ্ঠী সম্বন্ধে তাদের এমন ধারণা দেয়া হয়েছে যে আমরা দুপেয়ে মানুষরা যেন বিশেষ একপ্রকার মানুষ রুপী জীব (subhuman) যাদের সাথে যা খুশি তাই করা যায়। "বেহেস্তের হুরপরীর জন্য খামোখা অপেক্ষা না করে চঞ্চু ডুবিয়ে, উদোর পূর্তি করে এ বেলা নগদে কচি নারী মাংস ভক্ষণ করে নাও"। এই পুরো প্রজেক্টের (মানবকে দানবে রূপান্তর থেকে শুরু করে তাকে দিয়ে সাফল্যের সাথে গণহত্যা চালানো) মাস্টারমাইন্ড কারা? এই পুরো প্রজেক্টের সুবিধাভোগকারী কারা?

পাপ করে মানুষ তওবা করে এই নিয়তে যাতে সে তার সৃষ্টিকর্তার ক্ষমা লাভ করতে পারে। পাকিস্তানিরা কি ১৯৭১ এ তাদের কৃত গণহত্যা ও অসংখ্য যুদ্ধ অপরাধের জন্য অনুতপ্ত? নাকি এখন অবধি ন্যূনতম পাপ বোধই তাদের মাঝে জাগ্রত হয়নি? কবেই বা তারা সভ্য হবে আর কবেই বা তারা ক্ষমা চাইবে?

নারীর প্রতি সহিংসতার যে বর্ণনা গেরিলা ৭১ গ্রুপে দেয়া হয়েছে তার খুবই সামান্য নমুনা পেলাম "লাল মোরগের ঝুঁটি" সিনেমায়। কিন্তু তাতেই বুক ভেসে গেছে চোখের নোনা জলে। যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার করতে না পারার ব্যর্থতার দায়ভার আমাদের যুদ্ধ পরবর্তী প্রতিটা প্রজন্মের। জানিনা এই দায় মাথায় নিয়েই আমাদের সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে কিনা?


সম্পুরক পাঠঃ
লাল মোরগের ঝুটি ও আমার প্রতিক্রিয়া.........
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২৩ ভোর ৫:১৪
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×