বাংলাদেশের পুরনো সংস্কৃতি লাশের উপর দাড়িয়ে রাজনীতি করা। ফলে মুল অপরাধীরা পার পেয়ে যায় অনায়েসে। অপরাধী লাশের সমাধিতে এসে মায়া কান্না দেখানোর সুযোগ পায় । যেটি হচ্ছে এখন ব্লগার রাজীবের খুন নিয়ে। তার হত্যাকান্ডের পরপরই কোনভাবে নিশ্চিত না হয়ে একদল দলীয় কুলাঙ্গার রায় দিল শিবির তাকে হত্যা করেছে। অন্যদল বললো অমুকের দিকে সন্দেহের আঙ্গুল। শাহবাগ প্রজন্ম চত্ত্বরে ঘোষণা দেওয়া হলো জামায়াত শিবির তাকে হত্যা করেছে। পুলিশের উচিত এভাবে নিশ্চিত করে যারা রায় দিচ্ছে তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা। তাহলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে যাবে। নয়তো হত্যাকারিরা একের পর এক খুন করে পর্দার আড়ালে থেকে যাবে। এভাবে নিশ্চিত রায় দেওয়ার ফলে বিভ্রান্ত হন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। দলীয় লোকজনের মুখে এরকম কথা শুনে এর বিপরীত মেরুর কেউ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলেও এটা বের করতে উদ্যোগী হন না আর তারা।
রাজীব হত্যাকান্ড নিয়ে প্রথম থেকে দোষারোপ করে আসছিল শিবিরকে। কিন্তু বাস্তবিক কথা বিবেচনা করলে এটা একটা বাচ্চার কাছেও পরিস্কার এ সময়ে এসে কোনভাবেই আরেকটি ইস্যু তৈরির সুযোগ দিবে না জামায়াত-শিবির। তাদের এত হাদারাম ভাবাটা বোকামি ছাড়া আর কিছু না। শাহবাগের আন্দোলনে রুটিন বেধে দেওয়ায় এমনিতে খুশি শিবির। কারণ তারা ভেবে নিয়েছিল আন্দোলন নিয়ে যে রাজনৈতিক খেলা হয়েছে সেটা অনেকের কাছে পরিস্কার হয়ে যাওয়ায় এ আন্দোলন কিছুটা হলেও স্তমিত হয়ে যাবে। এ জন্য তারা স্বস্থির নিশ্বাসই ফেলেছিল। সুতরাং তারা রাজীবকে হত্যা করে আরেকটি ইস্যু তুলে দেওয়ার মতো বোকামি কি তারা করবে?
হত্যাকান্ডের নৈপথ্য খুজে বের করতে পুলিশ দুটি পথে এগুতে পারে। একটি হলো আন্দোলনে রুটিন বেধে দেওয়ায় হতাশ হওয়া অংশ আন্দোলনকে উজ্জীবিত এবং দিন রাত চালিয়ে নিতে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এর পেছনে বড় কারণ হতে পারে আন্দোলনে শক্তি যোগাতে এ কাজটি করতে পারে। অন্যটি হলো তার বিভিন্ন ব্লগ লেখায় ক্ষুব্দ হয়ে অন্যকোন উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী এ কাজটি করে ফায়দা লুটতে পারে। এতে দুটি লাভ তাদের একটি হলো তাকে খুনের খায়েস মেঠানো অন্যটি খুন করে পার পেয়ে যাওয়া। তারাও জানে এসময় হত্যা করা হলে দায়ী করা হবে জামায়াত শিবিরকে। অন্য আরেকটি কারণ খতিয়ে দেখা যেতে পারে তার সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা আছে কি না কারও। যার কারণে হত্যা করার মতো ক্ষিপ্ত ছিল হত্যাকারি। সেও হত্যার উপযুক্ত এসময়টিকে বেচে নিয়েছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। সর্বশেষ যে খবর পেলাম দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন নারী বন্ধু রয়েছে।
আমরা চাই লাশ নিয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ হোক। কে প্রকৃত খুনী তা আমরা দেখতে চাই। তরুন স্থপতি ও ব্লগার রাজীব হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হোক এটাই কামনা করছি। এবং এ রহস্য উন্মোচন না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দায়ী করে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকাটা হবে দূরদর্শিতার কাজ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



