somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণ এবং ধর্ষক বনাম ধর্ষিতা

১৩ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে সব দেখে শুনে চুপ করে থাকাটা অনেক কষ্টের। তাই আজ অনেক দিন পর লিখতে বসলাম।

আমরা সাধারনত ধর্ষণ বলতে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে বুঝি। এবং এই ধর্ষণ করা হয় একটা মেয়ের সম্মান নষ্ট করার জন্য! এবং ধর্ষকরা সফলও হয়ে আসছে এই বিষয়ে। যদি কোন মেয়ে ধর্ষণ হয় তাকে অন্য দৃষ্টিতে সমাজ দেখে। ধর্ষিত মেয়েটি যেন আর আমাদের সাথে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারে না। সে ভেবে পায় না কি করে মুখ দেখাবে সমাজে! হয় সে আত্মহত্যা করে অথবা বেঁচে থাকলেও নিজেকে সম্পূর্ণ গুঁটিয়ে রাখে এবং ভিতরে ভিতরে সে তিলে তিলে নিঃশেষ হতে থাকে, নিজেকে ঘৃণা করতে থাকে। অপরদিকে ধর্ষক বুক ফুলিয়ে চলে। এবং গর্বও করে। নিজের পুরুষত্বকে যেন এক উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেলো এমন একটা ভাব। আর এইটার জন্য দায়ী আমাদের সমাজ। আর আমাদের সমাজ বলতে আমরাই।

আমাদের সমাজে সন্ত্রাসী, ঋণখেলাপি, ঘুষখোর, প্রতারকরাই সম্মানিত, শ্রদ্ধেয়! আজ এরাই বীর দর্পে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। অপরদিকে সৎ মানুষদের বলা হয় বোকা, অকাজের, তারা এই দুনিয়া বোঝে না। সুতরাং এই সমাজে এর থেকে বেশী কি আশা করা যেতে পারে।



মেয়েদের প্রতিঃ

আপনাদের কি পরা উচিত কিভাবে চলা উচিত এ বিষয়ে কোন জ্ঞান দিবনা, শুধু ঐটুকুনই বলবো যে শালীন ভাবে চলুন। এতে হয়তো অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা এরিয়ে যেতে পারবেন। আবার আসি ধর্ষণ নিয়ে কিছু কথা। কেউ ইচ্ছে করে ধর্ষিত হতে চায় না। এইটা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তাই পূর্ব প্রুস্ততি থাকে না। তবুও একটা বুদ্ধি দেই, যদি কাজে লাগে। যখন দেখবেন আপনি ধর্ষণের শিকার হতে যাচ্ছেন এবং বাঁচার উপায় নাই তখন আর যুদ্ধে না গিয়ে মাথা ঠাণ্ডা রেখে ধর্ষকের সাথে তাল মিলিয়ে যান। এতে কিছুটা হলেও পরিবেশ আপনার অনুকুলে আসবে। যদি তা না করে ধস্তাধস্তি করে যান এতে কোন লাভই তো হবে না বরং আরও বেশী ক্ষতি হবে। তাই ধর্ষককে বুঝান আপনিও আগ্রহী। তারপর কৌশলে অবস্থা বুঝে ধর্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে দিতে পারেন (যদি হাতের কাছে ধারালো কিছু থাকে), অথবা খুব তীব্র আঘাত করতে পারেন অণ্ডকোষে। পুরুষদের অণ্ডকোষ খুবই স্পর্শকাতর, এবং সামান্য আঘাতই অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তারপর হয়তো কোন একটা উপায় করে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে আসলেন। বের হয়ে আসতে পারেন বা নাই পারেন, এটা নিশ্চিত করুন সে যেন পরবর্তীতে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হবার ক্ষমতা না রাখে। আপনার আগে পরে বিপদ আছেই। সুতরাং এটা যদি করতে পারেন তবে অন্তত মনকে সান্তনা দিতে পারবেন একটা কাজের কাজ করেছেন।



সমাজের প্রতিঃ

ধর্ষকদের সাথে সামাজিক ভাবে ব্যক্তি গতভাবে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এদের এক ঘরে করতে হবে। ধর্ষিতাদের প্রতি দৃষ্টি ভঙ্গি বদলাতে হবে। কেউ ধর্ষণ হলে তার সম্মানের কোন ক্ষতিই হয়না এই উপলব্ধি দিতে সাহায্য করতে হবে। আমাদের সমাজ ভিতরে ভিতরে ফ্রীসেক্সে পরিণত হয়েছে। একটা মেয়ে বিয়ের আগেই একাধিক মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে, এবং এটা তার আশেপাশের মানুসজন জানে। বন্ধু মহলে সে স্মার্ট হিসেবেই পরিচিত। তারাই সমাজে মাথা উঁচু করে চলছে। এবং তাদের সুন্দর ভাবে বিয়ে সাদিও হচ্ছে। অথচ যে মেয়েটির ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলো সেই মেয়েটির সাথে নষ্ট বিশেষণ লাগাতে দেখা যায়। অর্থাৎ মেয়েটিকে নষ্ট করা হয়েছে!! এই হল আমাদের সমাজ। যে নিজের ইচ্ছেয় তুলে দিল অন্নের হাতে সে স্মার্ট আর যার ইচ্ছের বিরুদ্ধে করা হল সে নষ্ট। তাই আমাদের কথাবার্তা, চিন্তা চেতনা যদি না বদলাই তবে কোন দিনও আইন করে এসব কমানো যাবে না।

একজনের শাস্তি অন্য জনকে দিবেন না। ধর্ষকের প্রাপ্য শাস্তি ধর্ষিতাকে যেমন দিবেন না। তেমনি তার পরিবারকেও না। কেউই চায় না তার সন্তান এতো নিকৃষ্ট কাজ করুক সে যতই খারাপ হোক না কেন। আজ একটা খবর দেখলাম ধর্ষকের বাড়ি এবং আসবাবপত্র ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষতি হল কার? হয় তার বাবা মা অথবা বউ সন্তান। ওদের ক্ষতি করে কি লাভ? আর যে ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজ করতে পারে তার বউ বাচ্চা কিংবা বাবা মার কথা ভাবার মতো মন মানসিকতা কতটুকু আছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যদি ওর মতো আমরাও পশু হই তাহলে কি পার্থক্য থাকল?



ধর্ষিতার প্রতিঃ

আপনি নষ্ট হন নি। নষ্ট হয়েছে ওই কাপুরুষটি। আপনা সম্মান এখনও তাই আছে আগে যা ছিল। যারা আপনাকে সম্মান দিতে জানে না তারাও ওই ধর্ষকের থেকে কোন অংশে কম না। একই শ্রেণীর বলে আমি মনে করি। তাই নিজেকে গুঁটিয়ে রাখবেন না। গুঁটিয়ে থাকবে তো ওই কাপুরুষটি। আপনার জন্য পৃথিবী যা ছিল আজো তাই আছে। একটা কথা মনে রাখবেন, নিজেকে সম্মান যদি আপনি না দেন তবে কেউ আপনাকে সম্মান দিবে না। তাই নিজেকে যথাযথ সম্মান দিন। আপনি যদি নিজেকে গুঁটিয়ে রাখেন, অপবিত্র বা নষ্ট মনে করেন, অথবা আত্মহত্যা করেন তবে ভেবে দেখুন তো জয় কি ধর্ষকেরই হল না? এগুলা ধর্ষকের প্রাপ্য। আপনি আপনাকে আগের জায়গাতেই রাখুন। আপনি মানসিক ভাবে শক্ত থাকুন। মনবল হারালেন তো হেরে গেলেন।



ধর্ষণের শাস্তিঃ

আমার মতে ধর্ষককে জেল বা ফাঁসি দিয়ে লাভ নাই। জেল দিলে কিছু দিন পর বের হয়ে এসে মেয়েটিকে আবার জ্বালাবে। আর জেল খেটে এসে কাউকে ঠিক হতে খুব একটা দেখি নাই। আর ফাঁসি দিলে তো সে বেঁচেই গেলো এক প্রকার। তাই এসব না দিয়ে অন্য কোন শাস্তি দেবার আইন করতে হবে। একই সাথে দুই ধরণের শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। মেয়েটিকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া (যদি এই ক্ষতি পূরণ হবার নয়), এক্ষেত্রে ধর্ষকের মালিকানায় থাকা সম্পত্তির অর্ধেক দিতে হবে, এবং অপারেশনের মাধ্যমে স্থায়ী ভাবে ধর্ষককের পুরুষাঙ্গটি নিষ্ক্রিয় করে দিতে হবে। কপালে লিখে দিতে হবে "আমি ধর্ষক"। তাহলে তার বেঁচে থাকাটাই তার জন্য হবে তার জন্য আসল শাস্তি।



সব শেষে সবাইকে আহ্বান করবো; শাস্তি দিন ধর্ষককে, ধর্ষিতাকে নয়। ঘৃণা করুন সামাজিক ভাবে বয়কট করুন ধর্ষককে, ধর্ষিতাকে নয়।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×