somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"পৃষ্ঠা- লেখকের গল্প"

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘরের মাচার উপর রাখা পৃষ্ঠাগুলো খুঁজতে শুরু
করে হিমেল।অনেকক্ষন খুঁজাখুঁজি করার পর যখন
পৃষ্ঠাগুলো আর খুঁজে পায় নি তখন মাচা থেকে
নিচে নেমে আসে।পৃষ্ঠাগুলো কোথায় রাখা
আছে ভাবতে ভাবতে মাথা চুলকায় হিমেল।
যখন ঘরের এদিক সেদিক খুঁজছিল তখনই
হিমেলের বাবা বাবুল মিয়া ঘরে প্রবেশ
করে।লুঙ্গিটা কাছাড় দেওয়া মাথায়
গামছাবাঁধা অবস্থায় জমি থেকে ঘরে ফিরে
পানি পান করতে যায়।বাবার আগমন দেখেই
হিমেল জিজ্ঞাস করে বসেঃ
>আব্বা আমার পৃষ্ঠাডি কই?
হিমেলের বাবা পানিতে চুমুক দিয়ে এক
ঢোক পানি গিলে গ্লাসটা সড়িয়ে
জিজ্ঞাস করেঃ
>কিয়ের পৃষ্ঠা?
হিমেল কমড়ে হাত দিয়ে নিজের বাবাকে
জিজ্ঞাস করেঃ
>ওই যে মাচার উপরে রাহা আসিলো যে।
এবার পুরো পানিটা পান করে বাবুল মিয়া
বললঃ
>ও!!ওই কাগজ তো কাগজওয়ালার কাছে ৮
টেকা কেজি বেইচা ফালাইসি।
হিমেল চোখ বড় বড় করে একটু উচ্চস্বরে বললঃ
>কি?তোমারে ওই কাগজ বেচতে কইল কেডায়?
আমি কত কষ্ট কইরা ওইডিতে গল্প লেখসিলাম।
বাবুল মিয়া মাথার ঘাম মুছতে মুছতে বললঃ
>এহহ আইসে গল্প লেহোইন্না।গল্প লেইখা কি
করবি?তোর গল্প কি বইয়ে আইব নি?যা ক্ষেতে
গিয়া কাম কর কামে দিবো।
কথাটা বলেই ঘর থেকে বের হয়ে যায় বাবুল
মিয়া।তার কথাগুলো শুনে মন খারাপ হয়
হিমেলের আর রাগের মাথায় পিছ থেকে
বলতে শুরু করেঃ
>আমার গল্পও একদিন বইয়ে আইবো কিন্তু তুমি
পড়তে পারবা না।তুমি তো "ক" লেখতেই কলম
ভাঙ্গ পাঁচবার।
...
যেতে যেতে ছেলের কথা শুনে মুচকি হাসি
দেয় বাবুল মিয়া।ওইদিকে হিমেলের মন
খারাপ হয়ে যায়।হিমেল ১০ম শ্রেণীতে পড়ে
মাত্র।কিন্তু গল্প লেখালেখিত মেধা অনেক
ভাল।ভালো কোন লেখকের গল্প না পড়লেও
বাস্তবতা নিয়ে খুব ভালো লিখতে পারে।
মাচার উপর যে পৃষ্ঠাগুলো রাখা ছিল তা
হিমেল গত ৩ মাস ধরে লিখে জমিয়েছে।কিন্তু
বাবুল মিয়া সাধারণ কাগজ ভেবে তা বিক্রি
করে দেয়।
ওইদিকে হিমেল সিদ্ধান্ত নেয় আবার সে গল্প
লেখা শুরু করবে আর তা অবশ্যই একদিন মানুষের
কাছে পৌঁছাবে।এই ভেবে ঘর থেকে
বেরিয়ে আসে হিমেল।
৪ মাস পরঃ
----------
হিমেল আবারও ভালো কিছু গল্প লিখে জমা
রাখে প্রতিদিন পড়ার পাশাপাশি টুকিটাকি
লিখত আর মলাট আকাড়ে পড়ার টেবিলের
ড্রয়ারে রেখে দিতো।হিমেলের কাছে
এলাকার প্রায় বড় ভাইয়েরা কবিতা
লিখিয়ে তাদের প্রেমিকাদের দিতো।কারন
তারা জানত হিমেলের মেধা গল্প আর
কাব্যতে খুব ভালো।একদিন এক বড় ভাইয়ের জন্য
কবিতা লিখা শেষে সে এটা নিতে এসে
হিমেলকে বললঃ
>বেটা লেইখা লেইখা কাগজে আর কতদিন
রাখবি বইয়ের ভিতর দিয়া মানুষরে পড়ার
সুযোগ দে।নিজে পড়লেই কি হইব নি?
হিমেল তার কথাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহন
করল।আর বললঃ
>চিন্তা কইরেন না ভাই একদিন আমার গল্পও
মাইনেষে পড়বো খালি দোয়া কইরেন।
লোকটা হিমেলের কাঁধে হাত দিয়ে একটা
হাসি দিয়ে বললঃ
>ওইডা পরে হইব নে চল এহোন গিয়া চা খাইয়া
আহি।
হিমেল হাসি দিয়ে তার কথার প্রতি সম্মতি
জানালো।তারপর তারা দুজন চা খেতে
বাজারের দিকে যেতে থাকলো।
...
হিমেল বলে তো দিয়েছে ঠিকই যে ওর গল্প
বইয়ে ছাপবে কিন্তু ও বাস্তবতা জানে যে
নিজের পক্ষে বই ছাপানো সম্ভব না।আর
গ্রামের ছেলে বলে তার গল্পকে কোন
প্রকাশনা এত পাত্তা দিবে না।তাই হিমেল
শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগল তার
গল্পও যাতে মানুষ পড়তে পারে।
আল্লাহ হিমেলকে একটা রাস্তা দেখিয়ে
দিলেন।একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলো
হিমেল।বাড়ি ফেরার পথে বাজারের দক্ষিন
পাশে একটা ছাউনি আছে যেখানে একটা
পত্রিকা মানুষের পড়ার জন্য লাগানো থাকে।
পত্রিকার নাম "বঙ্গের কথা"(কাল্পনিক)।বড়
ধরনের পত্রিকাই বটে।প্রতিদিন মানুষ যাতে
তথ্য জানতে পারে সেই কারনে পত্রিকার
অফিস থেকেই বলা হয় এখানে পত্রিকা
লাগাতে।হিমেল ওই ছাউনির পাশ দিয়েই
যাচ্ছিল।বিকেল সময় ছিল তাই বাজারে এত
একটা লোক ছিল না যার কারনে এক লোক
পত্রিকার উপর দিয়েই তাদের কোম্পানির
বিজ্ঞাপন লাগিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু ওইখানে
বিজ্ঞাপন লাগানো নিষেধ।হিমেল
লোকটাকে বলেঃ
>কিও কাকা!!এনে না বিজ্ঞাপন লাগাইতে
না করসে।
লোকটা পিছে ফিরে চেয়ে কিছু না বলেই
হাতের বাকি বিজ্ঞাপন নিয়ে হাটা শুরু
করে।হিমেল পিছ থেকে বারবার ডাকলেও আর
কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায় নি লোকটার কাছ
থেকে।লোকটাকে ডাকা বাদ দিয়ে
পত্রিকার দিকে চায়।দেখতে পায় পত্রিকার
কিছু অংশ বিজ্ঞাপনের জন্য ঢেকে গেছে।
হঠাৎ করে হিমেলের মাথায় একটা বুদ্ধি
আসে।হিমেল চিন্তা করে ও নিজেও এই
লোকটার মতো নিজের গল্প এই বিজ্ঞাপনের
জায়গায় লাগিয়ে দিবে যাতে মানুষ পড়তে
পারে।
...
ওইদিন রাতেই হিমেল ওর লেখা একটা গল্পের
কিছু পৃষ্ঠা নিয়ে বাজারে যায় ফটোকপি
করাতে।হিমেল দোকানদার সিয়ামকে
বলেঃ
>ভাই ফটোকপি টা নিউজপিন কাগজে কইরো?
ফটোকপি সাধারণত সাদা কাগজে করা হয়।
হিমেল নিউজপিনের কথা বলায় চমকে যায়
সিয়াম ব্যাপারী।আর বলে উঠেঃ
>নিউজপিনে কি কেউ ফটোকপি করে রে?
সাদা কাগজেই না করবি।
>না আমার নিউজপিনেই লাগবো।
আইচ্ছা ঠিক আসে।
সিয়াম ব্যাপারী গল্পটা প্রিন্ট করে।তিন
পৃষ্ঠা হয় গল্পটা।হালকা প্রিন্ট হয়।তাতেও খুশি
হয় হিমেল।
পরেরদিন সকালে পত্রিকা লাগিয়ে দিয়ে
যাওয়া হয়।যেই সকালে পত্রিকা লাগানো হয়
সেই সকালে এত মানুষ থাকে না তাই হিমেল
এক পর্যায়ে গিয়ে তার গল্পের পৃষ্ঠা গুলো
পত্রিকার নিচের সারিতে লাগিয়ে দিয়ে
আসে।পরে ৯-১০ টার দিকে যখন মানুষ পত্রিকা
পড়তে আসে তখন পত্রিকার সাথে হিমেলের
গল্পও পড়তে থাকে।আর হিমেল মানুষদের
মাঝে থেকেই নিজের গল্পের সুনাম শুনে
ভীষন খুশি হয়।
এমন করে প্রায় সময় গল্প লাগিয়ে দিয়ে
আসতো হিমেল।এই খবরটা কিভাবে যেন
পত্রিকার অফিস পর্যন্ত চলে যায়।তাদের
গুরুত্বপূর্ণ কলামগুলো মানুষ পড়তে পারছে না
ভেবে রেগে যায় পত্রিকার মালিক।মানুষ
পাঠানো হয় খুঁজে বের করতে কে এই কাজটা
করে।তাদের মানুষ পাঠানো সর্তেও হিমেল
চুপিচুপি নিজের গল্প পত্রিকার উপরে
লাগিয়ে দিয়ে আসতো।কিন্তু কেউ ধরতে
পারে নি।যেই লোকগুলো হিমেলকে ধরার
জন্য পাঠানো হয়েছিল তাদের মাঝে একজন
সাংবাদিকও ছিল।লোকটা খুঁজতে এসে
হিমেলের লাগিয়ে দেওয়া গল্প পড়ে
বিমোহিত হয়ে যায়।এখন তার অফিসের জন্য নয়
এত সুন্দর গল্পের লেখক কে এটা জানার জন্য
খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
...
যেহুতে লোকটা সাংবাদিক।তাই তিনি
প্রথমেই ক্লু পেলেন গল্পগুলো ফটোকপি করা আর
তাও নিউজপিনের কাগজে।তাই সে ভাবলো
নিশ্চই ফটোকপি এই বাজার থেকেই করা হয়।সে
পত্রিকা থেকে একটা নিউজপিনের কাগজ
তুলে ফটোকপির দোকানে গিয়ে জিজ্ঞাস
করেঃ
এই ফটোকপি কি আপনার দোকান থেকে করা?
সিয়াম ব্যাপারী লেখাগুলো পড়ে বলেঃ
>হ!!আমার দোকান থাইকাই করা।কেন কি
হইসে?
>না কিছুনা।আপনি কি বলতে পারবেন এটা
কে করে আপনার থেকে?
>এইডা তো হিমেল কিছুদিন পরপরই কইরা লইয়া
যায়।
>কে এই লোকটা?
>আমাগো এক ছোঢ ভাই।
>আমাকে কি ওর বাসাটা দেখিয়ে দিতে
পারবেন?
সিয়াম ব্যাপারী সম্মতি জানিয়ে
সাংবাদিককে হিমেলের বাসায় নিয়ে
যায়।হিমেলকে ডাক দিয়ে ঘর থেকে বের
করে সিয়াম ব্যাপারী।তারপর সাংবাদিক
সাহেব সিয়ামকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে।
সিয়াম চলে যায়।তারপর সাংবাদিক সাহেব
হিমেলকে জিজ্ঞাস করেঃ
>তুমি কি প্রায় বাজারের পত্রিকায় নিজের
গল্প লাগিয়ে দিয়ে আসো?
হিমেল তার কথা শুনে ঘাবড়িয়ে যায়।কিন্তু
সত্য কথাই বলে দেয়ঃ
>জ্বী আমিই লাগাই।কিন্তু আপনে কেমনে
জানলেন?
সাংবাদিক সাহেব হাসি দিয়ে বললঃ
>চলো আমার সাথে চলো।
হিমেল হতভম্বের মতো বলে উঠলঃ
>কই যামু?
>আমাদের অফিসে।
>আপনের অফিসে গিয়া কি করমু?
>তোমাকে দিয়ে কাজ আছে।
>না আমি যামুনা।
>আরে ভয় পেয় না।তোমার কিছু হবে না।
এমনিতেই তোমার সাথে আমাদের বসের
পরিচয় করিয়ে দেই।দেখি তোমার লেখা কি
আমাদের পত্রিকায় ছাড়তে পারি কি না।
পত্রিকায় নিজের লেখা ছাপার কথা শুনে
খুশি হয়ে যায় হিমেল।তার সাথে যাওয়ার
জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।হিমেল ওর বাবা বাবুল
মিয়ার সাথে সাংবাদিক লোকটার পরিচয়
করিয়ে দিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেয়।হিমেলের
বাবা যাওয়ার অনুমতি দেয়।তারা "বঙ্গের
কথা" পত্রিকার মেন অফিসে যাওয়ার জন্য
রওনা হয়।
...
দীর্ঘ ৪ ঘন্টার সফর করে শহরে "বঙ্গের কথা"
পত্রিকার মেন অফিসে পৌঁছায় হিমেল আর
সাংবাদিক।লোকটা হিমেলকে সরাসরি
পত্রিকার মালিকের কক্ষে নিয়ে যায়।কক্ষে
হিমেলকে প্রবেশ করানোর আগে সাংবাদিক
মালিককে কক্ষে গিয়ে বলে আসে সে
ছেলেটাকে নিয়ে এসেছে কিন্তু
ছেলেটাকে যাতে কিছু না বলা হয়।তারপর
সাংবাদিক সাহেব হিমেলকে কক্ষে নিয়ে
আসে।হিমেলকে সামনে রেখে ওর দু কাঁধে
হাত রেখে পত্রিকার মালিককে সাংবাদিক
বলেঃ
স্যার ও হিমেল।
কথাটা বলে উঠার আগেই থামার নির্দেশ দেয়
পত্রিকার মালিক।তারপর হিমেলকে উদ্দেশ্য
করে বলেঃ
>কেন করতে তুমি এই কাজগুলো?
হিমেল প্রথমে ঘাবড়িয়ে যায়।তারপর নিচু
স্বরে বলেঃ
>আমার গল্প লেহার অনেক শখ আসিলো।কিন্তু
কতদিন আর লেইখা নিজের টা নিজে পড়মু।আর
আপনাগো পত্রিকাও অনেক মানুষ পড়তো।
হেল্লিগা গল্পডি ফটোকপি কইরা আপনাগো
পত্রিকার উপরে লাগাইসিলাম।
কথাগুলো শুনে পত্রিকার মালিক আবার প্রশ্ন
করেঃ
>তুমি কি জানো তুমি আমাদের কতবড় ক্ষতি
করেছ?
এবার চমকে যায় হিমেল।ভাবতে থাকে গল্পের
কাগজ পত্রিকার উপরে লাগানোর ভিতর আবার
ক্ষতি কিসের।হিমেল মাথা নিচু করে চুপ করে
থাকে এর ভিতর সাংবাদিক বলে উঠেঃ
>স্যার প্লিজ বাদ দিন।ভুল করেছে আর হবেনা।
কিন্তু স্যার একটা কথা বলার ছিল।
>জ্বী বলুন রায়হান সাহেব।
>সপ্তাহে যে একদিন আমাদের পত্রিকায়
গল্পের পৃষ্ঠাটা থাকে সেখানে কি
ছেলেটার গল্প ছাপানো যায়?অনেক ভালো
লিখতে পারে স্যার আমি নিজে পড়েছি।
পত্রিকার মালিক আচমকা একটা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়
সাংবাদিক রায়হান সাহেবের প্রতি।বলে
উঠেঃ
>রায়হান সাহেব!!আমার মাথার চুলগুলো কি
এখন আপনি গুনতে পারবেন?
পত্রিকার মালিক প্রায় পুরো টাকই ছিল তাই
যে কয়টা চুল ছিল নিঃসন্দেহে গোনা যেত।
প্রশ্নটা শুনে রায়হান সাহেব বলে উঠেঃ
>ঠিক বুঝলাম না স্যার?
>চিন্তায় আমার মাথায় চুলগুলো ঝড়ে পড়ে
গেছে কিভাবে এই পত্রিকাকে টপে উঠানো
যায়।জীবনের ১৬ বছর এই পত্রিকার পিছে খরচ
করে ফেলেছি।আর আপনার কি ফাইজলামি
মনে হচ্ছে আমি এই ছেলেকে নিজের
পত্রিকায় গল্প প্রকাশের চান্স দিবো?আপনি
কি জানেন না এই পত্রিকায় যাদের গল্প
প্রকাশ হয় তারা কোন মাপের লেখক।তাদের
গল্প বাদ দিয়ে এই ছেলের গল্প প্রকাশে কথা
ভাবলেন কিভাবে?
>না স্যার মানি খুব ভালো লেখে।আপনারও খুব
ভালো লাগবে।
>দেখুন রায়হান সাহেব খুব ভালো লেখে
বুঝলাম কিন্তু পত্রিকায় যারা লিখালিখি
করে তাদের নামের যোগ্যও তো ছেলেটা হয়
নি।মানুষ তাদের নাম দেখেই পত্রিকাকে
পাত্তা দেয় আর এই ছেলের নাম কেউ জানেও
না তাহলে পড়বে কি?তারপরে আমার
পত্রিকার বারোটা বেজে যাক।
>স্যার আপনি বুঝতে চেষ্টা করুন।
>থাক আমার বুঝা লাগবে না।আপনি এখন প্লিজ
এখান থেকে চলে যান।
...
রায়হান সাহেব রাগে হিমেলকে নিয়ে
ওইখান থেকে চলে যায়।পরে হিমেলের জন্য
বিভিন্ন প্রকাশনায় যোগাযোগ করে রায়হান
সাহেব।কোন প্রকাশনা হিমেলের
গল্পগুলোকে পাত্তা দেয় নি হিমেলের নাম
কাম নেই বলে।শেষমেশ যখন আশা ছেড়ে দেয়
হিমেল আর রায়হান সাহেব তখন
"সন্ধি" (কাল্পনিক)নামের একটা প্রকাশনা
থেকে কল দেয় রায়হান সাহেবকে।
>হ্যাঁলো।
>হ্যাঁলো।আস সালামুয়ালাইকুম।কে বলছেন?
>আমি "সন্ধি" প্রকাশনা থেকে জয়নাল বলছি।
>ও!!আমি কিভাবে আপনাকে সাহার্য্য করতে
পারি?
>জ্বী আপনি যেই গল্পটা আমাদের এইদিকে
পাঠিয়েছিলেন তা একটা বইয়ের জন্য
সিলেক্ট হয়ে গেছে।
খবরটা শুনে খুশিতে মাতোয়ারা হয়ে যায়
রায়হান সাহেব।তারপর বলেঃ
>সত্যি?কিন্তু আপনারা তো বলেছিলেন
আপনাদের এইখানে বই ছাপানোর জন্য সব গল্প
সিলেক্ট করা হয়ে গেছে?
>জ্বী আসলে একটা বইয়ের একজন লেখক তারা
লেখা অন্য প্রকাশনায় দিয়ে দিয়েছে যার
জন্য একটা গল্প শর্ট হয়ে গেছে।তাই আপনার
পাঠানো গল্পটা সিলেক্ট করা হলো।কিন্তু
গল্পটার নাম দেওয়া হয় নি।নামটা বললে
ভালো হতো।
>জ্বী গল্পটা আসলে আমার না এক ছেলের যার
স্বপ্ন ছিল একটা বইয়ে নিজের লেখা খুঁজে
পাবে।আর আপনারা স্বপ্নটা সত্যি করলেন তাই
ধন্যবাদ।আমি ছেলেটাকে জিজ্ঞাস করে
আপনাকে গল্পের নামটা বলছি।
>আচ্ছা ধন্যবাদ।
রায়হান সাহেব তার পত্রিকার অফিস থেকে
হিমেলের গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।গ্রামে
পৌঁছে হিমেলকে এই খুশির সংবাদটা
জানায়।হিমেল খুশিতে আত্মহারা হয়ে সারা
গ্রামে বলতে থাকে।তারপর রায়হান সাহেব
হিমেলকে গল্পের নামটার ব্যাপারে
জিজ্ঞাস করে।যেহুতে প্রকাশনায় পাঠানো
গল্পটা নিজের বাবাকে নিয়ে ছিল তাই
গল্পটার নাম ঠিক করে "ষোল আনার জমি"
...
পরের বছর বইমেলায় হিমেলের গল্পটা প্রকাশ
পায়।রায়হান সাহেব হিমেলকে বইমেলায়
নিয়ে যায় নিজের লেখা গল্পের বই দেখতে
আর প্রকাশনার মানুষদের সাথে পরিচয় করাতে।
প্রকাশনার মানুষ হিমেলের অনেক প্রশংসা
করে।আর বইমেলায় হিমেলের গল্পটাও মানুষ
বেশ পছন্দ করে।তারপর ওই প্রকাশনার হাত ধরে
উঠে আসে হিমেল নামের একজন ভালো
লেখক।
৮বছর পরঃ
----------
হিমেল দেশের মাঝে এখন একটা ভালো
লেখক।ওর লেখা গল্প উপন্যাস পড়তে মানুষ
ব্যাকুল হয়ে যায়।এই সাফল্যের জন্য হিমেল
সবসময় রায়হান সাহেবকে কৃতজ্ঞ জানায়।
একদিন হিমেলের এই সাফল্যের গল্প "বঙ্গের
কথা" পত্রিকায় "একজন তরুন লেখকের গল্প"
শিরোনামে বের হয়।পত্রিকার মালিক
সেইদিন রায়হান সাহেবকে বলে উঠেঃ
>আগে যদি জানতাম এই ছেলে একদিন এত বড়
লেখক হবে তাহলে চান্সটা সেইদিন নিয়েই
নিতাম।
তার কথা শুনে হেসে উঠে রায়হান সাহেব।
সেইদিন বাজারে কি যেন কিনতে যাচ্ছিল
হিমেলের বাবা বাবুল মিয়া।এক দোকানদার
হিমেলের বাবাকে ডাক দিয়ে হিমেলের
ব্যাপারে লেখা কলামটা পড়ে শুনায়।শুনে
তার মনে পড়ে যায় ছেলের ছোটবেলায় বলা
কথাঃ
>আমার গল্পও একদিন বইয়ে আইবো।কিন্তু তুমি
পড়তে পারবা না কারন তুমি তো "ক" লেখতেই
কলম ভাঙ্গ পাঁচবার।
কথাটা মনে পড়তেই কেঁদে উঠে বাবুল মিয়া।
ছেলের স্বপ্ন সত্যি হয়েছে বলে আজ তার গর্ব
হয়।
(কাল্পনিক)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×