শেষ হলো হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল। সারাদেশে সরকারি দলের কর্মীদের প্রকাশ্য গুলি হামলা, পুলিশের লাঠিপেটা, বাধা সত্ত্বেও মোটামুটি স্বতস্ফুর্ত ভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। আজকের হরতালে সরকারের আচরণ এটাই প্রমাণ করে যে মিশরের মোবারক সরকার তাহরীর স্কোয়ার কে যেভাবে হ্যান্ডেল করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার সেভাবেই হ্যান্ডেল করতে চাইছে। কিন্তুু সরকার ভুলে যাচ্ছে মোবারক সরকারের কঠোর দমননীতি দীর্ঘদিনের সেকুলার মিশরে কট্টর ডান মুসলিম ব্রাদারহুড কে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে।
আওয়ামী লীগ সরকার আজ ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় দাড়িয়ে। তাদের পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে দেশ আগামীতে কট্টর ডানপন্থায় চলবে না বরাবরের মত মধ্যপন্থায় চলবে। তারা কেমন বিচক্ষণতার সাথে, সদিচ্ছার সাথে আলোচনার মাধ্যমে, নরম সুরে আলেমদের সাথে বার্গেইন করেন তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে সারা জাতি। কিন্তুু এখানেই গোলমাল। কেন যেন মনে হচ্ছে প্রচন্ড সদিচ্ছা থাকলেও কার যেন ইশারায় সরকার বারবার তার সমঝোতার পথ থেকে সরে এসে উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এক মন্ত্রী একরকম আরেক মন্ত্রী আরেক রকম বলছেন। কোন কোন মন্ত্রী নরম সুরে বলছেন আবার প্রধানমন্ত্রী আজ বিবিসি কে গরম সুরে বল্লেন। সরকার যেন ভীষণ ভাবে কনফিউজড।
সেই ইশারা কে খুজতে গেলে খুব বেশী মাথা খাটানোর দরকার নাই। সরকারকে ঠান্ডা মাথায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধা প্রদান করছে তথাকথিত গনজাগরণ মঞ্চ, শাহরিয়ার -বাচ্চু গংরা। দুক্ষের বিষয় এটাই যে এদের খুটি আওয়ামী লীগের হাতে নাই বরং সরকারের ভেতর ও বাইরের বাম যারা বহু বছর পর ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে পাগল প্রায়। এরা ঐতিহ্যবাহী, পুরোনো ও স্বাধীনতার নেতৃত্বে দান কারী দলটির ভেতরে প্রবেশ করে ও জোট এ আবদ্ধ করে সিন্দাবাদের ভুতের মতো চেপে বসেছে। বি এন পি যতই চেচামেচি করুক গনজাগরণ মঞ্চ আওয়ামী লীগের ইশারায় চলে আমি তা বিশ্বাস করি না। এটা বামদের নেতৃত্বে একটি চাপ প্রয়োগকারী আন্দোলন যা আওয়ামী লীগকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।
সরকার ভুলে যাচ্ছে যাদেরকে সে ক্ষেপাচ্ছে তারা মসজিদের ইমাম, গ্রামের মোড়োল, যাদের কথায় গরিব মানুষ চলে, তাদের আহবানে যে সেন্টিমেন্ট তৈরী হয় তা টাকা দিয়ে কেনা যায়না। জন্ডিস মিডিয়া বলছে টাকা দিয়ে হুযুরদের আনা হয়েছে। মানুষ নারায়ণগঞ্জ, সাভার, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে হেটে এসেছে। আপনি বলতে চান মানুষ টাকার বিনিময়ে এতদূর হেটে আসবে একটি টাকায় তৈরী জনসভায়? এসব বল্লে তাদের রাগ আর বিশ্বাস কে বাড়িয়ে দিবেন আর কিছু নয়।
সরকার কে মিথ্যাচার বন্ধ করতে হবে, বাচ্চু - শাহরিয়ার গং এর মতো জনবিচ্ছিন্ন মানুষ, কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম এর ভাষায় স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের কোনো অবদান নেই, বাম ভুত যারা আওয়ামী লীগকে একটি ভীষণ অন্ধকার গর্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের কথা শোনা বন্ধ করতে হবে, জনগণের কথা শুনতে হবে, টকশো নয় পাবলিক পালস বুঝতে হবে, ভোটের হিসাব বুঝতে হবে, বাম ওয়াশড নয় বংগবন্ধুর সৈনিকদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনতে হবে। নাহলে শুধু আওয়ামী লীগকে হোসনী মোবারক এর মত মুল্য দিতে হবে ।তার ডুবন্ত নৌকায় সঙ্গী হবেনা কেউ ।।