প্রসবিনীর চিৎকারে কেঁপে কেঁপে উঠছে আঁতুড়ঘর।
পিচ্ছিল পথ বেয়ে বেরিয়ে এল কবিতা।
জলজ আবরণে মোড়া ফুটফুটে কবিতা-
রক্তাক্ত, নিরীক্ষক- নির্বাক ভ্রুক্ষেপণে।
প্রসবিনীর জরায়ুতে একটি মেয়েকবিতার
আলামত পেয়েছিল কবিতার আত্মীয়স্বজন।
ছোটখাট বিতর্ক ছিল কবিতার নাম নিয়ে।
দাদা-দাদী বলেছিল, হাসিনা বেগম;
বাবা, চাচা, ফুফুরা একাট্টা-
কবিতার নাম হবে খালেদা বানু।
কিন্তু ব্যাপারটা ঘটল এর উল্টো।
জননীর নাড়ি থেকে নাভিটা বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে
স্বাধীন অস্তিত্বের ফরমান শোনাল কবিতার পুংলিঙ্গ।
শুরু হল নতুন বিতর্ক।
‘কবিতার নাম হবে মজিব মিয়া।’
‘না, জিয়াবুল ইসলাম।’
প্রসবিনীর চিৎকারে কেঁপে ওঠল গর্ভফুল-
‘না, না’।
এখানে প্রসবিনীর মতামতই গ্রহণযোগ্য।
বিতর্কে যোগ হল নতুন মাত্রা।
‘আবদুর রবের জেহাদি ছেলের নামে নাম হবে;
কী যেন নাম- মাহামুদ!’
‘আমরা কবিতার নাম দিতে চাই খেলারাম শামসু।’
সদ্যজাত কবিতা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠল।
কবিতা তাহলে ওদের ঘেন্না করে।
(ওদের আড্ডায় কলম ছোড়াছুড়ি হয়।
হাতেগোনা ক’জন ওরা, কইমাছের মতো-
শব্দের বুদবুদে মাথায় তোলে পুরো দেশ।)
বিছানায় রক্তের স্রোত নামিয়ে দিয়ে
লাফিয়ে ওঠল কবিতার জননী-
‘না, আমি কবিতার নাম দিতে চাই-
নাম দিতে চাই-
নাম দিতে চাই- ‘মানুষ’।’
কবিতাকে বুকে নিয়ে প্রসবিনী ডাকল-
‘মানুষ, ও-মানুষ।’
সদ্যজাত কবিতা কী এক সম্মোহনী চোখে
জননীকে শিরোনাম বিষয়ে তার রেজামন্দি জানাল।
যেন কবিতাটি পাশব খেয়ালিপনার ওপর
এখনই ছড়িয়ে দিয়ে যাবে নিপট মনুষ্যত্ব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




