somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খেলা- ইভটিজিং সম্পর্কিত

০৩ রা নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নোমান সদ্য ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স সহ এমএ পাস করে মমতাময়ী গার্লস হাই স্কুল এ শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলো।যদিও তার কোন কাজে যোগ দেয়ার ইচ্ছা ছিলো না।কিন্তু মমতাময়ী গার্লস হাই স্কুলের হেডমাস্টার আজিজ সাহেব তার গ্রামেরই লোক এবং গুরু জন।তাই নোমান তার কথা ফেলতে পারলো না। নোমান ভাবলো বিসিএস পরীক্ষা হতে দেরি আছে।ততোদিন না হয় পড়াক। সে শুধু ক্লাস টেন পড়াতে রাজি হলো।

হেডমাস্টার নোমানকে টেনের ছাত্রীদের প্রথম যোগদানের দিন পরিচয় করিয়ে দিলেন, এই হচ্ছে নোমান আহমেদ। তোমাদের নতুন ইংরেজি টিচার। খুবই বৃলিয়ান্ট, ইংরেজিতে এমএ।
ছাত্রীরা সবাই দাড়িয়ে সালাম দিলো।

নোমান ওয়েল ড্রেসড্ হয়ে গিয়েছিল।কালো প্যান্ট শাদা শার্ট ইন করে পড়েছিল। সে টাইও পড়েছিল, জুতো জোড়াও কালো চকচকে পলিশ করা।ক্লিন শেভড হয়ে আসায় চেহারা ছিলো উজ্জল।

ক্লাসে নোমান না বসে দাড়িয়ে হেটে হেটে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কথা বলতে শুরু করলো। সবার নাম জানলো ও পরিচিত হল। নোমান ক্লাস টেনের ইংরেজি পাঠ্য বই ইংলিশ ফর টুডের ন্যাশনাল মেমোরিয়াল চ্যাপ্টার দিয়ে ক্লাস শুরু করলো। কয়েক ছাত্রীকে রিডিং পড়তে বললো।কে কেমন পরতে পারে কার উচ্চারন কেমন তা জানাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। পরে নোমান ক্লাসে চ্যাপ্টার পড়িয়ে শোনালো এবং বুঝিয়ে দিলো।নোমানের পড়ার স্টইল, বাচন ভঙ্গি, উচ্চারন ছিলো উচু মানের।ছাত্রীরা তার পড়া এবং পড়ানোর স্টইল দেখে খুবই খুশি। প্রতিদিন ক্লাসে সে গ্রামার, কম্পোজিশন,প্যারাগ্রাফ সব কিছু বুঝাতে লাগলো। ছাত্রীদের কাছে সকল কঠিন ব্যাপার গুলো পানির মতো সহজ হতে লাগলো।

ক্লাসে ছিলো প্রায় ৬০ জনের মতো ছাত্রী। নোমান প্রতিটা মেয়েকেই মনে মনে পছন্দ করতো।মেয়ে গুলো ছিলো প্রাণবন্ত, সজীব ও উচ্ছ্বল। কয়েকদিন ক্লাস করার পর তার মন যেন মেয়েদের প্রতি দুর্বল হতে লাগলো। ধীরে ধীরে সে ছাত্রীদের সাথে ফৃ হতে লাগলো। ক্লাস নেয়ার প্রথম প্রথম পাঠ্যবইয়ের বাইরে কথা বলতে পারতো না। মেয়েদের দিকে তাকালে তার হ্রৎকম্পন বেড়ে যেতো।

নোমান ক্লাসের অনেক মেয়েদের নামই জেনে গেল।তাদের প্রায় সবার নাম মুখস্থ হয়ে গেল। প্রশ্ন করার সময় ক্লাসের সেরা সুন্দরীদের নাম ধরে ডাক দিত। প্রায় সব মেয়ের সাথেই তার সখ্যতা গড়ে উঠল। মেয়েরা নোমান স্যার বলতেই পাগল প্রায়।পড়ার সময় নোমান মেয়েদের সাথে কৌতুক, ফুর্তি করতো।মেয়েরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নোমানের সাথে ফান করত। নোমান আবেগের সাথে বলতো, আমার সাথে কথা বলতে সঙ্কোচ বোধ কোরো না।

নোমান রাতে শুয়ে এসব মেয়েদের কথা চিন্তা করতো। কি সুঠামদেহী তাজা ফুলের মতো এক এক টা মেয়ে।
ক্লাসের অনেক মেয়েই নোমানের মোবাইল নাম্বার চেয়ে নিত, অজুহাত দেখিয়ে বলতো স্যার ইংলিশে কোনো প্রবলেম হলে ফোন করে ক্লিয়ার করিয়ে নিবো। নোমান বলতো তোমাদের অবশ্যই সে অধিকার আছে। শুরু হলো বিড়ম্বনা। রাত বিরাতে ফোনে জ্বালাতন শুরু। স্যার এটা কি হবে, ওটা কি হবে। নোমানও বেশ মজা পেতো।কোন কোন মেয়ে রাতে টুকটাক প্রেমও নিবেদন করত। এরই মধ্যে তিন মাস পার হয়ে গেছে। ছাত্রীরা আস্কারা পেয়ে পড়ার চেয়ে খোশগল্পই বেশি করতো।নোমান শিক্ষকতার পেশার চেয়ে প্রেমের দিকে বেশি ধাবিত হলো।

এক দিন ক্লাসে বললো, চল আজকে আমরা ফুল ফুল খেলি। মেয়েরা বললো এইটা কিভাবে খেলে আমরা পারি না।নোমান বললো আমি শিখিয়ে দিবো।একবার খেললে মজা লেগে গেলে প্রতিদিনই তোমরা খেলতে চাইবে।ছাত্রীরা বললো ঠিক আছে স্যার।

খেলা শুরু হয়ে গেলো। নোমান প্রথমে সুইটি কে ডেকে এনে তার পাশে দাড় করালো। নোমান ওর গায়ের সাথে লেগে মাথায় হাত দিয়ে মুখটা কানের সাথে লাগিয়ে ফিশ ফিশ করে একটা ফুলের নাম বললো। এবং বললো যে নাম টা মনে রেখে তোমার সিট এ চলে যাও কউকে বলো না। তারপর লাভলি কে ডাকলো। তাকেও তার নরম পিঠে, মাথায় হাত দিয়ে মুখ কানের সাথে লাগিয়ে বললো, আমি সুইটিকে কি ফুলের নাম বলেছি তুমি তা বলতে পারলে ১০ নাম্বার পাবে।যে এই খেলায় বেশি নাম্বার পাবে সে ফার্স্ট হবে। তাকে মুল্যবান গিফট দেয়া হবে। চিন্তার কোনো কারণ নেই সেকেন্ড এবং থার্ডের জন্য ও গিফট আছে। এভাবে নোমান সব মেয়েকে ডেকে তাদের গালে ঘাড়ে ও বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে কানে কানে ফুলের নাম বলতে থাকে। নোমান মেয়েদের কানে সুধু মুখ ই দেয় না সুকৌশলে জিভ লাগায় ও একটু আধটু কিসও দেয়। এতে মেয়েদের গায়ে সুরসুরি লাগতো এবং তাদের শরীরের লোম গুলো খাড়া হয়ে উঠটো।
এই খেলা শুরু হওয়ার পর মেয়েদের পড়ালেখা গোল্লায় গেছে। স্কুল ছুটির পর বাড়িতে গিয়ে পড়ায় মন বসে না।পরদিন কখন স্কুলে গিয়ে স্যার এর সাথে ফুল ফুল খেলবে তা ভাবতো। মেয়েরাও নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতো দারুন খেলা তো। একজন বললো জানিস স্যারের মুখ আমার কানে লাগলে স্যারের গরম জিভের পরশে আমার মাথা অনেকক্ষন পর্যন্ত ঝিম ঝিম করে। অন্য আরেক জন সায় দিয়ে বললো হুম ঠিক কথা।

মেয়েদের পেটে নাকি কাথা থাকে না।ফুল ফুল খেলার কোথা কোনো না কোনো ভাবে মেয়েদের অভিবাবকদের কানে চলে গেলো।অভিবাবকরা মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মহা চিন্তায় পড়লেন। নোমান মাস্টার মেয়েদের কে কুপথে পরিচালিত করছে। সবাই হেডমাস্টারের কাছে নোমানের বিরুদ্বে অভিযোগ করলোপরদিন হেডমাস্টার নোমান কে দফতরি দিয়ে তার রুমে ডাকলেন। বললেন আমার স্কুলের মেয়েরা একেকটা পবিত্র ফুল। তুমি ফুল ফুল খেলার নামে আমার এ পবিত্র ফুলের মতো মেয়েগুলোকে অপবিত্র করার চেষ্টা করেছ।তুমি আজই ভালোয় ভালোয় আমার স্কুল থেকে বিদায় হয়ে যাও।

*****
এই ইভ টিজারকে প্রতিহত করা গেলো..কিন্তু প্রতিদিন যে নতুন নতুন ইভ টিজার জন্ম নিচ্ছে..তাদের কি হবে???
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×