***বর্ষা*** :হাদি ভাইয়া,কেমন আছেন?
আমি## (হাদি) ভালো
** সত্যি?
# হুম । তুমি?
**ভালো না? মরে যেতে ইচ্ছা করছে ।
# হুম, তা কিভাবে মরবা বলে ঠিক করেছে?
**ভাইয়া আমি কিন্তু সিরিয়াস
# আমিও সিরিয়াস
**ধ্যত ! আচ্ছা বাই ।
#::ওকে
{{ ধুর, মনটা আরও বেশি খারাপ হয়ে গেল । মেয়েটার সাথে এমন rude ব্যবহার না করলেও পারতাম । কিন্তু আমার মন ভালো না থাকলে কারো সাথে কথা বলতেই ভালো লাগে না }}
এবার বলি আমার বর্ষার সাথে আমার পরিচয় কিভাবে হলো ।
গত সপ্তাহে আমার মন অনেক খারপ । বড্ড একা একা লাগছিলো । একদিন সুমন বললো প্রেম কর সব ঠিক হয়ে যাবে ।
আমি বললাম : কে প্রেম করবে আমার সাথে ?
সুমন : আমার একটা ছোট বোন আছে
আমি : তোর আবার আবার ছোট বোন হলো কিভাবে?
সুমন : আরে ফেসবুকের বোন । চরম **ল ।
আমি :: {না ভেবেই বললাম} পারলে দে ।
এভাবেই আমার বষরআর সাথে পরিচয় ।
কিছুক্ষণ পরই আবার বর্ষাকে নক করলাম
♂ ::কি করো?
** ভর্তা বানাই ।খাবেন? বিষ মাখা ভর্তা
# আমার ক্ষুধা নেই । তুমি খাও ।
** আমিতো খাবোই
# এবার বল মন খারাপ কেন?
# আপনাকে বলবো কেন ?আপনি আমার কে?
{{বুঝলাম এই মেয়ে সব বলবে ।এই সব অভিমানের কথার অর্থ সে আমাকে বলবে এবং আগ্রহ সহকারে বলবে}}
# ন্যকামু বাদ দিয়ে বল । আমি বেশি বেশি প্যচাল ভালবাসি না ।
** তো আপনি কি ভালোবাসেন?
# কিছু না । বল
** আজ আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে । আমার বয়ফ্রেণ্ড আমাকে মিথ্যা কথা বলে পটিয়েছিলো । আজ যখন সত্য জানলাম তখন ঝগড়াকরে সব শেষ করে দিলাম । জানেন ও না...............
সব কিছু বললো । আমা শুন লাম ।
আজ একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলাম । অন্যদিনের মত ভাবনাগুলো আমাকে আর জ্বালালোনা । একটুতেই ঘুম চলে আসলো । ফজরের আযানের আগেই ঘুম ভেঙে গেল । কেন ভাংলো বুঝলাম না । অন্যদিন ১০ আগে ঘুমই ভাঙেনা । আগে ভাংলে মন খারাপ হই । কিন্তু আজ যেন ভাল লাগছে । কেন ভাল লাগছে । বর্ষার ব্রেকআপ হইছে তাই !! হইতে । মানুষ বড়ই স্বার্থপর । নিজের ভালোর জন্য অনের দুংখে আনন্দ পাচ্ছি । আমি তো এমন না । কি জানি কারও প্রেমে পড়লে মনে হয় এমনই হয় ।
ল্যপটপ টা অন করলাম । ফেসবুবে লগইন করতেই বর্ষার ইস্টাটাস
Meghla Borsa
dhat kichu valo lagcha na. manusk blv korai tik na
Like • • Share • 45 minutes ago via mobile •
23 people like this.
View all 53 comments
massage দিলাম
# এখনো ঘুমাও নি?
** আর ঘুম । প্রেমের জ্বালায় ঘুমাইনি ।
# প্রেমের জ্বালা না ছ্যক খাওয়ার জ্বালা ?
** আপনি অনেক খারাপ । অন্যের কষ্টে সান্তনা তো দিতে পরেন না ঊল্টা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছেন । যান আপনার সাথে কথা নাই ।
{{একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মেয়েরদের সামনে ভাব ধরতে হয় না হলে না হলে তারা ঘাড় চেপে ধরে কিন্তু সে লিমিট ক্রস কললেই বিপত্তি । তখন সব কিছু হারাতে হই । তাই আমি লিমিট ক্রস না করে এবার ভাল মত কথা বলতে লাগলাম }}
# পড়ছো কেমন?
** মন খারাপ কিভাবে পড়বো বলেন?
# ওওও । তোমার ফোন নাম্বার দেও । কথা বলোবো ।
** এইযে । এখন ঘুমাবো । আপনি একটা মিস দেন ঘুম থেকে উঠে কতা বলবো ।
বাই । সুইট ড্রিম
# u to0
১১ টার দিকে বর্ষার ফোন আসলো ।
# কেমন আছ ?
** ভালো । জানেন আজ না...................
বর্ষা এমন ভাবে কথা বললো যেন আমি ওর অনেকদিনের চেনা । আমার সাথে ফ্রিলি কথা বললো । আমার প্রথমে অস্থি লাগলেই কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে গেলাম । এর পর অনেক কথা বললাম ।
বিকেলে আমি ফোন দিলাম ।
# কি করছো?
** কফি বানালাম ।
## আমাকে দেও আমিও খাই ।
** কিভাবে দিব? চলে আসেন তাহলে ।
# না । দেও আমি মনে মনে খাব ।
**ওকে । মনে মনে শুধু আমার দেওয়া কফিই খাবেন । আমার অন্য কিছু খাবেন না ।
# আচ্ছা । {{ প্রথমে আমি কথার মর্মার্থ বুঝতে পারিনি কিন্তু যখন বুঝলাম তখন অবাক হলাম । ও এই সব কথা কিভাবে fluently বলছে ভেবে }
{{ আজ আমি আমার বর্ষার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি । আমার dream girl বর্ষা । আজ রাতে ঘুমাতেই পারিনি । শুধু ওর কথা ভেবেছি । ওকে শুধু ফেসবুকের ছবিতে দেখেছি । আজ সরাসরি দেখবো । অন্য রকম অনুভুতি }}
# বর্ষা না?
** হাদি?
# হুম । কখন আসলা । এইতো । {{ ইতি মধ্যে ও তুমি বলা শুরু করেছে}}
** চল বসি
# চল
{{ লক্ষ্য কললাম এই বর্ষা আর ফেসবুকের ছবির বর্ষার মাঝে অনেক পার্থক্য । ওখানে পরী আর তুলনায় বাস্তবে পেতনী । ধুর মনটা খারাপ হয়ে গেল । ওকে বুঝতে দিলামনা । তার পরও অনেক রাগ হচ্ছিলো । মিথ্য বলে ওর কাছ থেকে চলে আসলাম }}
# বর্ষা শোন । আমার একটা জরুরি কাজ আছে এখনই যেতে হবে । sorry বলেই চলে আসলাম ও আমাকে ডাকলেও ফিরে তাকাই নি ।
{{ নিজের ওপর অনেক রাগ হলো । আবার বর্ষার ওপর ও । আমার সাথে এমন না কললেও পারতো । রিয়েল ছবিগুলো দিলে কি হত ,ফটোশপট ছবি গুলো না দেখালে কি হত ।ফোন অফ করে ঘুমাতে গেলাম । সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো । ফোন অন করতেই বর্ষার ম্যসেজ । '' জানু কি হয়েছে? তুমি কি ঝামেলাই পড়েছে । আমাকে বল । অনেক চিন্তা হচ্ছে'''
ধুর বলে ফোন টাকে ছুড়ে মারলাম । ব্যাটারি একপাশে আর ফোন আরেকপাশে পড়লো ।
ছাদে গেলাম ।সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছাদে যাওয়া অভ্যাস হয়ে গেছে । ওর জন্যইতো । সব দোষ বর্ষার । ওর নাকি সূর্যদোয় দেখতে খুব ভাল লাগে । আজ দেখি সূর্যটা মেঘে ঢাকা । আমার সাথে তারও মন খারাপ । তার নয়নও আজ অশ্রূসিক্ত । হঠাৎ মনে পড়লো বর্ষার সেই কথা
**''' সূর্য ধ্রূব । সে কখনো হারাইনা । সে সারা পৃথীবীকে আলো দেয়ে । তুমি আমার জীবনের সূর্য তোমায় ছাড়া আমার জগৎ অন্ধকার । বল তোমাই ছাড়া আমি বাচবো কি করে ''
ধুর । ওর এসব কথা শুনেই তো পটেছিলাম । ওর জন্য প্রতিদিন সকালে ওঠে সূর্যদয় দেখতে হই । যদিও ভালই লাগতো সকালের আবহাওয়া । তাহলেতো সূর্য আমার জন্য নয় তার বর্ষার জন্য এমন মেঘলা । তার বন্ধুর জীবনের সূর্য হারনোর বেদনায় মেঘলা । মন আবার খারাপ হয়ে গেল । একটু সহানুভুতি জন্মালো ওর ওপর । বাহ্যিক সোন্দর্যের উপর মানুষের তো হাত নেই । আবার রাগ হলো । তাহলে কেন আমাকে ধোকা দিল । ধুর ওই মেয়ে কে ক্ষমা করবো না । এবার দেখা করে ওকে সব বলে দিব । সব রিলেশন মিটিয়ে দিব }}
৩ দিন পর ফোন অন করলাম । বর্ষার ম্যসেজ ''' হাদি, তুমি কি আমার ওপর রাগ করেছো ? আমি কোন ভুল করে থাকে বল । আমাকে শাস্তি দেও কিন্তু প্লিজ আমাকে avoid করনা । তুমি জান না তুমি ছাড়া আমার পৃথীবী অন্ধকার । তুমি জান না তুমি আমার সূর্য । এই অন্ধকারে আমি বাচবো কিভাবে বল...........
ম্যসেজটা পড়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল । সত্যিতো মেয়েটার কি দোষ । ও তো আমাকে মিথ্যা বলেনি । সে হইতো আমার dream girl এর চেয়ে একটু শ্যমলা । একটু কম সুন্দর । কিন্তু এর ওপরতো তার হাত নেই । নিজেকে অপরাধী মনে হল ।
আবার মনে হল না ওরই তো দোষ । ওই কেন রিয়েল ছবি আপলোড করলোনা । ওকে কিছুতেই ক্ষমা করবো না । না । কালকেই বলে দিব । আমাদের মধ্যে যা হয়েছে সব শেষ । শুধু আর একটা দিন ।
সাথে সাথে ওকে ফোন করলাম । বললাম কাল তোমার সাথে দেখা করবো । ৮ টার দিকে পদ্মার ধারে আস । ওদিক থেকে কোন কথা শুনলাম না । শুধু বুঝলাম বর্ষা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে ।
মনে মনে বললাম মেয়ে কেদে লাভ নাই কাল আরও কাদবে কিন্তু আমাকে পাবেনা ।
পরদিন>>>
৮ টাই ২ জনের দেখা হল । একদিকে ঘাসের ওপর পাশাপাশি বসলাম । কেউ কোন কথা বললাম না । আমি ওর দিকে তাকাতে পারছি না । কিভাবে শুরু করবো বুঝে উঠলাম না । হঠাৎ বর্ষার দিকে তাকলাম । ওকে শেষবারের মত দেখার জন্য । কিন্তু অবাক হলাম । ওর সাদা রংয়ের টিপটাতে ওকে অসম্ভব মানিয়েছে । একটা সাদা টিপ পরলেই যে একটা মেয়েকে এত ভাল লাগে আগে লক্ষ্য করিনি । এবার ওর চোখে তাকালাম । অম্মা!! ও চোখে কাজলও দিয়ে এসেছে । সাধারণত শ্যমলা মেয়েদের চোখে কাজল মানাই না । কিন্তু বর্ষাকে একটু বেশি মানিয়েছে । ওর চোখ এত সুন্দর !!! দেখলাম ওর ২ চোখে পানি ছলছল করছে । এই বুঝি কান্নায় ভাসাবে । কিছু বললাম । অপেক্ষা করলাম ও কাদলে দেখে কেমন লাগে । ওর শ্যামলা গাল গড়িয়ে চোখের জল ঘাসে পড়ছে আর তাতে শরৎ এর সকালের সূর্যের আলো চিকমিক করে খেলা করছে । মনে হল সূর্য় বুঝি আর বর্ষার আনন্দে খেলা করছে । ভাবলাম আজ ওকে কেন এত ভাল লাগছে । তাকে ভালবাসি বলেই তার সব কিছু ভাল লাগছে না অন্য কিছু । ভাবনা শেষ হবার আগেই আমার হাত টা ওর হাতের ওপর চলে গেল । বলে বসলাম ''' I love u. i will never let u'''
ও আমার হাতটা ধরে ওর কোলের ওপর রাখলো । এবার ওর কান্না আরও বেড়ে গেল । আর ওর চোখের পানি এক ফোটা এক ফোটা করে আমার হাতের ওপর পড়লো । প্রতি ফোটা আমার মধ্যে অন্যরকম শিহরণ জাগাচ্ছে । ভাবলাম যার হাতের স্পর্শে এত শিহরণ যার চোখে এত মায়া তার চোখে চোখ রেখে হাজার বছর কাটিয়ে দিলে ক্লান্তি আসবেনা ।
আমার চোখে সহজে পানি আসে না। কিন্তু কেন যে আমার চোখেও পানি আসলো । একটু বেশি আসলো ।
আমি বর্ষার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি আর অপেক্ষা করছি কখন এক ফোটা পানি পড়বে আমার হাতে.....আমার মন আন্দোলিত হবে......