somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নয়ন বিন বাহার
তোমাদের এ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। দূরে! বহু দূরে! ঈগল চোখের আড়াল খুঁজে নিচ্ছি- যেখানে সমস্ত পাপী স্বীকারোক্তি দেয় তাদের আকন্ঠ পাপের। অন্তত তারা সত্যের আড়ালে পাপ করে না; পাপ নিয়ে করে না কোন মিথ্যাচার!

চিঠি/০৫

২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাসন্তিকা

তোমার সাথে দেখা হয়েছিল চৈত্রের শেষ দিবসে। মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মাথার উপর দিয়ে এক পাহাড় কালো মেঘ যেতে যেতে আমাকে ভয় দেখিয়েছিল। তোমার মায়ায় আমি সে ভয় জয় করে ফেলেছিলাম প্রায়। কিন্তু চারদিক অন্ধকার করে তুমি চলে গেলে। তোমাকে ছাড়া ভয় জয়ের অপচেষ্টা না করে আমি ডেরায় ফিরে গেলাম। ঠিকমত বিদায়ের আমেজটুকুও নিতে পারিনি। বড্ড অভিমান হয়েছিল।

আজ তোমার ছোটবোন হৈমন্তীর সাথে দেখা হল।
তার আগে দেখা হয়েছিল তোমার ছোট ভাই শরতের সাথে। সে আমাকে কাশফুলের বনে নিমন্ত্রণ করেছিল। যাব না যাব না করে গিয়েছিলাম শেষে। শরতের কান্ড শোন- সে আমাকে কাশের কান্ড চিবুতে দিয়েছিল। শ্রাবনী নাকি তাকে এটা শিখিয়েছে। বেটা কি দড়িবাজ দেখ, শ্রাবনীর এক্সপেরিমেন্ট আমার উপর চালিয়েছে। মেজাজ খিঁচে গেছিল। সামলে নিয়ে বোকার মত দুপাটি দাঁতের নিচে রেখে চিবুতে লাগলাম। কেমন লাগল বলতে পারব না। দেখলাম শরত বেটা মুচকি মুচকি হাসছে।
পাত্তা দিলাম না। এমনিতেই কাশবনে এলে আমার মন সুখী হয়ে যায়। কাশের শুভ্র চূড়ায় যখন বাতাস খেলা করে তখন অপার্থিব লাগে।

বলছিলাম হৈমন্তীর কথা। তার সাথে দেখা হওয়ায় তোমার কথা মনে পড়ে গেল। এত চঞ্চল আর দুষ্টু হয়েছে না, কি বলব। চোখের পলক পড়তেই সে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। ঠিকমত সবার খবরও নেয়া যায় না। তোমার কথা জিঙ্গেস করলাম। কি বলে জান? বলে,‘এত পিরীত ক্যান? আর কটা দিন সবুর করেন, নিজেই দেখতে পাবেন। এখন আমি সামনে আছি, তবুও বাসন্তি, বাসন্তি! বাসন্তিতে কি মধু আছে? শুনি!’ আমি হতবাক হয়ে গেলাম। এতটুকুন মেয়ে, কি কথার ছিরি!

আমি স্তব্ধ হয়ে রইলাম। বুঝলাম, কান দিয়ে গরম হাওয়া বেরুচ্ছে। কঠিন কিছু কথা শুনাব বলে মনস্থির করলাম। দেখি সে নেই। সামনে শীতু দাঁড়িয়ে আছে। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হৈমন্তী কই? তার সাথে আমার হিসাব আছে। শীতু বলল, কি হয়েছে ভাই? তাকে বললাম ঘটনাটা। সে বলল, আপনি বরং বাসন্তিকে বলুন। আরেকটু হেঁটে গেলে তাকে পাবেন। হৈমন্তীকে একমাত্র বাসন্তিই সামলাতে পারে। ও একটা বদের হাড্ডি। আচ্ছা ভাই, আপনার সাথে বৈশাখীর দেখা হয়? বৈশাখীর নাম বলতেই তার চেহারা রাঙা হয়ে উঠল। বুঝলাম, ঘটনা আছে। বললাম, কি হয়েছে বল। -না ভাই, কিছু হয়নি। এমনিতেই জিজ্ঞেস করলাম। আপনিতো পরিব্রাজক, তাই ভাবলাম তার সাথে হয়তো আপনার দেখা হতেই পারে। বৈশাখীর মেজাজটা একটু কড়াতো তাই, কখন রাগে আর কখন হাসে বুঝাই যায় না। তাই ভাবলাম, আপনার কাছে যদি কোন খবর থাকে।

কি এক ফ্যাসাদে পড়লাম বলতো। এই বেটাকে হৈমন্তির কথা জিজ্ঞেস করলাম। বেটা পড়ল বৈশাখীরে নিয়ে। এদিকে শরতটা আমাকে দিয়ে যাচ্ছেতাই করাল, হৈমন্তীতো বড়ই রহস্যময় আচরণ করল আমার সাথে।

এদের প্রত্যেকের খামখেয়ালিতে আমি বড্ড নড়বড়ে হয়ে গেছি, বাসন্তি। তোমার আর কত দেরি? আমি পথে নামলাম, এস তাড়াতাড়ি।

ইতি,
তোমার হাওয়াই
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২০ রাত ১১:১১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×