যেখানে আমার জন্ম, যেখানে আমার বেড়ে ওঠা,
সেখানে ছিল এক বিরাট পাকুড় গাছ।
পাকুড় গাছ ছাড়াও ছিল কিছু সাধু, সন্নাসী (অন্তত তারা
নিজেদেরকে তাই মনে করত)
দুয়েকটা জন্তু জানোয়ারও ছিল। আমি তাদেরকে চিনতাম।
আমি তখন চেনার বয়সে পড়েছি।
এইসব দেখতে দেখতে, চিনতে চিনতে রোজ পানি আনতে যেতাম।
গত বর্ষা থেকে বাবা হাঁটতে পারেন না। মা’র মুখ মনে নেই।
আমি ভাল হাঁটতে পারি। দৌড়ানির প্রস্তুতিও নিচ্ছি ধীরে ধীরে।
আমি জানতাম একদিন আমাকে দৌড়াতে হবে।
খুব করে দৌড়াতে হবে। আমি যে শুধু দৌড়ানি খাওয়ার
প্রস্তুতি নিচ্ছি, তা নয়, দৌড়ানি দেওয়ারও প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম!
তারা যখন আমাকে দেখে, আমি তাদের দিকে না তাকিয়েও-
বুঝতে পারি, তারা কি দেখে। বুঝতে পেরে আমার পুলক হয় না।
অথচ তখন আমার পুলকিত হওয়ার বয়স।
একদিন বাবা বলেছিল,‘মাঠে যে গরুটা দেখছ, ওটা স্রেফ একটা পশু,
কিন্তু কিছু মানুষ দেখবা শুধু মানুষ নয়; পশু!’
বাবার সাথে আমার মতের বহুত অমিল ছিল-
‘শোন মা, তুমি একজন মেয়ে, এটা সবসময় মাথায় রাখবা।’
বলেছিলাম,‘মেয়ে কেন বাবা? মানুষ নয় কেন?
তুমি কেন বলনি, আমি একজন মানুষ।’
বাবা জবাব দিতে পারেনি।
হয়ত সব প্রশ্নের জবাব বাবাদের কাছে থাকে না!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:৫২