somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উদ্ভ্রান্তের পথচলা

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রায় এক বছর হয়ে এল আমার প্রবাস জীবনের। দীর্ঘ এই পথ পরিক্রমার মাঝে আমার যে অভিজ্ঞতা তার পরতে পরতে মিশে আছে আনন্দ কিংবা বেদনা। কিন্তু আজ এসব নিয়ে কথা বলবনা। সেসব অন্য দিন হবে আশা করি।
কিছুটা নিঃস্বার্থ ভাবেই মাঝে মধ্যে মানুষ কে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে থাকি যাতে অযাচিত কষ্ট গুলো তাদের পেতে না হয়। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে যখনি মানুষের কোন সমস্যা চোখে পড়ে তখনি খুঁজতে থাকি কোন সমাধান। মুটামুটি ইউরোপ এর প্রতিটি দেশ নিয়ে এত বেশি ঘাটাঘাটি করেছি যে প্রায় সকল সমস্যার সমাধান দেয়ার চেষ্টা করি যাতে কিছুটা মঙ্গল সাধন হয়, সাধারন এর কিছুটা উপকার হয়। প্রথম প্রথম যখন লিখতাম কিংবা কমেন্ট করতাম কোন সমস্যায়, হঠাৎ ই অনেক বন্ধু হবার আবেদন চলে আসত। অবশ্য অবাক হতাম না। তাদের সাহায্য করতে লাগলাম আবেদন গ্রহন করে। কিন্তু বিধিবাম। তাদের সাহায্য করতে গিয়ে একটা সময় উপলব্ধি করলাম অনেকেই আসলে শুধুমাত্র জানবার স্বার্থে চেষ্টা করছেন, আসবার ইচ্ছা অধিকাংশ মানুষের ই নেই। আমার তাও তথ্য দিতে সমস্যা ছিল না, কিন্তু তাতে সময়ের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন হত বিধায় আমি নিজেকে ধীরে ধীরে নিবৃত্ত করি। আগে আবেদন গ্রহনের পূর্বে তাদের অনুরোধ করি পুরো সমস্যাটি লিখতে। কিছু ব্যক্তি সমস্যা লিখতেন ও। যেমন এক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী বললেন তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শেষেই বিদেশে পাড়ি জমাতে চান। উনি রাস্তা খুঁজছেন। আমি বললাম আপনি অনেক কম বয়সি। আপনি কষ্ট করে দেশে স্নাতক সমাপ্ত করুন একটি ভাল ফলাফল নিয়ে। এরপর আপনি আবেদন করলে স্কলারশিপ মিলবে। কিন্তু কে জানত উনার দরকার টাকা এবং যেকোনো মুল্যে বিদেশ আসা। আমি বললাম আপনি আসলে তখন আরও বিপদ হবে কারন পর্যাপ্ত শিক্ষা ব্যতিত কাজ কিংবা চাকরি কোনটাই স্থায়ি নয়। এবং অবশ্যই দেশের নাম উজ্জ্বল করতে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। এরপর আর দুএকদিন কথা চলল। শেষ পর্যন্ত আমার তকমা মিলল আমাদের মতন কিছু মানুষ দেশের মানুষের ভাল চায় না। তারা বিদেশ আসতে দেয়না। মজার কথা, আমি বা কে হে আপনার প্রবাসে আসা ঠেকায়।
সব সময় আমি মানুষকে উৎসাহ দেই আপনারা যে কাজ ই করুন, দয়া করে পড়াশুনা প্রবাস জীবনে ছাড়বেন না। কারন টাকা সাময়িক থাকবে, কিন্তু শিক্ষা থাকবে আজীবন। অতএব দেশ ও দশের উন্নতিকল্পে তাদের কখনও আমার কথা ভাল লাগে কখনও লাগেনা। তবে মজার ব্যাপার কাউকেই আমি ডেকে ডেকে তথ্য দেইনা। শুধুমাত্র আমার কাছে আসলেই আমি জানাই। কিন্তু আপনার যদি আমার কথা পছন্দ না হয় তবে খারাপ কথা কেন ভাই? কিংবা দিনের পর দিন তথ্য নিয়ে শেষে "ধন্যবাদ ভাই কিন্তু আমি আর উৎসাহিত না" টাইপ কথা বলার আগে একবার আমাদের সময়ের মুল্য টা বুঝলে হত না? আমি আরও মজার তথ্য দেই। কিছু দিন এরকম চলার পর এক বড় ভাই কে বললাম। ভাই বলল, নিজে নিজে আবেদন করবে এবং যেখানে তুমি মনে করবে তুমিও আটকাতে পারতে ওখানেই সাহায্য করবে। কারন অনেক বাজে লোকের ভিড়ে ভাল মানুষ সাহায্য পান না।
একটি ঘটনা ঘটে গত সপ্তাহে যার কারনে এই লেখার অবতারনা। এক পোস্টে কমেন্ট করার দরুন আবার এক গাদা বন্ধু আবেদন। কিন্তু ন্যাড়া একবার বেলতলায় যায়, আমি দু তিন বার গেছি। ত আগে ই জিজ্ঞাসা করলাম কি ভাই কি ব্যাপার, কে আপনি? উত্তর এল ভাই আমি অমুক দেশে আসতে চাই কি করব। আমি বললাম কি পাস করেছেন বা কি নিয়ে পরছেন। তিনি উত্তরে জানালেন উনি উচ্চ মাধ্যমিক এ ফেল করেছেন, এখন উনার ভাই এর সার্টিফিকেট জাল করে নিজের নামে চালিয়ে পরবাসে আসতে চাইছেন। আমি কিছু বলতে চেয়েও পারিনি। শুধু বললাম ভাই আরেকবার পরীক্ষা দেন দয়া করে, আমি লাগলে সাহায্য করব। উনি জানালেন উনার অমুক ভাই তমুক ভাই মিলে পাসপোর্ট পর্যন্ত ভাই এর নাম দিয়ে বানিয়ে দিয়েছে। উনার ভাই কি করেন খোদা ই জানেন।
তো উনি শেষ পর্যন্ত জানালেন উনি এই জাল জিনিসপত্র দিয়ে বিদেশ আসতে চান এবং এমব্যাসি ফেস করতে চান। আমি উনাকে বললাম, ভাই ধরা ত খাবেন ই সাথে দেশের মান ইজ্জত ও ডুবাবেন। কেন এরকম করতে চান ভাই? আর উত্তর নেই। এরপর একগাদা বাজে কথা, আমি অমুক তমুক এই সেই। এই যাত্রায় আরও কিছু অপবাদ পেলাম।
মাঝে মাঝে মনে হয় আমার দেশের সোনার মানুষ গুলো হারিয়ে গেছে। আর কি ফিরে আসবে ওরা, যারা আমাদের চরিত্র গুলো কে সুগঠিত করে মানুষ করার কারিগর রুপে আত্মপ্রকাশ করবে। এইসব ঘটনা আমাকে বুঝিয়ে দেয়, না আমরা দিন দিন বিভীষিকার অন্তরালে আত্মগোপন করে চলেছি।
আসুন দেশ কে ভালবাসি। দেশের নাম উজ্জ্বল করি। মাথা অবনত করে লজ্জা হারিয়ে নিজেদের সম্মান কেন বিসর্জন দেব।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×