১০ বার নয়, ১০০বার নয়, মাত্র ১বার বলুন/করুন...
৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ৩টায়
শেয়ার করুন:
সামুর অন্য একটি ব্লগে শিরোনামের বিষয়টি নিয়ে একটু আলাপ করেছিলম নাজনীন আপুর একটি মন্তব্যের উত্তরে। আজ আর একটু বাড়িয়ে লিখতে চাইছি...
আমার এই লেখা শিশুদের জন্য কিন্তু বড়রা পড়বে ও মানবে। আমাদের অনেকের ঘরে বিভিন্ন বয়সের শিশু আছে। ওদেরকে আমরা অবশ্যই অনেক ভালোবাসি। প্রানের চেয়েও বেশি! কিন্তু আমরা বড়রা শিশুদের সাথে অনেক অন্যায় আচরণও করি। আর হয়তো কোন কোন আচরণ একটি শিশুর জন্য মারত্নক ক্ষতিকরও হয়ে থাকতে পারে। আমরা অবশ্যই জেনে বুঝে করিনা। আমাদের জ্ঞানের অভাবেই এটি করি। (শিশুদেরকে নিয়ে আমার আগেও একটি লেখা ছিলো। সেটি এটি: শিশুর সাথে কখনই এই কাজটি করবেন না...)
যাই হোক, এবার আমি যেটা বলতে চাইছিলাম যে, আমরা বড়রা অনেকেই মনে করি শিশুর শিক্ষা স্কুল থেকে শুরু হবে। তার আগে শুধুই হেসে খেলে বড় হওয়াই ভালো। অবশ্য কেউ কেউ আর একদম উল্টাটা করি। শিশুকে একদম খেলার সময় না দিয়ে, জগতের নানা জ্ঞানে জ্ঞানী করতে থাকি। আমরা অনেকেই শিশুকে অধিকাংশ সময় এইভাবে শেখাই:
- সুনাতা, আন্টিকে সালাম দাও। বল, আসসালামু আলাইকুম।
আবার বিদায় দেবার সময় হয়তো বলি:
- সুনাতা, আন্টিকে আবার আসতে বলে দাও।
ইত্যাদি ইত্যাদি (আমি খুবই ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলাম।)
আমরা অনেকেই এই পদ্ধতিতে বাচ্চাকে শেখাবার চেষ্টা করি কিন্তু নিজেরা অনেকেই পালন করিনা। মানে নিজেরাই সালাম দেইনা কিন্তু বাচ্চাকে দিতে বলি, নিজেরাই অনেক ডিসিপ্লীন মেনে কাজ করিনা কিন্তু বাচ্চাকে করতে বলি।
অথচ, বাচ্চাকে ভালো কিছু শেখাবার জন্য ১০ বার নয় ১০০ বার নয় মাত্র ১বার একটি ভালো কাজ ওর সামনে করলেই হয়। ব্যাস! সত্যিই বলছি, প্রয়োজনে আপনি সকল ভালো কাজগুলি আপনার বাচ্চাকে দেখিয়ে দেখিয়ে করুন, কাজটি করার সময় তাকে দেখার সুযোগ করে দিন, কাজটি করার সময় সে প্রশ্ন করে বিরক্ত করবে (কারন সব কিছুই তার অজানা ও প্রচন্ড আগ্রহ) তার সকল প্রশ্নের উত্তর দিন। যদি দেখেন সে আপনার ভালো কাজটির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে তবে এই সুযোগে বাড়তি কথা বলুন তার সাথে কাজটি নিয়ে। কাজটি সম্পর্কে কিছু তথ্য দিত তাকে। সে মনে রাখতে পারবে কি পারবে না প্রতিটি কথা বুঝতে পারছে কি পারছেনা এতো গভীর চিন্তা না করলেও হবে। যাষ্ট একবার করুন তার সামনে। একই ভাবে ভালো ভালো আচরণ তার সামনে করুন। (একই ভাবে আপনার খারাপ স্বভাব বা যা দেখলে শিশু বিভ্রান্ত হতে পারে তা তার সামনে করবেন না।)
অফিস যাবার সময় কিছু পিতাকে বলতে শুনেছি যারা তার পুত্র/কন্যা সন্তানকে বলছে, "আম্মুকে বিরক্ত করবে না, আম্মুর কথা শুনবে, তোমরা তোমার আম্মুক ঘরের কাছে হেল্প করবে।" ইত্যাদি ধরনের। কিন্তু দেখা যায়, এই পিতাগুলির অনেকেই তার সেই স্ত্রীকে ঘরের কাজে সাহায্য করেনা না। অথচ একজন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে ঘরের কাজে সাহায্য করেন তবে তার সন্তান সেটি অবশ্যই দেখবে এবং শিখবে যে সেটাই করা উচিত। শিশুটিকে আলাদা করে বলার দরকার নেই। শিশুর ভেতর শিশু সুলভ অনেক আচরণতো থাকবেই। না শুনবার প্রবনতাও থাকবে। কিন্তু তারপরও শিশুকে ভালোকিছু শেখানো কঠিন কাজ নয় বরং একটু ধৈর্যের কাজ। আমরা নিজেরা পালন করার মাধ্যম্যে শিশুকে সহজে শেখাতে পারি।
বড় লেখা অনেকেই পড়েন না, তাই বড় করছিনা। আশা করি অনেকে বুঝতে পেরেছেন আমার বক্তব্য।
নজরুল ইসলাম
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



