somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা most ফালতু সিনেমা(মেজাজ খারাপমূলক রিভিও পোষ্ট)X((X((

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কিছুদিন যাবত খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি। ব্লগে বসা হয়না,টিভি দেখা হয়না,নতুন কোন সিনেমাও দেখা হয়না অনেকদিন। আজ একটু ফ্রী হলাম,ভাবলাম একটু সিনেমা টিনেমা দেখি।যেই ভাবা সেই কাজ,ভার্সিটি থেকে ফেরার সময় নিয়ে আসলাম অক্ষয় এর লেটেস্ট ‘তিস মার খাঁন’।আমার দেখা সবচেয়ে বাজে ফিল্ম।নেহায়েত ৮০ টাকা খরচ করে ডিভিডি টা কিনেছিলাম বলে বসে বসে ছবিটা গলধঃকরন করতে হলো। না হলে ছিঃ !!!!:((:((
যা হোক আপনারা অনেকেই হয়তো সিনেমাটা দেখেছেন,যারা দেখেননি তাদের জন্য কাহিনী নিন্মরূপঃ

কাহিনী শুরু হয় অক্ষয় কুমার ওরফে আক্কি ওরফে তিস মার খাঁনের মায়ের টিভি দেখার দৃশ্য দিয়ে। খান সাহেবের মা বসে বসে টিভি দেখছেন।টিভিতে চলছিলো চুরি আর মারামারির দৃশ্য।বেচারা খান সাহেবের তখনো জন্ম হয়নি,মায়ের পেটে বসে টিভি দেখতে দেখতে রপ্ত করছিলো চুরি আর নাচানাচি বিদ্যে (বাহ!একেই বলে ডিজিটাল দুনিয়া)।আর সিনেমা দেখতে দেখতে খান সাহেবের মা স্বপ্ন দেখছিলেন তার ছেলে বড় হয়ে বিরাট এক ফিল্ম ডিরেক্টর হবে(হাতের মোয়া আর কি!চাইলেই হয়ে যাবে!!যত্তসব!):-*:-*
এই হল শুরুর কাহিনী,তারপর আর কি! তিস মার খানের পদধূলি পড়লো এই ধরায়।তবে জন্মানোর পরপরই ডাক্তার আর নার্সের ঘড়ি ও চেইন চুরি করে তিনি প্রমান করে দিলেন,চুরি বিদ্যায় তিনি খাঁনের খাঁন-তিস মার খাঁন!!
দিনে দিনে তিস মার খান বড় হলেন এবং চৌর্যশিল্পে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করলেন।আর মাকে বললেন তিনি একজন নামকরা ফিল্ম ডিরেক্টর হয়ে গেছেন। মা বেচারী তো মহাখুশী।
এদিকে শহরের সব পুলিশদের নিয়ে মিটিং এ বসেছেন পুলিশ কমিশনার।জহুরী ব্রাদার্স(এই ছবির ভিলেন,তারা আবার জরোয়া ভাই)দ্বারা চুরিকৃত ১০ হাজার কেজি এ্যান্টিক মালামাল(এতগুলা কিভাবে চুরি করলো আল্লাহই জানে!!)উদ্ধার করার পর তা পাঠানো হবে দিল্লীতে,কিভাবে পাঠানো হবে তাই নিয়ে চলছে আলোচনা।এ সময় খবর এলো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট চোর (!!)তিস মার খান তার ফ্যানদের অটোগ্রাফ দেয়ার সময় প্যারিসে পুলিশের হাতে ধরা পরেছেন(চৌর্যবৃত্তিতে পারদর্শিতার জন্যই অটোগ্রাফ নেয়া হচ্ছিলো কিনা তা জানা যায়নি)।

যাক অবশেষে ফ্রান্সের পুলিশ তিস মার খান কে সঁপে দেন ইন্ডিয়ার দুই মারকুটে(মারকুটে না ছাই!) পুলিশের হাতে।কিন্তু বেচারা খান সাহেব শুধু চৌর্যবৃত্তিতেই নয় দুষ্টবুদ্ধিবৃত্তিতেও পারদর্শী।আর সেই বুদ্ধির সহায়তায় এক বিমান বালার ক্লিপ দিয়ে প্লেনের ক্যাপ্টেনের রুমের তালা খুলে দিয়ে হিরো বনে যান,সাথে নিজের হাতকড়িও খুলেন(আরে ব্যাটা ক্লিপ দিয়েই যদি হাতকড়া খুলতে পারিস তো এত্ত ঢং করার কি দরকার ছিলো??!!)আর সেই পুলিশ দুজন বাধা পরেন প্লেনে(এরা যে কি করে পুলিশ হয় বুঝিনা,যত্তসব গাধার দল!)X((X((

এদিকে বেচারা খান সাহেব দেশে ফিরেই চলে যান আন্না ওরফে শিলা ওরফে ক্যাটরিনার কাছে।ম্যাডাম শ্যুটিং করছিলেন ‘শিলা কি জাওয়ানি’ নামক ছবিতে।ব্যাস খান সাহেব সেখানে পৌছামাত্রই শুরু হয়ে গেলো ম্যাডাম আন্না আর খান সাহেবের নাচানাচি পর্ব।অন্যদিকে তিস মার খান কে খুজতে বাসায় চলে আসে পুলিশ।যথারীতি খান সাহেবের মায়ের ধোলাই খেয়ে পালাতে হয় পুলিশ বেচারাদের।/:)/:)
পুলিশের কাছ থেকে নিজেদের মালামাল উদ্ধার করার জন্য জহুরী ব্রাদার্স ভাড়া করে খান সাহেবকে।অনেক ভেবে চিন্তে খান সাহেব প্ল্যান আটেন যেদিক দিয়ে পুলিশের ট্রেন মালামাল নিয়ে যাবে সেখানেই তিনি এক সিনেমার শ্যুটিং করবেন(মিছেমিছি),এবং শ্যুটিং এর সুবাদে গ্রামের লোকদের দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে মালামাল লুট করে নিবে।যে ভাবা সেই কাজ।শ্যুটিং এর জন্য অন্য এক ছবিত সেট থেকে ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি বেশ সুকৌশলে চুরি করেন তিনি,শুধু তাই নয়
ছবিতে অভিনয় করার জন্য সুপারস্টার অক্ষয় খান্না ওরফে অতীশ কাপুর কে কৌশলে রাজী করান;);)।বেচারা অতীশ কাপুর!! সিনেমা সংকটে ভুগছিলো,অস্কারের লোভে কাহিনী না শুনেই অভিনয় করতে রাজী হয়ে যায়।সুপারস্টারের চেয়ে তার অ্যাসিস্ট্যান্টের মাথায় আবার মগজ বেশী ।বেচারা তো প্রথম থেকেই খান সাহেব কে সন্দেহ করছিলো।
শুরু হয়ে গেলো শ্যুটিং।শ্যুটিং এর মাঝখানে খান সাহেব আবার সেই গ্রামের ব্যাংক ও লুট করে নিলেন।কেউ তার টিকিটাও ধরতে পারলো না।তবে ঐ গন্ডগ্রামে ব্যাংক কোথ্থেকে আসলো তা একটা চিন্তার বিষয়!!শ্যুটিং চলাকালে খান সাহেব আবার গ্রামের লোকদেরকে মুন্ডু কাটা ভূতের(অপহরনকারী)হাত থেকে রক্ষা করে,এমনকি অপহরনকৃ্ত কিছু বাচ্চাকেও উদ্ধার করে(যদিও এতে খান সাহেবের প্রত্যক্ষ কোন হাত ছিলোনা,বেচারা তো নিজেই ভয় পেইয়ে গিয়েছিলো! তবুও গ্রামের লোকজন তাকেই হিরো ধরে নিলো):P:P
এভাবেই একদিন শ্যুটিং এর নাম করে গ্রামের লোকদের নিয়ে পুলিশের ট্রেন লুট করে খান সাহেব,লুটকৃ্ত মালামাল নিয়ে রাখে জহুরীদের গাড়িতে।কিন্তু,অমা সেকি!!জহুরীরা দেখি আরো মগজওয়ালা!খান সাহেবেরে পাওনা অংশ তাকে না দিয়েই মালামাল নিয়ে পালায় তারা(চোরের উপর বাটপারি আর কি!)X((X(( খান সাহেবের তো মাথা গরম।এদিকে পুলিশ পৌছে যায় সেখানে ও গ্রেফতার করে খান সাহেবকে(একজন পুলিশ আবার গ্রামের লোকদের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল)।
খান সাহেবের সাথে গ্রামের সব লোকদের আসামী করে আদালতে হাজির করা হয়।কিন্তু খান সাহেব আবার বিরাট দিল দরিয়া মানুষ,সব দোষ নিজের ঘাড়ে চাপিয়ে নেন।অবশেষে গ্রামের লোকদের অনুরোধে জজ সাহেব খান সাহেবকে সাত বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। পরে জানা গেলো দন্ড সাত বছরের না ষাট বছরের(সিক্সটি ইয়ার)!!:P:P
এদিকে খান সাহেবের আদেশে তার তিন অ্যাসিস্ট্যান্ট তার আধুরা কাম পুরা কারনে চালা গ্যায়া।মানে ট্রেন লুটে কাহিনী নিয়ে সত্যি সত্যি এক সিনেমা বানিয়ে ফেলে তারা।হায় আমার কপাল!! সেই ছবি আবার অস্কার ও জিতলো!অন্যদিকে খান সাহেব তার ছবির প্রিমিয়ারে আবারো পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন(বিরাট ত্যাদড় লোক)!শুধু তাই নয় পলায়নরত জহুরী ব্রাদার্স এর প্লেন থেকে লুটকৃ্ত মালামাল পুনরায় লুট করেন,এবং জহুরী ব্রাদারদ্বয়কে প্লেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।কিন্তু ঐ যে আমি বললাম খান সাহেব বিরাট দিল দরিয়া মানুষ তাই তিনি জহুরীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলার সময় একটা প্যারাশ্যুট ও দিয়ে দেন।
এই হল তিস মার খানের কাহিনী সংক্ষেপ।

আমি বুঝতে পারিনা এরকম একটা ফালতু চিত্রনাটের ছবিতে কি করে অক্ষয় খানের মত একজন অভিনেতা অভিনয় করে আর ফারাহ খান ই বা তা কি করে পরিচালনা করে?! পুরা ছবি ভর্তি অক্ষয় এর ছ্যাবলামি দিয়ে।
এই ছবি দেখার পর আমার এক্টাই চাওয়া আল্লাহর কাছে...
"ঊঠা লে রে প্রভু......উঠা লে......আরে মুঝে নেহি......অক্ষয় আর ফারাহ কো উঠা লে..."X((X((
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:০৩
৫৬টি মন্তব্য ৫৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×