somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভিন্ন কলরেট নিয়ে দু'চার কথা!

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছবি আন্তর্জাল থেকে নেয়া।

বাজারে প্রতিযোগি তৈরিতে সফল হতে না পারার পর টেলিকম রেগুলেটর বিটিআরসি একটা জায়গায় এসে অভিন্ন কলরেট করার যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে, এতে অনেক গ্রাহকই আহত হয়েছেন। আবার খুশীও হয়েছেন অনেকে।

ব্যক্তিগতভাবে আমি এর প্রভাব আঁচ করতে পারিনি। কারণ আমি একটি অপারেটরের বান্ডেল প্যাক ইউজার। ৪৯১ টাকায় ৬০০ মিনিট টক টাইম, ১০০ এসএসএম আর ৪ জিবি ইন্টারনেট পাই। এটা দিয়েই আমার মাস চলে যায়। অভিন্ন কলরেটের প্রভাব এই প্যাকেজে নাই।

তবে অসুবিধাও হয়েছে অনেকের। আমার আম্মা যেটি, বলছিলেন- তিনি গ্রামীণফোনের ১০৯ টাকার প্যাকেজ খরিদ করতেন। এতে বেশ সুবিধাই ছিল । এখন তার খরচা বাড়িয়েছে অপারেটরটি। তাই ১০৯ টাকায় কাজ হচ্ছে না। এ প্যাকও নেই।

আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও এফএনএফ সুবিধা উপভোগ করতেন, সেটি এখন আর নাই। এতে তাদের খরচ বেড়েছে।

রেগুলেটর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এ দিকটা মাথায় রাখছে বলে মনে হয় না। যদি রেগুলেটর ইন্টারকানেকশন ফি রাখতে পারে, তাহলে তার এফএনএফ সুবিধাটাও জায়েজ করে দিতে পারতো। এটা না করার কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে।

আমরা লক্ষ্য করেছি, তুলনামূলক বাজার ব্যবস্থায় অপারেটররা নিজেদের মধ্যে এফএনএফরে বাইরে ভিন্ন অপারেটরেও এফএনএফ সুবিধা দিচ্ছিলো। বাজারে একটা ভেতরে ভেতরে প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছিল। তবে একথা সত্য টেলিকম বাজারে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড শুরু থেকেই ছিল না। না থাকার সে দায়টা কার? সেটিও নির্ণয় করা দরকার।

রেগুলেটরকে উদ্ধৃত করে খবরের কাগজগুলোর বয়ানে বলা হচ্ছে, বহু প্যাকেজে বিভ্রান্ত গ্রাহককে একটা সহজ সমাধানে নিয়ে এসেছে, অভিন্ন কলরেট। এর সাথে আমার দ্বিমত নই।

তবে খরচাটা আরেকটু কমানো দরকার ছিল। এটি যদি ফ্লোর প্রাইস ৫০ পয়সা না করে আরেকটু কমানো যেত। ৩০ পয়সা বা ৪০ পয়সা তাহলে ঠিক সুবিধা হতো। সেটি সুবিধাটা কিন্তু রেগুলেটর এখনো নিশ্চিত করতে পারে।

রেগুলেটরের যুক্তি অবশ্য আমি নাকচ করি না। তারা বলত চাইছে, আমরা যে বক্তব্য পাচ্ছি সেটি কেবল ২৫ পয়সা মিনিটে কথা বলা নিয়ে। কিন্তু অফনেট কল করার জন্য যে এক টাকা বা তারো বেশি চার্জ করা হতো, সেটি কিন্তু কেউ বলছেন না। আমরা বাজার অ্যাসেস করে এক সুষম কলরেট ঠিক করেছি। গ্রাহকরা সহসা এর উপকার সম্পর্কে বলবেন।

অভিন্ন কলরেটর পক্ষে থাকা অপারেটরদের যুক্তি অভিন্ন কলরেট চালুর আগে অপারেটর ভেদে অন-নেট কলের মিনিট প্রতি গড় মূল্য ৩৫ থেকে ৫৩ পয়সা। অফ-নেটের ক্ষেত্রে মিনিট প্রতি ৮৫ পয়সা থেকে ১ টাকা। সব অপারেটরের গড় কলরেট বিবেচনায় আনলে অন-নেটের গড় মূল্য মিনিট প্রতি ৪৯ পয়সা এবং অফ-নেটে ৯১ পয়সা।

বাজার প্রতিযোগিতায় নিজস্ব ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ হিসাবে প্রত্যেক অপারেটরের ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজ দিতো। যেমন কোন প্যাকেজে অন-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্য ৫০ থেকে ৬০ পয়সার উপরে। আবার কোন প্যাকেজে অফ-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্য ১ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১ টাকা ৪০ পয়সার উপরে। অর্থ্যাৎ অন-নেট ও অফ-নেট কলের মূল্য পার্থক্য থাকার কারণেই এই রকম প্যাকেজ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। এতে করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অফ-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্য অন-নেট কলের মিনিট প্রতি মূল্যের প্রায় ৩ গুণ।

একজন সাধারণ গ্রাহকের জন্য এই ধরণের মোবাইলফোন সেবা ব্যবহার করা কঠিন। এর ফলে দেখা যায়, আমরা গ্রাহকরা সব সময় অন-নেট কল করতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। গড়ে প্রতি মিনিট কলের জন্য গ্রাহকের খরচ হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ পয়সা। অন-নেট এবং অফ-নেট নির্বিশেষে কলের একক মূল্য মিনিট প্রতি ৫০ পয়সা নির্ধারণ করায় বর্তমান বাজারের গড় অন-নেট মূল্য থেকে কম এবং অফ-নেট কলের মূল্য থেকে আরো অনেক কম।

বিটিআরসি বলছে অভিন্ন কলরেটর চালুর আগে একজন গ্রাহক তার ১০ টি কলের ৮ টি করতেন অন-নেটে। বাকি ২ টি অফ-নেটে। এই অন-নেট কলের আধিক্য হওয়ার একমাত্র কারণ হল, অন-নেট ও অফ-নেট কলের মূল্য পার্থক্য। একক মূল্য নির্ধারণ করা হলে অন-নেট ও অফ-নেট উভয় ধরণের কলেরই মিনিট প্রতি মূল্য কমেছে।

যা-ই হোক না কেন প্রযুক্তি সেবা মূল্য নির্ধারণে সরকারকে আরো যাচাই করা উচিৎ। যাতে করে বাজার প্রতিযোগিতার সুফল গ্রাহক পেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×