somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কবিতা রহস্য সৃষ্টি না করে আসঙ্গলিপ্সার কথা বলে- আল মাহমুদ

২৩ শে জুলাই, ২০১০ সকাল ৮:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার কবিতা রহস্য সৃষ্টি না করে আসঙ্গলিপ্সার কথা বলে- আল মাহমুদ

বাংলা কবিতা যাঁদের হাত ধরে আধুনিকতায় পৌঁছেছে, আল মাহমুদ তাঁদের অন্যতম। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর লেখালেখির সূচনা পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'লোক লোকান্তর' প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে। ১৯৬৬ সালে প্রকাশ পায় 'কালের কলস' ও 'সোনালী কাবিন'। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো', 'দোয়েল ও দয়িতা', 'দ্বিতীয় ভাঙন' ইত্যাদি। তিনি অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন। লিখেছেন 'পানকৌড়ির রক্ত'-এর মতো গল্পগ্রন্থ এবং 'উপমহাদেশ'-এর মতো উপন্যাস। আল মাহমুদের কিশোর রচনাও কম নয়। তাঁর লেখা 'পাখির কাছে ফুলের কাছে'র মতো কিশোর কবিতার বই বাংলা সাহিত্যে দুর্লভ। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদকসহ আল মাহমুদ দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরস্কার ও সন্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
দৈনিক কালের কন্ঠ এর ২৩ জুলাই ২০১০ শুক্রবার সংখ্যার
শিলালিপির জন্য কবি আল মাহমুদের সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন মাহমুদ শাওন





শিলালিপি : প্রায় চার বছর আগে আমাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আপনি তরুণ কবিদের রচনা সম্পর্কে বলেছিলেন, তরুণদের কবিতা একটা চড়ায় আটকে গেছে। তারা 'আমি'-'তুমি'র বৃত্ত থেকে বেরোতে পারছে না। আট-দশ লাইনে এসে কবিতা থেমে যাচ্ছে ইত্যাদি। তরুণদের কবিতা সম্পর্কে এখনো কি আপনার এ রকমই মূল্যায়ন?
আল মাহমুদ : এটা বলেছিলাম একসময়। তখন আমার মনে হয়েছিল, তরুণরা একটা দিশেহারা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ কবিতার বিষয় গতানুগতিক। আমি-তুমির বৃত্ত থেকে বেরোতে পারছে না তারা। যেন তাদের আর কোনো বক্তব্য নেই। এখন তো আমি তরুণদের ব্যাপারে জানিও না। তারা কী করছে, কিভাবে লিখছে_কিছুই জানি না। একসময় আজিজ মার্কেটে গিয়েছি, আড্ডা দিয়েছি। এখন তো সে অবস্থা নেই। এখন আমি পারি না কনটেম্পোরারি সাহিত্যের খোঁজ-খবর রাখতে। এ ব্যাপারে এখন উদাসীন বলা যায়। শুনেছি, তারা গদ্য ভঙ্গিতে কবিতা লিখছে। আঙ্গিক ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছে। তরুণদের এ প্রবণতাটাকে আমি মনে মনে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো গ্রন্থ তাদের হাত দিয়ে রচিত হয়নি, যা আমাকে বাধ্য করবে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে। যদি তেমন লেখা হতো নিশ্চয় আমি খোঁজ পেতাম, পড়তাম।
শিলালিপি : মাহমুদ ভাই, আপনার কবিতায়ও তো আমি-তুমির ছড়াছড়ি! সম্প্রতি প্রকাশিত আপনার কাব্যগ্রন্থের নাম 'তোমার রক্তে তোমার গন্ধে' কিংবা তার আগে প্রকাশিত গ্রন্থ 'তুমি তৃষ্ণা তুমিই পিপাসার জল'! তরুণ কবিরাও তো বলতে পারে, আপনিও আমি-তুমির বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারেননি!
আল মাহমুদ : এটা বললে বলতে পারো। কিন্তু আমার কবিতায় আমি-তুমির একটা দেশ আছে, কাল আছে। তাদের অবস্থান আছে। 'তুমি'টা কে? তার অবস্থান কী? এই 'তুমি'র ব্যাখ্যা থাকতে হবে। আমার কবিতায় আমি সে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
শিলালিপি : অনেকেই আপনার কবিতাকে 'পুরুষতান্ত্রিক' কবিতা বলে। বৈষ্ণব পদকাররা দেহাত্দা আর পরমাত্দার সংশ্লেষণ ঘটিয়েছিলেন তাঁদের কবিতায়। আপনার কবিতায় দেখি আত্দার অনুপস্থিতি। আপনার কবিতার বড় অংশজুড়েই শুধু দেহ আর কাম। এটা কেন?
আল মাহমুদ : আমি অবশ্য প্রশ্নটা ভালো করে বুঝিনি। যতটুকু বুঝতে পারছি তার উত্তরে বলছি, সব সময়ই আমার কবিতায় একটা বিষয় উপস্থাপন করতে চাই। নর হোক, নারী হোক, প্রেম হোক_একটা বিষয়কে উপস্থাপন করতে চাই। আমার ধারণা, আমি তা করতে পেরেছি এবং তরুণরা যে সেটা কিভাবে নিয়েছে, তা তো জানতে পারিনি, কারণ কমিউনিকেশনটা নেই তরুণদের সঙ্গে।
শিলালিপি : আপনার 'সোনালী কাবিন' সনেটগুচ্ছের প্রথম সনেটটিতে লিখেছেন, 'সোনার দিনার নেই কাবিন চেয়ো না হরিণী/যদি চাও দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দু'টি', এই যে বাঁধা পড়তে না চাওয়া, ছুঁতে দিয়েও ধরা দিতে না চাওয়া_সৃজনশীল মানুষের মধ্যে এ প্রবণতাটা এত বেশি কেন?
আল মাহমুদ : এটা হয়তো কবির একটা স্বাধীন ইচ্ছা হতে পারে, যে আমাকে কোনো কিছুতে বেঁধো না_এ-ই এই ইচ্ছে আর কী! আমি মুক্ত থাকতে চাই। মুক্ত থেকে যতটুকু বিনিময় করা যায়, সেটুকু আমাকে পাবে, এর বেশি নয়। হয়তো এটা হতে পারে।
শিলালিপি : কিন্তু শিল্পিত মানুষদের মধ্যে কেন এ প্রবণতাটা বেশি কাজ করে?
আল মাহমুদ : এটা তো আমি বলতে পারব না। কোনো কবি বন্ধনের মধ্যে যেতে চায় না।
শিলালিপি : আপনি কী চেয়েছেন? আপনার কবিতায় বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন প্রসঙ্গে, ভিন্ন ভিন্ন নারী এসেছে। এদের বিষয়ে কিছু বলুন...
আল মাহমুদ : নারী তো একটা কাঠামো। কবি বিভিন্ন জায়গা থেকে নারীকে এনে সেই কাঠামোতে বসিয়ে দেয়। কারো হাত, কারো চোখ, কারো কেশ, কারো বক্ষস্থল, কারো মুখ, পা, কারো কোমর_ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে এনে কাঠামোতে জোড়া লাগিয়ে দেয়। আমি সেটাই করেছি। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব কবিতায় স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দের সৃষ্টি করছে কি না? যদি করে থাকে, তবে ঠিক আছে। অস্বীকার করছি না, আমার কবিতা রহস্য সৃষ্টি না করে সরাসরি আসঙ্গলিপ্সার কথা বলে। কবিতা লিখতে গিয়ে নারীই আমার প্রধান বিষয়। মেয়েদের আমার ভালো লেগেছে_এটা আমি অকপটে বলেছি। কবি জীবনে এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং ব্যক্তিজীবনে এটাকে আমি সশ্রদ্ধায় দেখি।
শিলালিপি : এই যে আপনি বললেন, 'আমার কবিতা রহস্যটহস্য সৃষ্টি না করে সরাসরি আসঙ্গলিপ্সার কথা বলেছে', অর্থাৎ আপনার কবিতা একটা জায়গায় গিয়ে পেঁৗছায়, একটা মীমাংসা বা পরিণতিতে স্থির হয়। কিন্তু কোনো মহৎ কবিতা কি কোনো সিদ্ধান্ত দেয় বা সিদ্ধান্তে পেঁৗছে?
আল মাহমুদ : আমার কবিতা পড়লে দেখবে সময়ের ধার ঘেঁষে আমি সময় থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমার কবিতায় রয়েছে দেহজ প্রেমের আধুনিক রূপান্তর। এক জায়গায় তো স্থির থাকিনি। আর আমার কবিতা কোনো সিদ্ধান্তে পেঁৗছবে না কেন? আমি সিদ্ধান্তে পেঁৗছতে চাই। আমি সব কিছুর একটা এন্ড (বহফ) চাই। আধুনিক সাহিত্য এটাকেই আমি মনে করি, যেখানে হয়তো মিলও আছে, ছন্দও আছে, গন্ধও আছে_সব কিছু মিলিয়ে একটা স্থাবর বা অস্থাবর কিছু তৈরি হবে, একটা ম্যাজিক তৈরি হবে। আধুনিক কবিতা আমি এটাকেই বলি।
শিলালিপি : কবিতা যখন একটা সিদ্ধান্ত দিয়েই দিচ্ছে, তখন সেটা কি কবিতার সীমাবদ্ধতা নয়? এর ফলে ওই কবিতা পড়ার পর পাঠকের মনে নতুন করে কোনো সন্দেহ বা প্রশ্নের উদ্ভব সম্ভব না-ও হতে পারে। কবিতা তো একরৈখিক হয়ে যাবে! ক্লোজ এন্ডেড হয়ে যাবে। শিল্পের বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনা বলে যে বিষয়টা আছে, তা কি ক্ষুণ্ন হয় না এতে?
আল মাহমুদ : আধুনিক সাহিত্যের রীতি অনুযায়ী কবিতাকে এক জায়গায় পেঁৗছতেই হবে। যদি না পেঁৗছায় তবু আমি হয়তো তাকে কবিতা বলব, কিন্তু আসলে তা কবিতা হয়ে ওঠেনি। কবিতার নিজস্ব শব্দ আছে, গল্প আছে, ছন্দ আছে, উৎপ্রেক্ষা, অনুপ্রাস আছে। এমনি তো আর কবিতা হয় না। অনেক স্বাদ যুক্ত হলে কবিতা হয়। আমি অনেক দিন থেকেই কবিতা লিখছি। আধুনিক কবিতা সম্পর্কে আমার ধারণা গড়ে উঠেছে। আমি সেই ধারণা থেকেই লিখছি। আমার কাজের বহর কম নয়, অনেক বড়, অনেক বিস্তৃত। আমাদের বাংলা কবিতা হলো গীতিপ্রবণ। আমি নিজেও মোটামুটি গীতিধর্মী কবিতা লিখতে চাই। আর অ-কবিতাকে কবিতা থেকে আলাদা রাখার জন্য ছন্দ, মিল, অনুপ্রাস_এসবের ঝোঁক বানাতে হয়। কবি হতে গেলে তার অবশ্যই মাত্রাজ্ঞান থাকতে হবে। মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হলো মিলের মধ্যে থাকা। সব জায়গায় এটা আছে। তবে ছন্দহীন কবিতাও কবিতা হতে পারে। রবীন্দ্রনাথ শেষের দিকে অনেক ছন্দহীন কবিতা লিখেছেন। কবিতাকে কবিতা করে তুলতে হবে। যদি ছন্দ না থাকে তবে ছন্দের অভাব অন্য কিছু দিয়ে পূরণ করতে হবে। নইলে মানুষ পড়বে না; শুধু তাকিয়ে দেখবে।
শিলালিপি : বেশ। কবিতা নিয়ে অনেক কথা হলো। কবি আসলে কী চায়?
আল মাহমুদ : কবি সব সময় দুটো জিনিস একসঙ্গে চায়। একটা হলো_তাকে তার প্রেমের পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে, সে যে প্রেমে পড়ে_এটা মেনে নিতে হবে। অন্যটি হলো, তাকে কোনো বাঁধনে আটকানো যাবে না।
শিলালিপি : কিন্তু আমাদের সোসাইটি কি এটাকে অ্যালাউ করে বা আমাদের পরিবার?
আল মাহমুদ : না, পরিবার তো অ্যালাউ করে না, সমাজও করে না। এ জন্যই কবিরা বিদ্রোহী।
শিলালিপি : মাহমুদ ভাই, সে ক্ষেত্রে আপনি কিভাবে সামাল দেন?
আল মাহমুদ : আমিও বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তার পরও সব শূন্যতাকে মাড়িয়ে এগিয়ে গেছি। আমি বলেছি, আই উইশ টু বি আ পোয়েট। কবির মতো জীবনযাপন করতে চেয়েছি। কবির স্বপ্ন যেমন থাকে, আমারও তেমন স্বপ্ন। সেই স্বপ্নে যত বাধা এসেছে_সব অতিক্রম করতে পারিনি, কিন্তু বিদ্রোহ করেছি।
শিলালিপি : কিন্তু জীবনসঙ্গী হিসেবে নারী কি কবিকে পছন্দ করে?
আল মাহমুদ : অবশ্যই করে। মেয়েরা কবিপুরুষকেই বিয়ে করতে চায়। কারণ কবিরা সহনশীল হয়। পার্থিব অনেক বিষয়ে তারা উচ্চবাচ্য করে না। এটা ঠিক না যে কবি হলেই সে পরিত্যাজ্য হলো।
শিলালিপি : আমি ঠিক পরিত্যাজ্য হওয়ার কথা বলছি না। যেমন আমি একটা ঘটনা জানি, অনুমতি দিলে বলতে পারি...
আল মাহমুদ : বলো।
শিলালিপি : আপনার বাবা প্রথমে যে মেয়ের সঙ্গে আপনার বিয়ে ঠিক করেছিলেন, যতদূর জানি, বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক হয়েছিল, দাওয়াতপত্র ছাপা হয়েছিল_এমন সময় মেয়েটি জানলেন আপনি কবি, কবিতা লেখেন এবং কবি হওয়ার কারণে মেয়েটি শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রাজি হননি। বিষয়টি আপনার বাবার সম্মানে লেগেছিল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পাশের গ্রামের এক স্কুলশিক্ষকের মেয়ের সঙ্গে আপনার বিয়ে ঠিক করেন। আমৃত্যু তিনি আপনার অর্ধাঙ্গিনী হয়ে ছিলেন...
আল মাহমুদ : হ্যাঁ, কেউ কেউ এমনো আছে। রকমফের তো থাকেই। তবে অনেক নারীই আছে_অর্থ নেই, বৃত্ত নেই_শুধু কবি বলেই তাকে বিয়ে করতে চায়, জীবনসঙ্গী হিসেবে চায়। এটা আমার বিশ্বাস আরকি_কবিদের মেয়েরা পছন্দ করে। কারণ কবিরা নিষ্ঠুর হয় না। কোনো কিছু ভাঙতে চায় না তারা। তারা হলো রক্ষণশীল। ভালো যেটা, সুন্দর যেটা_ধরে রাখতে চায় কবিরা।
আমার স্ত্রী জেনেশুনেই আমাকে বিয়ে করেছেন। তিনি জানতেন আমি কবি। আমার শ্বশুর স্কুলশিক্ষক ছিলেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে যেদিন ঢাকায় এলাম, উঠলাম পুরান ঢাকার ছোট্ট একটা ঘরে, বিছানায় ছড়িয়ে আছে বই_বড় মমতায় বইগুলো এক পাশে সরিয়ে শুয়ে পড়লেন, কোনো অভিযোগ করলেন না। সেই যে তিনি একটুখানি জায়গা দখল করলেন, সে জায়গাটুকুই নিয়ে ছিলেন। বইয়ের সঙ্গে তাঁর কখনোই বিরোধ হয়নি।
শিলালিপি : আপনার কথাসাহিত্য নিয়ে কথা বলতে চাই। আপনার 'জলবেশ্যা' বা 'পানকৌড়ির রক্ত' গল্পে...
আল মাহমুদ : দেখ, আমার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। এসব নিয়ে আজ কিছু বলতে পারব না। তবে যা বললে গল্প হবে আমি তাই লিখতে চেয়েছি, লিখেওছি। আমার উপন্যাসে জাদুবাস্তবতা আছে। স্বপ্ন, অলৌকিক, অশরীরি অনেক বিষয়কে গল্প বা উপন্যাস করে তুলেছি। আমি যেটা দিয়ে গল্প বলাতে চেয়েছি, সেটাই গল্প হয়ে উঠেছে_এটা আমার বিশ্বাস।
শিলালিপি : মাহমুদ ভাই, এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে কথা বলব। এই যে আপনি পঁচাত্তর বছরে পা রাখলেন, জীবনের এত দিন, এত অভিজ্ঞতা পেরিয়ে এসেছেন; পেছন ফিরে তাকাতে ইচ্ছে করে না?
আল মাহমুদ : তাকাতে ইচ্ছে করে। আমি তাকাই। কিন্তু খুব বেশি পেছনে তো যেতে পারি না। তবে মানুষ হিসেবে আমি অতীতমুখী নই। ভবিষ্যৎমুখী। অতীত আমি বাদ দিইনি, আবার তাকে সামনেও আনতে চাইনি।
শিলালিপি : আপনি তো সারাক্ষণই বাসায় থাকেন। আপনার সময় কাটছে কিভাবে?
আল মাহমুদ : কেটে যাচ্ছে বা কোনো রকমে সময় অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে। এখন তো আর বাইরে যেতে পারি না। একসময় যাদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম তাদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন নানা রকম চিন্তা কাজ করে। অনেক কথা লিখতে ইচ্ছে করে। সব কথা তো আর লিখতে পারিনি।
শিলালিপি : মৃত্যুচিন্তা...
আল মাহমুদ : মৃত্যুচিন্তাও কাজ করে। মৃত্যু আসবে। আমি মৃত্যুটাকে সহজভাবে নিই। কোনো জটিলতা নেই। পৃথিবীতে মানুষ যত জন্মেছে, ততই মরেছে। মৃত্যু নিয়ে আমার চিন্তা আছে, দুশ্চিন্তা নেই।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×