অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস............প্লীজ কেউ হাসবেন না কিংবা ভাববেন না আমি মজা করছি। আসলেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কি অবস্থা সেইটা যারা এখানে পড়েন না তারা আন্দাজও করতে পারবেন না। এখানে কোন আইন নেই, কোন নিয়ম নেই। একটার পর একটা ছাত্র খুন হচ্ছে অথচ খুনীকে শণাক্ত পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ এখানে আমাদের নিজেদের কোন নিরাপত্তা নেই। আমরা ক্যাম্পাসের ১৯ হাজার সাধারন শিক্ষার্থী এই ক্যাম্পাসের কেউ না......যে দল যখন ক্ষমতায় সে দলের ছাত্রনেতা আর পাতিনেতাদের ক্যাম্পাস এটা। এখন যে দল ক্ষমতায় তার সমর্থক বা কর্মীরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। ওরা রেল স্টেশনে বসে মেয়েদের টিজ করতে পারবে, ট্রেনের বগিতে মেয়েদের নিয়ে আজেবাজে গান গাইতে পারবে, বগিতে ওঠা মেয়েদের মুখে সিগারেট এর ধোঁয়া ছাড়তে পারবে, যে কোন মেয়েকে প্রেম নিবেদন করতে পারবে (এবং সেই মেয়েকে অবশ্যই তার প্রস্তাবে রাজী হতে হবে), সাধারন একজন শিক্ষার্থীকে একপাশে ডেকে তার মানিব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে নিতে পারবে, নেতা বড়ভাই এর মোবাইল লাগবে তাই পরিচিত নিরীহ কোন ছাত্রকে ডেকে তার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিতে পারবে, ওরা ক্যাম্পসের প্রবেশপথের নাম ফলকের চারদিকে নিজেদের দলের নাম লিখে দিতে পারবে, ওরা রাজপথে নামবে দলের কোন ত্যাগী (!!!!) নেতার জেল থেকে মুক্তির দাবীতে, ওদের দাবী আদায়ে বন্ধ হয়ে যাবে শাটল ট্রেন, চলবে না বাস বা তরী, ওরা চাইলে আমরা সাধারন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যাব আর না চাইলে যাব না, ওরা একই দলের দু গ্রুপ মারামারি করবে তাই আমরা শাটল ট্রেনের ভেতর দরজা জানালা বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকবো, ওদের দাবী পূরণের জন্য বন্ধ থাকবে ক্যাম্পাস আর মাসের পর মাস আমরা ঘরে বসে থাকবো, ওরা ভাঙচুর করবে লোকাল বাস, পুড়িয়ে ফেলবে বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক বাস, মেয়েদের গায়ে হাত তুলবে, করবে শ্লীলতাহানী, বহিস্কার হবার পরেও বীরদর্পে কাঁপাবে ক্যাম্পাস........তবু ওদের কিচ্ছু হবে না।
মাত্র কয়েকটা ছাত্র নামধারী পশুর জন্য আজ আমরা হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা হল থেকে বের হতে ভয় পাই, আমরা শাটল ট্রেনে উঠতে ভয় পাই। অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট এর পরীক্ষা আটকে আছে, গুরুত্বপূর্ণ ক্লাশ হচ্ছে না। মুখরিত ক্যাম্পাস হয়ে আছে নিস্প্রাণ আর আতংকে নীল। আমরা এমন ক্যাম্পাস তো চাইনা.......আমরা চাই শ্যামল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন সবসময় মুখরিত থাকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়, আমরা লেখাপড়া করতে চাই।
পুরো বাংলাদেশে এমন কেউ কি নেই যিনি এই পশুদের শায়েস্তা করতে পারেন কিংবা এদের হাত থেকে আমাদেরকে রা করতে পারেন????? আমাদের জীবন, শিক্ষাজীবন, মান-সম্মান সবকিছু আজ ওদের কাছে জিম্মী।
আমি আজ যে কথাগুলো লিখলাম সেগুলো যে কোন সাধারন শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চান, মিলে যাবে আমার কথার সাথে। আমি জানি না কেন আমি এই কথাগুলো লিখলাম........শুধু জানি আমরা ভালো নেই....আমাদেরকে ভালো থাকতে দেওয়া হচ্ছে না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




