আপনার কাছে যদি মনে হয় যে আপনি এই পোষ্টের টাইটেল "সাংবাদিকেরা কখনও বেকার হয় না!" পড়েছেন, তাহলে টাইটেলটি আবার পড়ুন। আর যদি আপনি ঠিক "সাংঘাতিকেরা কখনও বেকার হয় না!" পড়ে থাকেন, তাহলে নতুন করে পড়ুন "সাংবাদিকেরা কখনও বেকার হয় না!"

সাংবাদিক ভাই-বোনেদের বহুকাল থেকেই বাংলাদেশে সাংঘাতিক বলা হয়। সেই সুরেই বললাম আরকি; মজা করে। কেউ সিরিয়াসলি নিয়েন না!
সালটা ২০১৩, মাস সেপ্টেম্বর। বেশ তোড়জোড় চলছে অক্টোবরের শুরুতে সিলেটে একটা লম্বা ফটোগ্রাফি ট্যুর দিবো। আমি যাচ্ছি আরও কয়েকজন ফটোগ্রাফারের সাথে। আমার এ সাংবাদিক বন্ধুকেও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় আছি, কিন্তু সে কোন ভাবেই মানছে না। তাকে মানাতে তার অফিসে হাজির হলাম। ঘটনাচক্রে পড়ে ইন্টারভিউ দিয়ে ফেললাম জবের জন্য, এবং জব পেয়ে গেলাম! সে ঘটনা অন্য একদিন বলবো।
সাংবাদিকতার চাকরীর জয়েনিং লেটার হাতে নিয়ে বন্ধুকে ছাড়াই গেলাম সিলেট। সেখান থেে এসে সাংবাদিক হিসাবে জয়েন করবার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয় জেনেছি, বুঝেছি, শিখেছি। আমার জীবনের অন্যতম মজার ৫টা মাস ছিলো সেখানে! এরপর চাকরী ছেড়ে দিয়ে নিজের কাজে আবার মন দিয়েছি।
যাই হোক, মধ্যেখানে পদ্মা সেতু নিয়ে সাংবাদিকেরা বেশ গরম হয়েছিলেন। এক একটা স্প্যান না পিলার বসে, এক একটা বিশাল নিউজ হয়। আমি অবশ্য এতে এক্সাইটেড ছিলাম। কারণ পদ্মা সেতু হবার ফলে যে সব মানুষ সুবিধায় পাবে, আমি তাদের মধ্যে একজন। পদ্মা সেতু হওয়াতে আমাকে আর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে লম্বা লাইনে পড়ে থাকতে হবে না। এবার শীতের মধ্যে ১৪ ঘন্টা আটকে ছিলাম!
তো সেতুর স্প্যান বসানো যখন শেষের দিকে, তখন কেউ এজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছিলো যে সব স্প্যান বসানো হয়ে গেলে সাংবাদিকেরা নাকি বেকার হয়ে যাবে। কিন্তু দেখা গেলো স্প্যান বসানো শেষে যখন ঐ স্প্যান বসানোর ম্যাশিন ফেরত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন সেটা নিয়েও একটা সংবাদ হলো। এটা দেখে কেউ একজন টিপ্পনী কেটে বলেছিলো, সাংবাদিকেরা কখনও বেকার হয় না!
ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসি। কিন্তু টিভিতে ঘন্টার পর ঘন্টা নষ্ট করে দেখতে ভালোবাসি না। আর এগুলি নিয়ে যে সব কথাকাটাকাটি হয়, তার মধ্যেতো কখনোই যাই না। তাই বড় কোন ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার সময় অস্বস্তিতে থাকতে হয়। বলাই বাহুল্য যে কাতার বিশ্বকাপের সময়ও তেমনই অস্বস্তিতে থাকতে হয়েছে।
সেদিন ফাইনাল হয়ে গেলো, ভাবলাম এবার বোধ হয় একটু থামবে। দেখি না, থামাথামির কোন নাম নেই। এ ওকে নিয়ে গান করেছে, ও তাকে টিপ্পনী কেটেছে, ও গোল করার সময় বাহির থেকে লোক মাঠে ঢুকে পড়েছে, ১৯৮৬ সালে কে হাত দিয়ে গোল করেছে, কত সালে কে কাকে মাথা দিয়ে গুতা দিয়ে ফেলে দিয়েছে.... ইত্যাদি ইত্যাদি নিউজের ঘাপানে এখনও নিউজ সাইটে ঢোকাই দায়।
সব দেখেশুনে বুঝলাম, "সাংঘাতিকেরা কখনও বেকার হয় না!"
Photo by Roman Kraft on Unsplash
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


