দেশের ভবিষ্যত নেতা তৌরির কারখানা হিসেবে অনেকেই ছাত্ররাজনিতির দরকার আছে বলে ধারনা করে। কিন্তু বর্তমানে ছাত্ররাজনিতিকদের কাজে বোঝা যায় সময় এসেছে বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার। ছাত্ররা বর্তমানে রাজনিতিক দলের লাঠিয়ালে পরিনত হয়েছে।
বর্তমানে অথবা ভবিষ্যতে শিক্ষাপ্রতিস্ঠানে ছাত্ররাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে আমাদের দেশের ভবিষ্যত প্রযন্মেরা কি শিখতে পারবে? আমরা বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি ছাত্ররাজনিতি অর্থ হচ্ছে রাজনিতিক দলের পেশী শক্তি, হাতের লাঠি। রাস্তা দখল করে রাখার জন্য, রাস্তায় প্রতিবাদ বন্ধের জন্য। টেন্ডারবাজী করার জন্য, অঙ্গসংঘটন গুলিকে ব্যবহার করে রাজনিতিক দলগুলি।
ছাত্র রাজনিতি বন্ধের কথা হলেই সবাই ৫২ সালের কথা নিয়ে আসে। তারা একটা বাহানা দেয় কিন্তু এখন যে ছাত্ররা সব দলের লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করছে সেটা দেখে না।
আর একটা কথা হলো বর্তমানে কোন রাজনিতিক দল তাদের ছাত্রদলের সদস্যদের উন্নয়নের জন্য কি শিখায়?
আসুন সবাই মিলে লিস্টি করি যে ছাত্রদল/লীগ করে আমাদের ছেলে/মেয়েরা কি শেখে?
ক্যম্পাসে মিছিল করা?
রাজনিতিক দলের মিটিং এ উপস্থিত থাকা?
বিভিন্ন দিবসে ফুল দেয়ার অনুস্ঠানে থাকা, দোয়া মাহফিলে যোগ দেওয়া, ত্রান বিতরনের ছবি তোলা।
তারপরেই পত্রিকায় আমরা দেখি টেন্ডারবাজী, চাদাবাজী, দুইপক্ষের মাঝে এলাকাতে প্রভাব বিস্তারের জন্য মারামারি এবং সবই হয় আধুনিক অস্রের ব্যবহারের সাথে। সময় বদলাইছেনা।
ক্ষমতা পাবার লোভে ছাত্রদের এমন রুপ আমরা দেখি মাঝে মাঝেই। আরবারের মতন ছাত্র মারা যায় তবুও আমাদের ঘুম ভাঙ্গেনা।
আর বর্তমানে নেতার ছেলে ভবিষ্যতের নেতা হবে এটা সবাই মানে। আমাদের দেশের নেতারা মুখে গনতন্ত্রের কথা বলে, ছাত্ররাজনিতির কথা বলে কিন্তু নেতার ছেলে, নেতা হবে এটা দেশের গনত্রান্তিক নিয়ম হয়ে গেছে।
এখন আলোচনা হয় ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী কে হবে জয় না তারেক? কেউই কিন্তু বলেনা অমুক ছাত্রনেতা ভালো প্রধানমন্ত্রী হবে!!!
বর্তমানে নেতার ছেলেরা বাইরের দেশে পড়াশুনা করে দেশে ফিরে এসে বাবার সাথে রাজনিতি শুরু করে বাবার পরে গদিতে বসে। পরিবারতন্ত্র প্রতি জেলার বড় নেতাদের মাঝেই দেখা যায়। আর ঐ যে সাধারন ছেলেটি ছাত্ররাজনিতে যোগ দিয়েছিলো সে লাঠিয়াল হিসেবে নেতার ছেলের হাত শক্তিশালী করে। পরে এক সময় অন্যদলের ছেলেদের হাতে মার খায়, মারা যায়।
যদি ছাত্ররা ভাল মানুষ হয়, ভালো ব্যক্তিত্বের অধীকারি হিসেবে কলেজে গড়ে উঠে তবে দেশের প্রয়োজনে তারা প্রতিবার করবেই।
উন্নত দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠিনে ব্যক্তিগত উন্নয়ের জন্য ( Personal Development ) বিভিন্ন ক্লাস/কারিকুলাম থাকে। তাতে ছাত্রদের বিভিন্ন বিষয়ে বক্তিতা, উপস্থাপনা, বিতর্ক, দলবদ্ধ আলোচনা, বিভিন্ন প্রযেক্ট করতে দেওয়া হয় এবং তা ক্লাসে সবার সামনে উপস্থাপনা করে শিক্ষাথীরা শেখে কিভাবে সবার সামনে কথা বলা, বির্তক সবপরি নেত্রত্ব বিকাশে এইসব ক্লাশ গুলি অনেক কাজে লাগে।
এই রকমের কিছু কাজে একজন ছাত্রের কি উন্নতি হয় বুঝি না। তারচেয়ে একজন ছাত্রকে বিতর্ক, উপস্হিত বক্তিতা, স্কুল, কলেজের ছাত্রদের সামনে প্রজেন্টেসন দেওয়া, বিভিন্ন প্রজেক্ট, ফিল্ড ওয়াক, গ্রুপ ডিস্কাসন, এই রকমের অনেক কাজ কলেজের শিক্ষা কারিকুলামে যোগ করেই ছাত্রদের নেতৃিত্ব বিকাশে সাহাজ্য করা যেতে পারে।
বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা পড়ে আছি ৫২, ৭১, ৯১ এর দিকে তাকিয়ে।
আমাদের উচিত বর্তমানে ছাত্ররাজনিতি বন্ধ করা। উন্নত দেশের নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতন করে ছাত্র ছাত্রীদের ব্যক্তিত্ব, নেত্রীত্ব গঠনের উপযোগী করে শিক্ষায় অন্ত্রভুক্ত করা।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:০৭