একটা কথা মনে হচ্ছিল যে এই দেশে সংগীত এর যে শুদ্ধ রূপ ক্লাসিক্ল্যাল সংগীত তার চর্চা খুবই অল্প। কিছু মানুষ তাদের ব্যক্তিগত ভাললাগা, ভালবাসা থেকে চর্চা করে যাচ্ছে। ফলে এখানে না এর কনসার্ট হয়, না এর দর্শক পাওয়া যায়। আবার দর্শক হয় না দেখে কনসার্ট ও হয়না। অদ্ভুত এক গেরো। গতকাল ঢাকা ক্লাবে ছিল পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া'র কনসার্ট। নামের কারনে আর কিছু না হোক দর্শক জুটে যায় হাজার টাকা খরচ করে হলেও। আর এই রকম কনসার্ট মাঝে মাধ্যে হয় দেখে আমার মতো অভাজনেরাও স্বাদ বদলাতে পারে। রেকর্ড করা বাজনা না শুনে- ঘোল না খেয়ে দুধ খেয়ে।
কলকাতা বা ভারতের বিভিন্ন স্থানে যেমন সারারাত ধরে এইসব ক্ল্যাসিক্ল্যাল কনসার্ট চলে আমাদের দেশে তার কল্পনা করা যে বাড়াবাড়ি এই বোধটুকু আমার ছিল। কিন্তু আশা ছিল তার এক চতুর্থাংশও যদি এই পোড়া কপালে জোটে তো - মেরে তকদির কো এইসা খুশ নসিব দেখ কর জবান নেহি খোলে....ইত্যাদি ইত্যাদি। ঢাকা ক্লাবে কনসার্ট সাথে রাতের ডিনার এর আয়োজন। লোক কম হয়নি। হাজার খানেক হবে নির্ঘাত। আগে খাওয়া পরে বাদ্য শোনা। গান শোনা খুব কঠিন কাজ তো তাই আগে শক্তি সঞ্চয়! খাবার পালা চুকলো। তারপর একদম ঘড়ি ধরে সাড়ে ৯ টায় পন্ডিতজী তার বাশিঁ বাদন শুরু করলেন। আমি শুনছি। এর মধ্যে একটু এদিক ওদিক করে সামনের দিকে একটা সিট জোগাড় করে বসে পড়লাম। ১১ টার মতো বাজে। উনি বললেন - বাংলায় বললেন যে " এখন আমি পাহাড়ি ধুন বাজাব।" বাজাচ্ছেন, বাজালেন, তারপর বাজান থামালেন, চোখের সামনে দেখলাম অন্য একটা রাগ বাজাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন.....- এমন সময় একজন অফিসিয়াল ( একটা খেকশেয়াল!!!) ওনাকে থামালেন। কারন মন্ত্রী এসেছিলেন। উনি চলে যাবেন। যাবার আগে পন্ডিতজীকে অমূল্য ফুলের তোড়া দেবেন। ঢাকা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আড়ং এর পাঞ্জাবি দেবেন। ইত্যাদি ইত্যাদি। ওনারা দিলেন, দেখলাম। চলে এলাম!!!! খালি মনে হল অনুষ্ঠান শুরুর আগে তো একবার বললেন - তখন এইগুলো দিয়ে অনুষ্ঠানটা শুরু করলে - যারা ওনার বাশিঁ শুনতে গিয়েছিলাম তাদের এমন পাতে বসিয়ে তুলে দিতে হতো না। তারপরও যা শুনে এসেছি ....... অনবদ্য......
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ২:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





