ধারাবাহিকতার জন্য আগের পর্বগুলি পড়ে আসুন,
গল্পঃ নাবিলা কাহিনী ৪ - অচেনা হৃদয় (প্রথম পর্ব)
গল্পঃ নাবিলা কাহিনী ৪ - অচেনা হৃদয় (দ্বিতীয় পর্ব)
ছয়
নাবিলা আজকে ঠিক করেছে লাবনীর সাথে ওর সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে আর সেজন্য লাবীবকেও লাবনীর সাথে একই সেশনে বসিয়েছে। লাবনীর মনে অনুশোচনাবোধ ফিরিয়ে আনা দরকার। ধর্মীয় অনুশাষন এইসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করে!
-লাবনী সহী হাদিসে বর্ণিত আছে, “একটা মেয়ে আরেকটা মেয়ের উপর উপগত হলে কিংবা একটা ছেলে আরেকটা ছেলের উপর উপগত হলে সেটা অবশ্যই ব্যাভিচার হিসাবে গন্য করা হবে”। (আল তাবারানি ৪১৫৭) এবং “যারা এই ধরনের জঘন্য পাপাচারে লিপ্ত হবে তাদের দুইজনকেই এই পাপের শাস্তিস্বরূপ হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে”। (মুসনাদ বিন হানবাল ১০৪৬০) তুমি কি অনুধাবন করতে পারছ কত বড় জঘন্য পাপের মধ্যে তুমি ডুবে আছ?
গভীর লজ্জায় লাবনী মাথা একদম নীচু করে রইল। নাবিলা আবার বলা শুরু করলঃ
-লাবনী তোমার সমস্যার একটা গ্রহনযোগ্য কারন বের করা গেছে মীরার সাথে কথা বলার পর। এটা আমি প্রথমেই ধারনা করেছিলাম।
-সেটা কি ম্যাডাম?
-লাবনী তুমি সমকামি নও এবং তোমার যা হয়েছিল সেটাকে আমরা বলি যৌন বিচ্যুতি, এটা অনেক সময় পরিস্থিতির কারনেও ঘটতে পারে। প্রথমবার মীরার সাথে যেটা হয়েছিল সেখানে তোমার জায়গায় যে মেয়েই থাকত তার একই ঘটনা ঘটত। আর পরবর্তি যতবার এই ঘটনা ঘটিয়েছ সেটা আগের ঘটনা জাস্টিফাই করার জন্য করেছ। মীরা সর্ম্পুণ ঠান্ডা মাথায় এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে তোমাকে এই ধরনের সর্ম্পকে জড়িয়ে নিয়েছে। কারন ওর আগের মেয়ে পার্টনার ওকে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল। সম্ভবত মীরা ওর আগের মেয়ে পার্টনারের কথা তোমার কাছে সর্ম্পুন গোপন রেখেছে। পর্ণ দেখা, তাও আবার শুধুই মেয়েদেরকে নিয়ে এবং বেছে বেছে রগরগে টাইপের দেখার সব কুবুদ্ধি তো মীরাই তোমাকে দিত, তাইনা!
লাবনীর ফেস এক্সপ্রেশনই বলে দিল নাবিলার ধারনা একদম ঠিক।
-কিন্তু আমি কেন ম্যাডাম এতে আনন্দ পাব? আমার তো এইসব অপছন্দ হবার কথা?
-শোন লাবনী, যৌন অভিমুখিতার ধর্মই হচ্ছে তারলের মতো। তরলের ধর্ম তারল্য হওয়ায়, তরল পদার্থ সময়ের সাথে, পরিস্থিতির সাথে তার আকার বদলায়। মানুষের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনি যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তিত হতে পারে। আর পারে দেখেই এখন আর মীরার সাথে সর্ম্পক নিয়ে তুমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট নও। লাবীবের সাথে সর্ম্পকটাই মূখ্য হয়ে উঠছে তোমার জীবনে। তা না হলে তুমি আমার কাছেই আসতে না। এখন সময় এসেছে তোমার জীবনে স্থায়ী সর্ম্পক কোনটা হবে সেটা নির্ধারণ করা। এবং তারপর সেভাবেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেয়া।
লাবনী মাথা নেড়ে কথাগুলি শুনার সাথে সাথেই নাবিলার সাথে একাত্মতা ঘোষনা করল। ও তো এই জন্যই নাবিলার কাছে এসেছে।
-তুমি কি কখনও বাচ্চা নেয়ার কথা ভেবেছ? মাতৃত্বের স্বাদ একটা মেয়ের জীবনে পরিপূর্ণতা এনে দেয়। তুমি কি মা হতে চাও না লাবনী?
প্রশ্নটা শুনেই ও লজ্জায় লাল হয়ে গেল। বিয়ের চারমাস পর থেকেই শ্বশুর শ্বাশুড়ি বাচ্চার জন্য ওর কান ঝালাপালা করে ফেলেছে, লাবীবও কম যায়না। কত কষ্ট করে ঠেকিয়ে রেখেছিল ও, আর ম্যাডাম কিনা সেটাই উস্কে দিল!
-আমি খুব করে চাই ম্যাডাম। লাবনী কিছুতেই রাজী হয় না।
লাবনী চোখ গরম করে লাবীবের দিকে তাকাল। ও কি না বলেছি নাকি? কেবল বিয়ে হয়েছে, এত তাড়াতাড়ি নিতে চাচ্ছিল না ও। তাছাড়া মীরা'র সাথেও আগে আলাপ করে নিতে হবে, হুট করেই এইসব বড় সিদ্ধান্ত কি নেয়া যায়?
-আমি তোমার মুখ থেকে উত্তর চাচ্ছি লাবনী!
-জী চাই।
-তাহলে লাবীব বা মীরা কার কাছে তুমি থাকবে, সেটা নির্ভর করছে তুমি মা হবার উপযুক্ত বা সক্ষম কিনা সেটার উপর। ধর, তুমি কোন শারীরিক সমস্যার কারনে কখনই মা হতে পারবে না। সেক্ষেত্রে আমি হয়ত তোমাকে মীরার কাছে ফিরে যেতে বলব। কিন্তু এটা আমাকে আগে কনর্ফাম হতে হবে। শুধু শুধু লাবীবের জীবনটাতো তুমি নষ্ট করতে পার না, তাইনা? লাবীবের তো বাবা হবার পূর্ণ অধিকার আছে। এবং লাবীবকে এটা থেকে বঞ্চিত করার তোমার অধিকারও নেই। তুমি কি বুঝতে পারছি আমি কি বলতে চাইছি!
লাবনী অনেকক্ষন চিন্তা করেও এই যুক্তি খন্ডন করার মতো কিছু খুঁজে পেল না। ওর মাথায় আসছে না নাবিলা ম্যাডাম আসলে ওকে নিয়ে কি করতে চাচ্ছে!
-আমি তোমাদেরকে একজন গাইনোকলজিস্টের ঠিকানা দিচ্ছি। তোমরা কাল বিকালে ওর সাথে দেখা করবে। ও আমার স্কুল ফ্রেন্ড। আমি আজকেই ফোনে ওকে সবকিছু বলে তোমাদের জন্য এপয়েন্টমেন্ট করে রাখব।
-উনি যদি আমাকে প্রেগনেন্ট হতে বলেন?
-হবে। অসুবিধা কোথায়? মা হওয়া কি খারাপ কিছু নাকি? তোমার জন্ম কিভাবে হয়েছিল, বল?
-কিন্তু এত তাড়াতাড়ি! তাছাড়া মীরার ব্যাপারটা সলভ হবার আগে....
-তুমি আগে দেখ মা হতে পার নাকি? কোন ভয়াবহ সমস্যা হয় নাকি? বাচ্চার ব্যাপারে আমরা পরে ডিসিশন নিতে পারব।
লাবীব বুঝে ফেলল ম্যাডাম কোন রাস্তায় যাচ্ছেন! দারুন বুদ্ধি! পেটে বাচ্চা আসলে প্রতিটা মেয়েরই মনস্ত্বাতিক প্রচন্ড পরিবর্তন আসে। লাবনীকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার এর চেয়ে ভালো রাস্তা আর কিছুই হতে পারেনা। ম্যাডামকে ওর সার্পোট করা উচিৎ, এখনই।
-লাবনী, তুমি যদি কোনভাবেই বাচ্চা না চাও তাহলে পরে কন্টিনিউ করবে না। নিতে অসুবিধা কোথায়? আমরা সবাই শিওর হতে পারলাম। আমি কি বিয়ের পর কখনও তোমাকে জোর করেছি কিছুতে?
লাবনী প্রথমে কিছুক্ষন হালকা আপত্তি করলেও দুইজনের চাপের মুখে যুক্তিগুলি ফেলে দিতে পারল না।
-যদি আমি বাচ্চা নেবার পর ফেলতে না চাই, তাহলে মীরার কি হবে?
-আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি মীরাকে আমি চিকিৎসা করব। আমি যদি কথা না রাখি মীরা তো তোমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবেই। তুমি বাচ্চা নেবার ট্রাই করো আর আমি এই সময়টাতে মীরাকে নিয়ে কাজ শুরু করি। এমনও তো হতে পারে, মীরা পুরোপুরি সুস্থ হবার পর তোমার কাছে ফিরতে নাও চাইতে পারে। ওরও তো তোমার মতো একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে, এটা ভুলে যাও কেন?
লাবনী আর কোন কথা না বলে নাবিলার উপদেশ মেনে নিল। লাবনী এত সহজেই রাজী হয়ে গেল দেখে নাবিলা বুঝতে পারল, লাবনীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসা খুব বেশি কঠিন হবে না। কারন সব সময়ই ওর পাশে লাবীব থাকছে। আর এই জন্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এদেরকে ‘আযওয়াজ' হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। নাবিলা আপাতত লাবনীর সেশন কিছুদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল। গাইনোকলজিস্টের কাছ থেকে ও এমনিতেই সব রির্পোট পেয়ে যাবে।
সাত
রুপমের কাছ থেকে মীরার রির্পোট পাবার পর নাবিলা সরাসরি মীরার মা’কে ফোনে ওর চেম্বারে দেখা করতে বলল। ফোনে মহিলাকে হালকা ব্রীফ করল ও, তবে মীরার মাকে মীরার সাথে এই বিষয়ে কোন কথা বলতে নিষেধ করে দিল।
পরেরদিন মধ্যবয়স্ক একজন মহিলা ওর চেম্বারে দেখা করতে আসলে চেম্বারে সাথে সাথেই ডেকে পাঠাল নাবিলা। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে মীরাকে নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করার পর উনার দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কথা তুলতেই মহিলা কিছুটা রির্সাভ হয়ে গেলেন। নাবিলা বুঝতে পারল এই বিয়ের মধ্যে কোন একটা ঘাপলা আছে যেটা জানা খুবই জরুরী। আরও বেশ কিছুক্ষন নাবিলার সাথে কথা বলার পর মীরার মা সেদিনের মতো চলে আসল।
আট
-মীরার মাকে ভয়ংকর চাপের মুখে রেখে থানা থেকে কেস উথড্র করা হয়েছিল। তবে এর জন্য উনিও দায়ী। মীরার বাবার ব্যবসায়িক পার্টনার ছিল রফিক। যতদুর জানতে পেরেছি মীরার মায়ের সাথে পরকীয়া সর্ম্পক ছিল রফিকের। এটা নিয়ে ভালোই ঝামেলা চলছিল মীরার বাবার সাথে। ভদ্রলোক নাকি এই স্ট্রেস সহ্য করতে পারেন নি, হার্টএ্যাটাক করে মারা গেছেন। এরপর আবার রফিক সাহেবের ছোট ভাই সফিকের মীরাকে ধর্ষনের ঘটনা! মীরা মেয়েটার জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। ওর জন্য আমাদের অবশ্যই কিছু করতেই হবে ম্যাডাম। আমি এত বড় অন্যায় মেনে নিতে পারব না।
রূপমের কাছ থেকে মীরাকে নিয়ে বাকি ঘটনাগুলি শুনছিল নাবিলা। মীরাকে কোনভাবেই হাতছাড়া করতে চান না রফিক কিংবা মীরার মা। মৃত্যুর আগেই মীরার বাবা প্রায় সব ব্যবসায়িক সম্পত্তি নিজের মেয়ের নামে লিখে দিয়ে গিয়েছিলেন।
-ধর্ষনের ঘটনাটা নিয়ে আবার কি কোন কেস ফাইল করা যায়? এক্ষেত্রে রাস্ট্রপক্ষ মীরার দায়দায়িত্ব নেবে। এই কেসের কি কোন ইনভেস্টিগেশন হয়েছিল রূপম?
-কিছুটা হয়েছিল। যেই ইন্সপেক্টর করেছিলেন তাকে আমি চিনি। উনি নিজেও খুব আন্তরিক ছিলেন কেসের ব্যাপারে কিন্তু বাদী নিজেই কেস উথড্র করলে পুলিশের আর কিছুই করার থাকে না।
-রূপম, নতুন করে কেস করলে কতটুকু সফলতা পাওয়া যাবে সেটা খোঁজ নিয়ে আমাকে জানাও। দরকার পরলে আমরা উকিল ঠিক করে দেব।
-আপনি মীরার সাথে আগে কথা বলে দেখুন। আমি যেহেতু ডিবিতে আছি, আগের ইনভেস্টিগেশনের কাহিনী আমি ঠিকই বের করে নিয়ে আসব। দরকার হলে এটা আবার হবে। এত বড় পাপ বিনা বিচারে পার করতে দেয়া যায় না।
রূপমের সাথে বসে সেদিন প্রায় আরও আধাঘন্টা বিস্তারিত ভাবে মীরাকে নিয়ে কি করার যায় আলাপ করল নাবিলা।
নয়
রূপমের সাথে আলাপ করার একদিন পরেই নাবিলা মীরাকে ওর চেম্বারে ডেকে আনল। নাবিলা ভালোভাবে বুঝানোর পরেও মীরা কেন যেন ওর কাছে আর আসতেই চাচ্ছিল না। নাবিলা প্রায় জোর করেই ওকে ডেকে আনল। সোফায় বসিয়ে যথারীতি নাবিলা মীরাকে ওর জীবনের কাহিনী বলতে বলল। মীরা নাবিলাকে ওর ছোটবেলা থেকে প্রায় অনেক কিছুই বলল তবে পুরোটা না। মীরা কথা শেষে করতেই নাবিলা বলতে শুরু করলঃ
-সমকামিদের নিয়ে বেশ বড় কয়েকটা গবেষণায় দেখা গেছে যে, সমকামিদের প্রায় অর্ধ শতাংশেরও বেশি তাদের খুব কাছের বা পরিচিত কোন পুরুষ দ্বারা শারীরিকভাবে সহিংসতার কিংবা ভয়ংকর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। আর এই নির্মম নিগ্রহের সাথে স্ট্রেস পরবর্তী লক্ষণই হলো মেয়েদের সমকামিতার দিকে ঝুঁকে পড়া। তোমার সাথে কে এই জঘন্য ঘটনা কিভাবে ঘটিয়েছিল বিস্তারিত ভাবেই আমি সেটা জানি। আরেকজনের ভয়ংকর অপরাধের জন্য নিজেকে কেন শাস্তি দিচ্ছ তুমি? দায়ী তো যে পাপ করেছে সে, তুমি কেন হবে? অযথা নিজেকে কষ্ট দিয়ে, শাস্তি দিয়ে কি পেয়েছ তুমি এই জীবনে, বল? অন্যায় কে অন্যায় বলতে শেখ। এই জঘন্য অপরাধের বিচার পাওয়া তোমার নৈতিক অধিকার। তোমাকে এই নায্য অধিকার পাওয়া থেকে নিষ্ঠুর ভাবে ঠকানো হয়েছে।
মীরা অল্পকিছুক্ষনের মধ্যেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। এতদিনের জমানো সব চাপা কান্না, ক্ষোভ যেন একসাথেই বের হয়ে আসতে চাইল। নাবিলা কিছুটা ইচ্ছে করেই সময় দিল মীরাকে সব দুঃখ কষ্ট আর ক্ষোভ বের করে দেয়ার জন্য। মীরা কিছুটা ধাতস্থ হবার পর নাবিলা আবার শুরু করলঃ
-কিশোরী বয়সের মাত্র একটা ঘটনা দিয়ে সবছেলেদের একই কাতারে ফেলে দেয়া ঠিক হয়নি তোমার। সফিকের চরিত্র ভালো ছিল না। একটা মেয়ে হিসেবে তো সেটা আগেই টের পাবার কথা তোমার।
-আমি মা’কে বেশ কয়েকবার বলেছিলাম, কিন্তু মা বিশ্বাস করতেন না। মার সাথে আমার সর্ম্পক আমার আসল বাবা বেঁচে থাকতেই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বাবা বেঁচে থাকলে হয়ত আমি আর বাবা আলাদাই হয়ে যেতাম, সেই রকম সিদ্ধান্ত নেয়াও হয়ে গিয়েছিল।
-যে মেয়েটার সাথে তোমার আগে সর্ম্পক ছিল সে কি এই ঘটনা ঘটার সময় তোমার বাসার আশেপাশে থাকত?
-আপু আমাদের পাশের বাসায়ই থাকত।
-উনি তোমার দুর্বলতম মুহূর্তগুলির সুযোগ নিয়ে তোমাকে এই ভুল পথে টেনে নিয়ে গেছে। এখন সময় এসেছে ভুল পথ ছেড়ে আবার বাস্তবতায় ফিরে আসার।
-আপু কিভাবে সুযোগ নিল? আপু তো আমাকে খুব ভালোবাসতো, অনেক আদর করত, আমার সব কষ্টগুলি আপুর সাথে আমি শেয়ার করতাম। আমার মন খারাপ হলেই আমি আপুর কাছে ছুটে যেতাম। আপুকে আমি অনেক অনেক ভালোবাসতাম, এখন বাসি।
-প্রেম ভালোবাসা এইসব টার্ম নিয়ে তোমার ধারণা পরিষ্কার নয়। এই বয়সে এইসব বিষয়ে ধারণা পরিষ্কার থাকার কথাও না। নিজের সেক্সুয়ালিটি সম্পর্কে আরেকজনের কথায় প্রভাবিত হয়ে তুমি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও এটা বিরাট ভুল কিন্তু তোমার সমস্যার মুল কারন এটা নয়।
-তাহলে কোনটা ম্যাডাম?
-তোমার সমস্যার মূল কারন লুকিয়ে আছে তোমার ব্রোকেন ফ্যামিলি হিস্ট্রির মাঝে। চোখের সামনেই নিজের মা’কে দেখছ তোমার বাবা’কে রেখে অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়া করতে। তোমার মা নিশ্চয়ই তোমাকে ভালো মতো সময়ও দিত না! তোমাদের পরিবার আসলে ছিল একটা অসম্পূর্ণ পরিবার। একটু বড় হবার পর থেকেই বুকের মাঝে আদর, স্নেহ, ভালোবাসা পাবার সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা আর হাহাকার নিয়েই তুমি দিনগুলি একা একা কাটিয়েছ। বিশেষ করে এই টিনএজ বয়সে মেয়েদের বাড়তি কেয়ার আরও অনেক বেশি জরুরী। তোমার বাবা মারা যাবার পর এবং তোমার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের পর তুমি মানসিক দিক থেকে আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছিলে। ধর্ষনের ঘটনা ঘটার পর নিজের বাসা থেকে তুমি মোটেও সার্পোট পাওনি। এই সময়ে এই আপুই ছিল একমাত্র ভরসা। এই মেয়েই হয়ে উঠেছিল তোমার একমাত্র আইডল।
মীরা চুপ করে থেকে মনের ভিতরে সবকিছু মিলিয়ে দেখা শুরু করল।
-সফিকের বিচার না করার সিদ্ধান্ত কেন মেনে নিয়েছ তুমি?
-এটা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। এই কেস চালিয়ে গেলে মা বলেছিল যে তার সংসার ভেঙ্গে যাবে। মার পেটে তখন বাচ্চা। আর মা ছাড়া আমার আর কোন থাকার জায়গাও ছিল না। আমরা দুইজনই খুবই নিরুপায় ছিলাম।
-রফিক সাহেবের সাথে তোমার সর্ম্পক কেমন? উনাকে কি বাবা হিসেবে তোমার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের পর মেনে নিতে পেরেছিলে?
-কিভাবে মেনে নিব? আমার বাবা তো এর জন্যই মারা গেছেন!
-খুব কম সময়ে তোমাকে অনেকগুলি মানসিক স্ট্রেস সহ্য করতে হয়েছে। যদিও এই সব মানসিক চাপ তোমাকে সমকামি স্বভাবের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তারপরও তোমাকে এইখান থেকে বের হয়ে আসতেই হবে! এটা বিকৃত আর অস্বাভাবিক আচরন।
-এই ধরনের সর্ম্পক তো এখন সারা পৃথিবীতেই আছে, কেন এটা অস্বাভাবিক হবে?
-এই পৃথিবীতে কোটি কোটি প্রজাতির প্রজনন প্রকৃয়ায় বিপরীত লিঙ্গের দিকে আকৃষ্ট হওয়া ও প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তারের সুনিপুন ব্যবস্থাপনা এটাই প্রমাণ করে যে, মহান স্রষ্টা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ দিয়েই সব প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন। কোনভাবেই তিনি কাউকে সমকামি করে সৃষ্টি করেননি আর সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যময়তার মাঝে সমকামিতার মত নিরর্থক উদ্দেশ্যহীন কাজের কোনও স্থানই নেই। বিকৃত মস্তিষ্কের সমকামিরা এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে! কারণ এসব দেখতে গেলে তো আর তাদের বিকৃত কামনা চরিতার্থ করার আর সুযোগ থাকবে না। সুতরাং তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। আরেকজনের পাপের দায় নিজের ঘাড়ে চাপিয়ে এই রকম বিকৃত রুচি নিয়ে বাকিটা জীবন ধংশ করবে নাকি লাবনীর মতো আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে! তুমি কি সফিকের উপযুক্ত বিচার হোক এটা চাও না?
-আমি অবশ্যই এর বিচার চাই। কিন্তু এই বিচার করতে চাইলে মা অবশ্যই বাধা দিবেন। আমাকে রাখতে চাইবেন না। আমি একা একটা মেয়ে কোথায় থাকব? কিভাবে সব কিছু একা একা সামলাবো?
-তোমার এই সমকামিতা বোধ তৈরিই হয়েছে নিজের কষ্ট আর বিচার না পাবার ক্ষোভ বুকের ভিতর জোর করে অবদমিত করে রাখার জন্য। তুমি সব পুরুষদেরকেই ঘৃণা কর, প্রচন্ড ভাবে। সুষ্ঠু বিচার করে সফিকের সাজা হলেই এই ঘৃণা প্রায় পুরোটাই প্রশমিত হবে। তুমিও আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে শুরু করবে।
মীরা দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে নাবিলার দিকে তাকিয়ে আছে। ম্যাডাম ওর সত্যই ভালো চাইছে সেটা ও বুঝতে পারছে। বিচার হোক এটা ও নিজেও চায়, একদম মন থেকে চায়। কিন্তু কিভাবে সেটা সম্ভব?
-আমি তোমাকে এমন একজন পুরুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব যে শুধুই তোমার ধর্ষনের ঘটনা জেনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এর নায্য বিচার করতে চাইছে। হাতের পাঁচ আঙ্গুল যেমন সমান নয় সব পুরুষও এক নয়। তোমার জন্মদাতা বাবা যেমন পুরুষ ছিলেন, এই ছেলেটাও একজন পুরুষ। ধর্ষক পুরুষ নয়, তোমার সাহায্যকারী পুরুষ।
নাবিলা রিস্পেশনিস্টকে ফোন করে কিছু বলার সাথে সাথেই রূপম চেম্বারে এসে ঢুকল। রূপমের হাতে একটা ফাইল। একটু দূরে সোফায় বসা মীরাকে রূপম এখনও দেখতে পায়নি। হাতের ফাইলটা নাবিলা সামনে রেখেই দ্রুতই কথা বলা শুরু করে দিল রূপম-
-ম্যাডাম, এই নিন আগের কেসের সব ডকুমেন্ট। কালকে পুলিশই বাদী হয়ে কেস ফাইল করবে। আমাদের নিজেদেরই সেফ হোম আছে। প্রথমে এখানে কিছুদিন রাখার পর একটা মহিলা এনজিও'র সাথেও কথা বলে রেখেছি। ওর থাকার জায়গা নিয়ে সব প্রবলেম সলভড। আপনি শুধু আমাকে এই মেয়ের কাছ থেকে পারমিশনের ব্যবস্থা করে দিন। আমি সফিকের বিরুদ্ধে “বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০১৩” অনুযায়ী কেস ফাইল করতে বলেছি এবং এবার বাদী হবে পুলিশ। এই ট্রাইব্যুনালের নিয়ম অনুসারে বাদী বা ভিক্টিমের নিজস্ব কোনো আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজন নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯২ধারা অনুযায়ী ভিক্টিম সরকারের পক্ষ থেকে ফ্রী একজন আইনজীবী অবশ্যই পাবেন। আমি দেখতে চাই এইবার কে এই কেস থামাতে আসে!
মীরা অবাক হয়ে একবার নাবিলা, আরেকবার রূপমের দিকে দিকে তাকিয়ে আছে। একটা অপরিচিত পুরুষ কেন ওকে এতটা সাহায্য করবে! এও কি সম্ভব? পৃথিবীতে কি তাহলে আসলেও ভালো পুরুষ আছে? ওর ছোট্ট মাথায় সবকিছু যেন বড্ড তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে!
নাবিলা মীরার দিকে তাকিয়ে বললঃ
-মীরা, তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি কি চাও? তুমি যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাও তাহলে তোমার উচিৎ হবে সফিকের বিচার করতে দেয়া। এছাড়া তোমাকে পুরোপুরি সুস্থ করা খুব কঠিন হয়ে যাবে।
মীরা বেশ কিছুক্ষন মাথা নীচু হয়ে চুপ করে রইল। নাবিলার মনে হলো মীরা কোন কিছু নিয়ে বেশ গভীর ভাবে ভাবছে। হঠাৎ করেই মীরা মাথা দুইপাশে নেড়ে বলে উঠল-
-ম্যাডাম, আমি এত চাপ নিতে পারব না। আমার খুব ভয় লাগছে। আমাকে সবার সামনে এই ঘটনা বার বার বলতে হবে। এই চরম লজ্জা আর লাঞ্চনার কথা আমি কাউকেই বলতে পারব না, অসম্ভব!
-তোমার মনের ভিতরে যে বিশাল ভয় আর লজ্জা ঢুকে গেছে সেটা দূর করার দায়িত্ব তো আমার। আমি এখনই তোমার মন থেকে সব ভয় দূর করে দেব। আমার সাথে আস!
নাবিলা মীরাকে নিয়ে রুমের ভিতর সাদা চেয়ারটাতে বসাল। হিপনোটিক থেরাপী কি এবং কিভাবে কাজটা করা হয় সেটা ভালো করে বুঝিয়ে দিয়ে পরবর্তি পাঁচ মিনিটের মধ্যেই নাবিলা দ্রুতই মীরাকে সম্মোহন বা হিপনোসিসের পর্যায়ে নিয়ে গেল। অল্প একটু সময় পরে মীরাকে হিপনোসিসের স্তম্ভন স্তরে নিয়ে যেয়ে নাবিলা আসল কাজ শুরু করে দিল। কারও কোন বিষয়ে প্রচন্ড ভয়ভীতি থাকলে সেটা দ্রুতই কাটিয়ে দেয়ার জন্য হিপনোটিক থেরাপী খুব কার্যকরী এবং দীর্ঘস্থায়ী একটা পন্থা।
থেরাপী পর্ব শেষ হবার পরেই নাবিলা দেখল, রূপম যখন মীরার পাশে বসে কথা শুরু করল, মীরা লজ্জা ভয় সব কিছু পাশ কাটিয়ে রূপমের কাছে চোখমুখ শক্ত করে পুরো ঘটনার আদ্যপান্ত্য একদম বিস্তারিত ভাবেই বলা শুরু করল……..
দশ
পাঁচমাস পরের কথাঃ-
-মীরা এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে ম্যাডাম। আপনার কাছে আসতে এখন ভীষন লজ্জা পায়। লাবনীর সাথে আর যেন দেখা না হয় সেজন্য আমি ওকে নিয়ে একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিয়েছি। বেশ লক্ষী হয়ে গেছে মেয়েটা। আমি যা বলি সেটাই শুনে এখন। এই কেসের চার্জশীট খুব মারাত্মক দেয়া হয়েছে। আদালতে কনফেশন স্টেটমেন্টও দেয়ানো হয়েছে। আমরা চাইলে এই দেশে সবই সম্ভব! মীরার ধর্ষন মামলা জোর করে আগেরবার ধামাচাপা দেয়ার অপরাধের জন্য সফিকের সাথে রফিক সাহেবেরও বড় শাস্তি হবে। দুইটাকেই জামিন অযোগ্য মামলায় জেলে ঢুকানো হয়েছে। শুনানি প্রায় শেষ, কেসের রায় খুব তাড়াতাড়িই দেয়া হবে।
নাবিলা হাসিমুখে রূপমের দিকে তাকিয়ে আছে। এই ছেলেটাকে দেখলে কেউ বুঝবেই না এত শক্ত কঠিন অবয়বের ভিতরে এত নরম একটা মন লুকিয়ে আছে। মীরার ঠিক সমবয়সী একটা বোন আছে ওর। মীরার মতোই খুব কাছাকাছি একটা ঘটনা ঘটেছিল এই মেয়ের। সেজন্যই মনে হয় মীরার ঘটনা শুনে এতটাই সফট হয়ে গিয়েছিল রূপম। সম্ভবত ছোটবোনের কথা মনে পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনা আরেকদিন বলা যাবে!
-রূপম, মীরার মাকেও একটা পানিশমেন্ট দেয়া দরকার। এই স্বার্থপর মহিলার জন্যই মীরার অবস্থা এতদূর গড়িয়েছে!
-আমি চেস্টা করেছিলাম কিন্তু মীরা কিছুতেই মাকে কোন শাস্তি দিতে রাজি হয় নি।
-মীরা কি এখন ওর মায়ের সাথেই থাকছে?
-হ্যাঁ, তবে ওর মায়ের ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এখন বেশ দৌড়াদৌড়ি করছে এই কেস নিয়ে। আমিও এটা দেখে উনাকে আর কিছু বলি নি। হয়ত মেয়ের অবস্থা দেখে মনের ভিতরে অনেক পরিবর্তন এসেছে।
নাবিলা কেসের রায় বের না হওয়া পর্যন্ত মীরাকে দেখেশুনে রাখার জন্য রূপমকে ভালোভাবে বলে দিল।
এগার
আরও বেশ কিছুদিন পরের কথাঃ
নাবিলা ভার্সিটিতে ক্লাস নেয়া শেষ করে গাড়িতে করে বাসায় ফিরছে। বর্ষাকাল কেবল শুরু হয়েছে। সারা আকাশ কালো মেঘে ঢেকে আছে। ক্ষনে ক্ষনে ঝড়ে পড়ছে বাদল দিনের ঝুমঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টি কিছুটা কমে এসেছে দেখে নাবিলা গাড়ির জানালা নামিয়ে দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। ছিটেফোঁটা বৃষ্টির পানি ওর গায়েও এসে পড়ছে। ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার রোডের মাথায় ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ি থামতেই নাবিলা দেখল একজোড়া কপোত কপোতি এই বৃষ্টির মাঝেও ছাতা ছাড়াই হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাচ্ছে। ঠান্ডা বাতাসে মেয়েটার ভিজে যাওয়া খোলাচুল উড়ছে কিন্তু সেদিকে মেয়েটার একটুও ভ্রুক্ষেপই নেই। মেয়েটার একহাতে বড় একটা কদম ফুল। অন্যহাতটা শক্ত করে ছেলেটার একটা হাত ধরে এই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে অন্তরঙ্গ হয়ে হাঁটছে। শেষ দুপুরের হালকা সূর্যের আলো এসে মেয়েটার মুখের কোমল স্নিগ্ধতা স্পষ্টই ফুটিয়ে তুলেছে। আর সেই স্নিগ্ধতার মাঝে প্রেমের বহিঃপ্রকাশ চিনতে নাবিলার কোনই ভুল হলো না। একটা ছেলে মেয়ের মধ্যে প্রেম হতেই পারে। আর এই প্রেম আছে বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর! কাউকে ভালো লেগে যাওয়া, পছন্দ হয়ে যাওয়া কোন দোষের কিছু নয়, বরং তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মানুষের সৃষ্টির সময় দেয়া একটি সহজাত প্রবৃত্তি।
ছেলেটাকে নাবিলা চিনতে পারল না। কিন্তু এত পরিচিত মেয়েটাকেও আজকে হুট করেই যেন ওর কাছে একদম অচেনা একটা মেয়ে বলে মনে হলো! ট্রাফিক সিগন্যাল হুট করে ছেড়ে দিতেই গাড়ি আবার চলতে শুরু করল কিন্তু তারপরও নাবিলা মনে পরম প্রশান্তি নিয়ে এদেরকে বারবার দেখে যেতে লাগলো………….
কৃতজ্ঞতাঃ
১. বই – “সমকামিতা বিজ্ঞান এবং ইসলাম”
২. ইন্টারনেটে এই বিষয়ে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যসমূহ
৩. Book – “Hadith Sahih on behaviour of LGBT”
এই ব্যাপারে যারা আরও কিছু বিস্তারিত ভাবে জানতে চানঃ
https://www.focusonthefamily.com/socialissues/citizen-magazine/can-you-love-thy-neighbor-and-defend-marriage/love-thy-neighbor-part-1
https://rosariabutterfield.com/
http://www.oneby1.org/testimony-maria.cfm
https://www.amazon.com/All-Things-New-Lesbians-Lifelong/dp/1935769324
https://www.amazon.com/Free-Indeed-Womans-Victory-Lesbianism/dp/0931593581
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, সেপ্টেম্বর ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৩