রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম সেদিন।
হঠাৎ চোখে পড়ল, এক যুবক আর এক অসহায় রিকশাওয়ালার মাঝে প্রচণ্ড বাক-বিতণ্ডা চলছে। যা বুঝতে পারলাম, রিকশাওয়ালা যে ভাড়া দাবি করেছিল, তা সেই যুবকের কাছে বেশী মনে হয়েছে। তাই সে উদ্যত আচরণ করছে তার সাথে।
এক পর্যায়ে যুবকটি অশ্লীল শব্দের বাণ ছূঁড়তে শুরু করল এবং রিকশাওয়ালাকে ব্লেড দিয়ে সাইজ করার হুমকি দিল। রিকশাওয়ালা তার ভাষায় যা বলল তার সারমর্ম হচ্ছে : মারতে পারেন তবু গালি দিবেন না। আর আপনার ব্লেডকে আমি ভয় পাইনা । কারণ কোন অন্যায় আমার দ্বারা হয়নি। আমি তো সাধারণ একজন রিকশা চালক মাত্র।
কিন্তু যুবকটির কন্ঠে তখনও ব্যাঘ্রের উন্মত্ততা যেন। আর রিকশাওয়ালার কণ্ঠেও আপোষহীন প্রতিবাদের ধ্বনি।
এরই মাঝে মধ্যবয়সী একজনকে দেখা গেল উল্টো রিকশাওয়ালাকেই শাসাচ্ছেন। সে বললো, আমি তো অপরাধী নই। তখন সে লোক জবাব দিল-নিজের দোষে মার খেলে কার কী ক্ষতি ! হায়, দুর্বলের পক্ষ নেয়ার মত কেউ বুঝি নেই এই সমাজে।
আরও দুজন যুবককে হেঁটে যেতে দেখেছি, যারা এ দৃশ্য দেখে মিটিমিটি করে হাসতে হাসতে চলে গেলেন।
আমিও হাঁটছি আর বারবার পেছন ফিরে দেখছি। এক পর্যায়ে যুবকটি তার প্যাণ্টের বেল্ট খুলে রিকশাওয়ালাকে মারতে শুরু করল। তার আর্ত চিৎকারে হৃদয়টা হাহাকার করে ওঠল।
অসহায় এই আমিও স্বার্থপরের মত চলে গেলাম। কিছুই যেন করার ছিলনা। ভাবলাম, আমার সাথে যদি আর কেউ থাকত, তাহলে হয়তো এই অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাতে পারতাম।
স্বাধীন বাংলাদেশে এই অসহায় মানুষগুলোর কি বাঁচার কোন অধিকার নেই?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১০ রাত ১:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



