১
_____
নির্ঝরের সাথে আমার পরিচয় মাস খানেক আগে। রমনায় পহেলা বৈশাখের একটি অনুষ্ঠানে ও ছিল সেই অনুষ্ঠানের সংগীত শিল্পি আর আমরা আয়োজক। অনুষ্ঠানের আগে কেউ কাউকে দেখিনি। সেদিন শুধু একবার কথা হয়েছিল আর সেটা আমিই বলেছিলাম। বলেছিলাম আপনি খুব সুন্দর গাইতে পারেন। এর দু'দিন পরে আমাদের আবার দেখা হয় টিএসসিতে যদিও আমি ঢাবি'র ছাত্র ছিলাম না তবুও প্রতিদিন বিকেলে নিয়ম করে সেখানে আড্ডা দিতাম। নির্ঝর সেদিন কি যেন একটা কাজে এসেছিল আমাকে দেখেই হাই দিল, আমিও পাল্টা জবাব দিলাম। এরপর ঘন্টাখানেক গল্প, এরপর ফোন নাম্বার বিনিময়। রাত জেগে ফোনালাপ, আরো কত কি......
এক রাতে হঠাৎ করেই নির্ঝর আমার মেসে এসে উপস্থিত! এসেই বলল সকালে আমরা বিয়ে করছি। আমি অপ্রস্তুত ছিলাম, ও ছিল স্বাভাবিক। কিছু বুঝে উঠকে পারছি না। আমি সারাদিন টই টই করে ঘুড়ে বেড়াই আর সন্ধ্যা হলে মেসে বসে গানের নামে চিল্লা চিল্লি করে সময় কাটাই, আয় রোজগার বলতে কিছু নেই, বাবা টাকা পাঠায় আমি খরচ করি। আমার রাজ্যে আমিই ছিলাম রাজা, আমিই প্রজা। কোনদিন কাজ করে খাব এটা চিন্তাই করিনি। বাবা সরকারী কর্মতর্কা তিনি কিছু একটা ব্যবস্থা করবেন, তো আমার চিন্তা কিসের? আর নির্ঝর কেও আমি ভালবাসি কোনদিন বলিনি। ওকে ভাল লাগে ব্যাস এই টুকুই। কিন্তু ও কিভাবে আমাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল ঠিক বুঝলাম না। আর আমিও কিভাবে জানি শুধু হ্যা, হ্যা করে যাচ্ছিলাম। ওর কথার অবাধ্য হবার বোধটুকু তখন আমার ছিল না। তাই ওর পিছু পিছু মেস থেকে বেড়িয়ে এলাম। তখন রাত প্রায় ১০টা। নির্ঝর বলল কোথায় যাব আমরা? আমি বোকা বনে গেলাম। বললাম তুমিই জানো, আমি কিছু জানিনা। নির্ঝর খুব চটেগেল মনে হল। আমার হাত ধরে হ্যাচকা টান দিল। বাচ্চাদের মত আমি ওর হাত ধরে, ওর ইশারা মত হাটছি। সারারাত একটি হোটেলে ছিলাম। দু'টি সিঙ্গেল রুমে ছিলাম আমরা। সেখান থেকে সকালে বেড়িয়ে এলাম কমলাপুর, ট্রেনে করে আমাদের গ্রামে। নির্ঝর আমার কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়েছে। বাতাসে ওর চুলগুলো উড়ছে। মাঝে মাঝে চুলগুলো ওর ঠোটে চুমু দিয়ে যাচ্ছে, ঘুমের মধ্যেই ও চুলগুলো সরাচ্ছিল। একবার হাত বাড়িয়ে চুলগুলো সরিয়ে দেবার সাধ জাগল। না সরাই নি। বৈশাখি মেঘের সাথে চাঁদের লুকোচুরি খেলা থামাতে ইচ্ছে হল না, সারা রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছি শুধু নির্ঝরের জন্য, ওকে মন ভরে দেখার জন্য। আমি বুঝতে পারলাম হ্যা আমি ভালবেসেছি!! আমার মত ছন্নছাড়াও ভালবাসতে জানে??
ট্রেন থেকে নেমে দেখি বৃষ্টি। ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে। টুপটাপ শব্দ হচ্ছে। রাস্তায় কিছু বাচ্চা ছেলে ফুটবল খেলছে। কিছু লোক জটলা পাকিয়ে দাড়িয়ে আছে টং দোকানের ছাউনির নীচে। বৃষ্টির হাত থেকে বাচঁতে তারা আশ্রয় নিয়েছে এখানে। আজ নিজেকে ওই বাচ্চাগুলোর মতই সুখি মনে হচ্ছে। আমার খুব ইচ্ছে করছিল ওই ছেলে গুলোর সাথে ফুটবল খেলি। কিন্তু খেললাম না, ওর হাতটা ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। তারচে চুপচাপ দেখে যাওয়াটাই ভাল। শীতকাল নয় তবুও ঠান্ডা লাগছে। বৃষ্টির পানি ছিটে ছিটে আসছে গায়ে। নির্ঝর আরো কাছে চলে আসলো আমার, আমার বাহু বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে জংধরা চিনের চালের নীচে। আমার হাতটা খুব শক্তকরে ধরে আছে ও, ওর চোখের দিকে তাকালাম প্রচন্ত আবেগী চোখে দেখতে পেলাম নির্ভরতার ছায়া। "চলো বৃষ্টিতে ভিজি" বলতেই উচ্ছ্বাসে লাফ দিয়ে উঠল। দু'জনে মিলে মেঠোপথে ভিজতে শুরু করলাম হেটে চলছি সামনে আমার স্বপ্ন সাথে নিয়ে।
-: ২
বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে বাড়ি গেলাম, মা নির্ঝরকে দেখেই চিৎকার চেচামেচি শুরু করলেন, অনেক বুঝিয়ে শান্ত করলাম, পুরো ঘটনা মাকে বললাম তবে একটু মিথ্যে মিশিয়ে আর সেই মিথ্যেটা হল নির্ঝর আর আমার মাঝে এক বছর ধরে প্রেম চলছে। নির্ঝর দেখতে অনিন্দ সুন্দরী! তাই মা না করেনি কিন্তু বাবাকে মানানো যায়নি। তিনি সোজা বলে দিলেন বউ নিয়ে আলাদা সংসার করতে তিনি নির্ঝরকে ঘরে তুলবেন না। অনেকটাই জেদের বশে তিন দিনের মাথায় গ্রাম থেকে আবার ঢাকায় ফিরলাম। এর মধ্যে নির্ঝরের বাসা থেকেও ফোন করে নানা ধরনের হুমকি ধমকি দেয় কিন্তু আমরা দুজন ছিলাম অবিচল, কারো হুমকিকে ভয় পাইনি। রামপুরাতে ১৫০০ টাকায় একটি টিনশেড ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু করি আমাদের সংসার জীবন, নির্ঝর বাড়ি থেকে যে ক'টাকা এনেছিল সেটা দিয়ে কোন রকম সংসার সাজাই। পরে ভার্সিটির বড় ভাইদের ধরে একটা ইন্সুরেন্সে চাকরি নেই। চাকরীটা ছিল খুবই কঠিন দীর্ঘ সময় কাজ করতে হত। সকাল ৯টায় অফিসে যেতাম আসতে আসতে রাত ১০টা মাঝেমধ্যে আরও দেরী হত। ঘরে ঢুকে নির্ঝরের হাসি মুখ দেখামাত্রই সারাদিনের সকল ক্লান্তি দুর হয়ে যেত, শরীরে নতুন করে প্রাণশক্তি ফিরে পেতাম। প্রায়ই মাঝরাতে ঘুমথেকে উঠে নির্ঝরের কপালে ভালবাসার চিহ্ন একেঁ দিতাম ও বিরক্ত হত কিন্তু মানা করত না। বিয়ের পর ও কোনদিন বালিশে মাথা রেখে ঘুমায়নি, আমার বুকটাকেই বেছে নিত। খুব সুখেই ছিলাম। বছর ঘুরতেই আমাদের ঘর আলোকরে জন্মনিল আমার মেয়ে রূপকথা, সৌন্দর্যে ও ওর মাকেও ছাড়িয়ে গেছে!! মেয়েটাকে যখন প্রথম দেখি তখন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ ছিলাম আমি। বিধাতার কাছে আমার আর কিছুই চাওয়ার ছিলনা, রুপকথা আমার জীবনে পূর্ণতা এনে দিল। টিন শেডের বাসা ছেড়ে তিন রুমের ফ্ল্যাটে উঠলাম। খুব সুখেই কাটতে লাগল আমাদের সংসার। এভাবেই কেটেগেল আরো দুটি বছর, তবে আমার চাকরী জিবনটা ছিল দুর্বিসহ!!!! বড় কোন ডিগ্রী ছিলনা তাই সেই ইন্সুরেন্স কম্পানীতেই পড়ে ছিলাম। পারফমেন্স ভাল ছিল বেতন বাড়ল সেই সাথে বাড়ল কাজের চাপও ঘরে বউ আর মেয়েকে দেয়ার মত সময়টুকুও পেতাম না। এই নিয়ে নির্ঝরের অভিযোগের অন্ত ছিল না। দিন দিন ও অভিযোগের মাত্রা বাড়তেই থাকে। রূপকথা ছিল প্রচন্ড বাবাভক্ত, গভীর রাতে বাড়ী ফিরে দেখতাম মেয়েটা জেগে আছে ফ্রেশ হয়ে বাবা-মেয়ে একসাথে খেতাম পরে ও সাথে খুনসুটি করতে করতে ঘুমিয়ে যেতাম, নির্ঝররের সাথে একান্ত কথা বলার সময়টুকুও হত না। এটা নিয়ে এক সময়ে দুজনের মাঝে টুকটাক ঝগড়া হত, পরে ওকে বুঝিয়ে বলতাম, জবাবে কিছুই বলতনা শুধু বুকে মুখগুজে গুমরে কাদঁত কিছুক্ষণ। দুদিন পরে আরও ঝগড়া, আবারও কান্নাকটি আবারও ঝগড়া........................অফিসের কাজে মন বসাতে পারতাম না, খুব ইচ্ছা করত ওদেরকে নিয়ে কিছু দিনের জন্য বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসি কিন্তু ছুটি মিলত না। বছরে শুধু ঈদেই ছুটি পেতাম সে সময়টা বাবা-মায়ের সাথেই কাটাতে পছন্দ করতাম। কিন্তু নির্ঝর চাইত এ সময়টা আমরা একান্তে কোথাও কাটাই। তবে বেশী উচ্চবাচ্চ করতনা মুখ বুজে একে একে বিসর্জন দিচ্ছিল ওর স্বপ্নগুলোকে। এভাবেই কেটেগেল আরো দুটো বছর, রূপকথা চটপট কথা বলতে শিখেছে। রাতে আমার সাথে না খেয়ে একটা দিনও মেয়েটা ঘুমোতে যেত না। এরমাঝে আমার প্রতি নির্ঝরের অভিযোগের মাত্রা অনেকটাই কমে এসেছে। আমি ভাবতাম বলতে বলতে বিরক্ত হয়ে হয়ত এখন আর বলে না। বছর ঘুরে ঈদ এলো গ্রামে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি রমযানের শেষের দিকে এক রাতের ঘটনা.............নির্ঝরের ইচ্ছা এই ঈদটা আমরা কক্সবাজারে কাটাই, আমি বললাম না গ্রামে। কিন্তু ওর কথা হল প্রতি বছরই তো গ্রামে কাটাই এই ঈদটা নাহয়..... আমি রাজি হইনি। নির্ঝরও ছাড়ার পাত্র না। সেইরাতে আমাদের দুজনের মাঝে তুমুল ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে আমি নির্ঝরের গায়ে হাতও তুলি!!! চরম একটা ভুল করে ফেললাম, নির্ঝর কোন কথাবললনা সে রাতে কাদঁতে কাদঁতে ঘরে চলে গেল। আমি বসার ঘরে সোফায় বসে আত্মদহনে পুড়তে পুড়তে কাটিয়ে দিলাম রাতটি। খুব ভোরে রূপকথা এসে ঘুম ভাঙ্গালো....
- বাবাই মা কোথায়??
: কে আম্মু? ঘরে নেই??
- না!!!
চমকে উঠলাম!! এত ভোরে নির্ঝর ঘরে নেই!!! শোবার ঘরে গিয়ে দেখি সত্যি নেই নির্ঝর। জোরে বেশ করেকবার ডাকলাম: নির্ঝর? নির্ঝর?? নির্ঝর??? টয়লেটেও নেই। হতাশ হয়ে ডাইনিং টেবিলের সামনে একটা চেয়ার পেতে বসলাম। জগের নীচে চাপা দেয়া একটা কাগজের দিকে চোখ পড়ল, খুলে দেখি একটি চিঠি!! নির্ঝরের.............
অয়ন,
ইচ্ছা ছিল তোমার বুকের মাঝে মাথা রেখে কাটিয়েদেব পুরো জীবন, দুজনে মিলে রাতজাগা পাখি হয়ে সারা রাত বসে থাকব ব্যলকনিতে। আমাদের ছোট ছোট স্বপ্নগুলোকে প্রজাপতি বানিয়ে উড়িয়ে দেব সুখের রাজ্যে। সমুদ্র কিংবা পাহাড় সব সৌন্দর্য গুলো উপভোগ করব তোমার সাথে। পাহাড়ের চুড়ায় বসে চিৎকার করে সবাইকে জানিয়ে দিতে চেয়েছিলাম আমার ভালবাসার কথা!! যার চোখের গভীরতায় আমি হারিয়ে ফেলেছি আমাকে। কিন্তু হায়!! কিছুই হলনা, সংসারের স্বচ্ছলতার জন্য তুমি রাতদিন বিভোর ছিলে টাকার পেছনেই। আমার জন্য ব্যয়করার তোমার নূন্যতম সময়টুকুও ছিলনা।
অয়ন, ভালবেসে তোমার হাত ধরে আমি ঘর ছেড়েছিলাম, এটাকি আমার অপরাধ ছিল?? আমি তো বিলাসী জীবন চাইনি, অভাবের টানাপোড়নের মাঝেও অগাধ বিশ্বাস আর অফুরন্ত ভালবাসা পাওয়ার স্বপ্নে কাটিয়ে প্রতিটি দিন, তুমি কি পেরেছ আমার সেই চাওয়া টুকু পূরণ করতে?? লিখলে হয়ত অনেক প্রশ্নই লেখা যাবে কিন্তু এর উত্তর কি তোমার জানা?? যে স্বপ্ন দেখিয়ে তুমি আমাকে ঘর ছাড়া করেছিলে সেটা অধরাই রয়েগেল। কষ্ট নিওনা তোমার অনুপস্থিতি আমার জন্য ছিল অনেক পীড়াদায়ক নি:সঙ্গ জীবনটাকে দুর্বিসহ মনে হচ্ছিল বারবার। ঠিক এমন সময়েই শিপনের সাথে পরিচয়!! আমার প্রতি তোমার অবহেলাই শিপনের প্রতি ভালবাসার টান বৃদ্ধি করেছে। তাই চলে গেলাম..........
---- ভাল থেকো
চিঠিটা ভাজকরে বুকপকেটে রখে দিলাম। অনেক খোজাখুজি করেও নির্ঝরের সন্ধান পাইনি। মাঝে একদিন ফোন করে মেয়েটার সাথে কিছুক্ষন কথা বলেছিল, আমার সাথে কথাই বলেনি। পরে বাবা-মাকে ঢাকায় নিয়ে আসি, রূপকথাকে স্কুলে ভর্তি করাই। শুধু ওর মুখের দিকে তাকিয়েই দ্বিতীয় বিয়ের সিধান্দ নেইনি। বাবা-মেয়ের সংসার খারাপ যাচ্ছিল না, বাসায় একটা মোবাইল এনে দেই রোজ দু-তিনবার ফোন করি মেয়েটার সাথে কথা বলি, চাকরীটা ছেড়ে দেই অন্য একটা গ্রুপ অব কোম্পানীতে চাকরী নেই নয়টা-পাচঁটা অফিস, সপ্তাহে একদিন মেয়েটাকে নিয়ে বাইরে বেড়াতে যাই। সব কিছুই করছি কিন্তু সব হারিয়ে, ভাবতাম এই কাজগুলো আরো আগে করলে হয়ত...............
কিছুদিন পরে বাসায় একটা চিঠি এল আমার নামে, খুলে দেখি এটা একটা উকিল নোটিশ!!! নির্ঝর পাঠিয়েছে, রূপকথাকে ওর কাছে নিয়ে যেতে চায়!! কিন্তু এটা কি সম্ভব?? শুধুমাত্র মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়েই বেচেঁ আছি, নোটিশটি পড়ে পুরো পৃথিবী আমার এলোমেলো মনে হচ্ছিল। কিন্তু এত সহজে দমবার পাত্র নই, কোর্টে গেলাম, মামলা দাড় করালাম। বাকিটা আপনি জানেন, এখন যেভাবেই হোক রূপকথাকে আমার কাছে রাখতে চাই। গত তিন বছর মামলা চালাতে গিয়ে আমি প্রায় নি:স্ব এখন যদি মেয়েটাকেও................
উকিল সাহেব এবার আপনিই বলুন এখন আমার কি করা উচিত? রূপকথাকে কিছুতেই আমি ওর মায়ের কাছে থাকতে দেব না। ও আমার মেয়ে, আমার কাছেই থাকবে।
: আপনাদের সব ঘটনাই শুনলাম অয়ন সাহেব। আগামীকাল রায়, এতদিন মামলাটা লড়ে গেছেন। এখন দেখুন আপনার ভাগ্যে কি আছে, তবে যতটুকু মনে হচ্ছে রায়টা আপনার বিপক্ষেই যাবে। আবার এমনও হতে পারে যে মাসের কিছুদিন আপনার কাছে আর কিছুদিন আপনার স্ত্রীর কাছে থাকতে হতে পারে। যাই হোক, আপনি এখন বাসায় যান, সন্ধ্যা হয়ে এল, কাল সকালে কোর্টে দেখা হবে।
; আচ্ছা, আসি, খোদা হাফেজ।
পরদিন........
- বাবাই, ও বাবাই, ওঠো
; হুম, উঠছি, তুমি এত সকালে উঠলে কেন মামনি?
- আজ আমাকে নিয়ে তুমি কোর্টে যাবে না?? তাই আমি সেই সকালে উঠে নিজে নিজে ড্রেস চেন্জ করে রেডী হয়েছি। এখন তুমি উঠে মুখ ধুয়ে এসো, বুয়া টেবিলে নাস্তা দিয়েছেন।
মেয়ের কথা শুনে অয়ন হতভম্ব! এই পাচঁ বছরেই মেয়েটা জীবনের কঠিন অধ্যায়গুলোর সাথে কিভাবে মানিয়ে নিয়েছে!! কোর্ট, থানা, উকিলের চেম্বার, সব কিছুই এখন ওর কাছে স্বাভাবিক! অন্যসব পরিবারে বাচ্চাগুলো যখন ঘুম থেকে উঠতে চায় না, মায়ের সাথে খুনসুটি করতে করতে দিন পার করে দেয়, সেখানে রূপকথা...........আর কিছু ভাবতে পারে না অয়ন। ছল ছল চোখ নিয়ে বাথরুমে ঢোকে।
রিক্সায় চড়ে বাবা-মেয়ে কোর্টের দিকে যাচ্ছে, দুজনের চোখেই আতংক, অজানা শংকায় শংকিত ওদের ভবিষ্যৎ...........
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





