১.
জলকন্যাদের সৃষ্টিই হয় অশ্রু ঝরাতে
আঁখিপল্লবে টলমলো অশ্রুধারা, বুকের গহীনে জলন্ত ফিনিক্স
বিষাদীবাউলের একতারা আর নির্বাসিত ঢেউ এর কলতান নিয়ে
বাঁধে তারা বিরহ সঙ্গীত .....
দূর বাতিঘরের সুতীক্ষ্ণ আলোক রশ্নীতে জ্বলজ্বল করে
বেগুনী চোখ, অজানা সঙ্গীত আর স্বর্নালী হার্পের
বিমূর্ত সূরে দিকভ্রষ্ট হয় নাবিকের চাকা.....
পথ হারায় নাবিকের দল, এরিকের অভিশাপের ফল ....
নিসঙ্গ একাকী এরিয়েল বুঁদ হয়ে রয় মৌন নিসঙ্গতায় ...
২.
বনজ্যোস্নায় ডাকে যখন হরিয়াল
ধরিত্রীতে থাকে তখন অধরা সুখ
স্বপ্নের মায়াবীস্রোতে
ভেসে যায় জাগতিক দুঃখ
হেসে যায় কলকল
শুধু প্রেম
শুধু কথকথা
দুটি হৃদয়
বাঁধাহীন
উদ্দাম
তরী তীরহারা
বৃষ্টিফোটায় ঝরে বিস্ময়
প্রথম বাদল দিনে
ফোটে কদম্ব অনাঘ্রাতা কিশোরীর
পেলব কোমল ওষ্ঠে
অমৃতসুধা সাগরে নিমজ্জমান
ডুবন্ত ডুবুরী।
৩.
আহা! সে এক অপূর্ব সময়,
ক্ষনিক স্তব্ধ পৃত্থী, অবাক বিস্ময়
থেমে যাওয়া কোলাহল, দিক নিশ্চুপ-
মন্দিরে বাজে কাসর ঘন্টা
শঙ্খনিনাদ বিমূর্ত অপসূর।
দেবালয়ের নাচে আরতীর আলো
বিমুগ্ধ হৃদয়, আর্ত ভাঙ্গচুর।
রুমঝুম ঝুম ঝুম বর্ষারাণীর নুপুর নিক্কন
অবিশ্রাত অবিরাম-
সে মহা মোহকাল থাকুক চিরঞ্জীব
মৃত সঞ্জীবনী সুধাস্পর্শে জাগুক
ঘুমন্ত আগ্নেয়হৃদয়।
৪.
অলিন্দে জ্বলে জলন্ত ভিসুভিয়াস
আট কুঠুরেতে অচিন পাখি
ডানা ঝাপটিয়া মরে সেই পাখি
মনোবেড়ি তায় খুলিবার তিয়াস।
৫.
অচিন পাখি উড়ে গেছে কবে!
ফিনিক্স পাখির মত তারও আছে
সূর্যের কাছে কিছু ঋণ।
৬.
ফিনিক্স পাখির ঋণ
থাকে না তো সূর্যের কাছে কিছু
বিক্ষত হৃদয়ের দগ্ধে জ্বলে যে
বালকি; বরং কিছু ঋণ থাকে তার কাছে
যোজন দূরে বাস করে তোমাদের মার্তন্ড, প্রভাকর
সাধ্য কি তার, নিভাবার
অচিন ফিনিক্সের বুকে জ্বলে যে হুতাশন-
সেই বিভাবসু, ঢের ঢের প্রাঞ্জল
ঐ সূর্য্যের চেয়ে-
৭.
সূর্য নিভেছে সে অনন্তকাল
কলঙ্কিনী ফিনিক্স জেগে রয় একাকী
অসীমের বুকে,জলন্ত নিঃশ্বাস
ধুকে ধুকে জ্বলে অনিঃশেষ
অমৃতসুধার স্মৃতি জ্বাজল্যমান হুতাশন
ধিকিধিকি জ্বলে-
নিভন্ত সূর্য্যের কাছে নেই দাবী দাওয়া
বিক্ষত সূর্য্যেরও বুঝি ছিলো কত চাওয়া
তাই তো সে দিয়ে গেলো আলো
ক্ষীন, তবু সিন্ধ
যার পোড়াবার নেই সাধ্য
বেদনার অমানিশা রাত্রীরে তাই বসে জোনাকের উৎসব।
৮.
সূর্য্যের সাথে হাসি, সূর্য্যের সাথে বাস
নদীর সাথে কান্না আর জলে অট্টহাস
বালক তুমি কি হারিয়েছো পথ ?
নাকি দিকভ্রষ্ট নাবিক তুমি?
শকুন্তলা বা এ্যারিয়েলের সম্রাজ্যের
দিকচক্রবালের গোলকধাঁধার ফাঁদে
বাড়িওনা পা
জেট ইঞ্জিনে যায়না দেওয়া পাড়ি
ঐ আকাশের পথ
কিংবা যাদুকরী মায়াবিনী ঐ কোজাগরে
পৌছুবেনা তোমার রকেট লান্সার
ডাকিনী যোগিনী বা কামরুপ কামাখ্যার নাম
কি শোনোনি তুমি?
পতঙ্গ ছোটে আলোর পানে
আর
নির্বোধ কিশোরেরা খোঁজে
সূর্য্যের ছায়া
জানেনা তারা দূর্গম পথ
মানেনা তারা বাঁধা সরিসৃপ
জীবন নহে কোনো কিস্তিমাতের খেলা
বাজীমাৎ ভাসে স্বপনে বা আকাশ কুসুমে।
৯.
সে অনেক দিন আগের কথা
নীলচাষীরা তখন জীর্ন অনাহারে--
অত্যাচারীর নিপীড়নে জর্জরিত মন ও দেহ,
ঐ নীলকুঠিতে বাস করা রাক্ষসের দল
চুষে খেয়েছে তাদের অস্থি, মজ্জা, রক্ত-
নীলপরীদের ঘুম ভেঙ্গেছিলো সেই দিন
দ্বিধা করেনি তারা হতে খড়গহস্ত-
ছুঁইয়ে দিলো যাদুর কাঁঠি,
ঘুমের ছায়া গেলো কাঁটি,
নীল বিদ্রোহের সূর তুল্লো বীণাতারে--
আর তারপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর
ইংরেজ বেনিয়ার দল
পালালো লেজ তুলে--
তুমি আজ তারে বিবর্ন বলো !
১১.
মহাকালের ক্রান্তিলগ্নে ভস্মীভুত চারিদিক
রাজপথে নেমেছে আজ ছায়াপথ
মায়াপথের বন্দিনীদের আজ মুক্তি
তাই উল্লাস- দিকবিদ্বিগ
হাসে মহা ত্রাসে-
হঠাৎ মুক্তি- পরীর দল আজ
নেমেছে মেঘ হাতে।
কি আনন্দ কি আনন্দ কি আনন্দ
দিবা রাত্রী, নাচে মুক্তি নাচে বন্ধ!!
স্বেচ্ছা মৃত্যুপথে চলেছিলো নাবিকের দল
থমকেছে তারা-
হঠাৎ মুক্তির উৎসব রথ দেখে।
হারানো পথ ফিরিয়েছে কোন
অজান শক্তির শেষে-
পরীদের মেঘ হতে ঝরে মুঠো মুঠো জল
নার্সিসাসের দেবালয় হতে ঝরে অশ্রুপুস্প
নাবিক প্রেমিক দলের ফিরে আসা পথে।
১২.
চাঁদ আর পরীদের বাস ঐ সুনীল অম্বরে
রুপকথাদেরও সেথা বাস করা চলে
আকাশে কখনও মিলাই কি নদী?
সে বহে চলে ধরিত্রীর বুক চিরে নিরবধি
বনজ্যোসনায় ডাকে হরিয়াল
হরিনীরা হয় মন্ত্রছুট।
একই উৎসব তবুও যোজন দূর-
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২