চলেন দেখা যাক --- >
অক্ষয় কুমার , নানা পাটেকর , অনিল কাপুর অভিনীত ওয়েলকামের সাথে উল্লেখযোগ্য মিল নিয়ে রেডি একটি সাধারণ মাপের হিন্দি ছবি । সালমান খান (প্রেম) সাঞ্জানার ( আসীনের) প্রেমে পড়েছে । আসিন , যে কিনা ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তির মালিক তার লোভী মামাদের চোখে ধুলা দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে । এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী সালমান খান ওর মামাদের একটা শিক্ষা দিয়ে ভাল করে । এই হল স্টোরি । অনেক সিন ছিল যেখানে ওই সিনটা প্রচুর হাসির হতে পারত , সেখানে ওই সিনটা শুধুই বোরিং লেগেছে । যেমন ধরুন ক্লাইম্যাক্সের একটা ফাইটের কথা । সালমান তার শার্ট খুলে ফেলেন । কিন্তু কিছুক্ষণ পরই দেখা যায় ওইটা শুধু একটা কল্পনা ছিল । আর আপনি কিছুক্ষণ সময়ের জন্য ওই সিনে কি ঘটেছিল তা নিয়ে হতভম্বের মত বসে থাকেন মুখে একটা " এহহহহ ! ?? " নিয়ে । সোজা কোথায় বলতে গেলে , রেডির কমেডি সিনগুলো মধ্যমানের এবং কোন কোন সময় নিম্নমানেরও । যা মজা পাবেন তার সবটুকুর ক্রেডিট দিতে হবে সালমান , পারেশ রাওাল এবং মাহেশ মাঞ্জরেকারকে । ছবির শুরু হয় হাসি দিয়ে তারপর মাঝে সেই ধারা থেকে সরে এসে হাসিটা একটু নিচে নেমে যায় । এবং প্রথম হাফের শেষের দিকে গিয়ে আবার একটু হাসির দেখা মিলে । আপনি তখন দ্বিতীয় হাফে হাসার ভাবনায় থাকেন এবং আপনার প্রত্যাশা বেড়ে যায় । তখন দ্বিতীয় হাফ অনেক ভাল করে প্রথম হাফের তুলনায় ।
অনেক খারাপ দিক যেমন আছে তেমনি ভালও আছে । তার অন্যতম অবশ্যই সাল্লু মিয়া । সাল্লুর ক্যারেক্টার হল আগের কালের গোবিন্দর ক্যারেক্টারের মত ( দুলহে রাজা , আঁখিয়ও সে গুলি মারে , খুললাম খুল্লা প্যায়ার কারেগা ) । তবে তার সাথে যোগ করে নিন সালমানের ডায়লগ দেয়ার বিশেষ কায়দা , মাসের পর মাস জিম করা একটা বডি এবং অভিনয়ের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ একজন নায়ককে । আপনি পেয়ে গেলেন রেডি এর সালমানকে ! একটি মার্ভেলাস বডি , কমেডি করার স্বভাবজাত অভিনয় দিয়ে এক সালমানই রেডিকে বহুদূর নিয়ে গেছেন । সালমানকে এই ছবিতে তার অভিনয় সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি না হলেও অনেক বেশি হ্যান্ডসাম লেগেছে । বয়স দিন দিন বাড়ছে না কমছে এই লোকের তা আল্লাহ্ই জানেন ! পারেশ রাওালের সাথে সালমানের কেমিস্ট্রি ছবির কমেডির মান একটু বাড়িয়েছে । আসিন সহ বাকি সবার অভিনয় ঠিকমতই ছিল তবে আখিলেন্দ্রা মিশ্রা এবং শারাত সাক্সেনার চরিত্র নিয়ে কিছু কথা আছে ।
প্রথম হাফে তাদেরকে অনেক বিপদজনক ভাবে তুলে ধরা হয় এবং শেষ হাফে তাদেরকে দেখানো হয় একেকটা ইডিয়টের মত । একটা চরিত্রের এই হঠাৎ পরিবর্তন স্ক্রিপ্টের পরিশ্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে । অজয় , সাঞ্জায় , কাঙ্গনা , জেরিন খান এবং আরবাজ খানের অথিতি চরিত্র অনেক মজার তবে ছবি শুরু হবার সাথে সাথেই চরিত্রগুলোর উপস্থিতি একটু অন্যরকম লেগেছে । আরো পরে চরিত্রগুলোকে উপস্থিত করতে পারলে হয়তো আকর্ষণটা একটু বাড়তে পারত । তবে যেভাবে চরিত্রগুলো উপস্থিত হয়েছে তা নিয়ে কোন অভিযোগ নেই ।
গান ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে । ক্যারেক্টার ঢিলা এবং ক্যালেন্ডার সং ( ধিঙ্কা চিকা ) একসাথে এই মাসের টপ চার্টের শীর্ষে বসে আছে । সাথে মেরা আদা ভি , যা গেয়েছেন রাহাত ফাতেহ আলি খান , মধ্যমানের গানের পর্যায়ে পড়ে । হামকো প্যায়ার হুয়া একটি অন্যতম রোমান্টিক গান হিসেবে জায়গা করে নিলো বলিউডে তার অসাধারণ সুর এবং কথা দিয়ে ।
ডাবল মিনিং জোকস গুলো অনেক হাস্যরসপূর্ণ কিন্ত যখন হাসাতে পারে না তখন ভালভাবেই ফেল মারে ।
ডায়লগ ছবির পজিটিভ দিকের ওজোন বাড়াতে সাহায্য করে । সে ক্ষেত্রে রেডির একটি ডায়লগ উল্লেখযোগ্য " কয়ি তো রুকো " ।
একশ কথার এক কথা , রেডি পুরোপুরি একটা সালমান নির্ভর ছবি । আপনি একজন সালমানের চূড়ান্ত ভক্ত হলে এই ছবি আপনার জন্য অনেক কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে । আর সালমান বিদ্বেষীরাও এই ছবি দেখে একটু ধারণা নিতে পারেন যে " সাল্লু ক্যান এক্ট শালা " । অনেক দিন পর সালমান একটি টোটাল মারামারি নির্ভর ছবিতে অভিনয় না করে একটু রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন যার মধ্যে স্টার মার্ক নিয়ে পাস করেছেন । তাই আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে কিছু দেখতে চাইলে আমি রেডি সাজেস্ট করব শুধু সালমান , পারেশ রাওাল , গান , কিছু মজার সিন , ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং আবার সালমানের জন্য ।
পার্সোনাল রেটিং : ৫ এর মধ্যে ২.৫
© নীল
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১১ সকাল ১০:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



