লন্ডনে ১০০ ছোকরা পোলাপানকে নাকি ৫০০০ "প্রশিক্ষিত" পুলিশ কিছু করতে পারে নাই । পুলিশ বলেছে " এধরনের পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আমাদের অভ্যাস নেই " আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি বলেছেন " পুলিশ অনেক বীরের মত কাজ করেছে । যথা সম্ভব চেষ্টা করেছে " এত চেষ্টা করার পরও যদি এই লুটতরাজ বন্ধ করতে না পারে তাহলে কিসের পুলিশ । আর পুলিশের প্রধানের কাছে প্রশ্ন , "এই ধরণের পরিস্থিতি সামাল দিয়ে অভ্যাস না থাকলে এতদিনের প্রশিক্ষন কি "হিন্দি চুল" ফালানোর জন্য ?" তাহলে পুলিশকে ঘরে চুড়ি পরিয়ে বসিয়ে দেয়া হোক । আর বাংলাদেশ থেকে পুলিশকে নেয়া হোক , এই ধরণের পরিস্থিতি সামাল দেয়া আমাদের পুলিশের নিত্যদিনের কাজ কারবার । "কালা ফালা" কই যাইব একটা লাঠির বারি খাইলে । আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি এবং প্রধানমন্ত্রি সহ ইউ.কে এর বাকি সব মন্ত্রি ফন্ত্রিকে বলছি "কচুগাছে ফাসি দে ।"
ফেসবুকে একজন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে তথ্য পেলাম । উনার ভাষায় নিচে দিয়ে দিলাম ,
" ঘটনাটার শুরুই যেন করেছে পুলিশ। আর এখন পুরো লন্ডন পুড়ছে। তিন দশকের মধ্যে এমন দেখেনি কেউ। দাউ দাউ জ্বলছে ফার্নিচার, কাঠ পুড়ে কয়লা হয়ে যাচ্ছে, পুড়ছে বাচ্চাদের পড়ার ঘর ও পুতুল। আগুনে মোবাইল ওয়্যারহাউস জ্বলছে। লন্ডনের লুটেরারা সব নিয়ে গেছে। সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে নবীন বণিক থেকে শুরু করে শতবর্ষের পুরোনো বনেদি ব্যবসা ও বাড়ি। গতকাল তা ছড়িয়ে পড়েছে বিলেতের দ্বিতীয় শহর বার্মিংহাম ছাড়াও নটিংহাম, উইলবার হ্যাম্পটন ও ব্রিস্টল অবধি। সামনে অলিম্পিক, আর একি অবস্থা! কে এ শহর রক্ষা করবে?
৭ আগস্ট পুলিশ যখন শুধু সন্দেহের কারণে মার্ক ড্যাগানকে গুলি করে, তখন সে ক্যাবে করে কোথাও যাচ্ছিল। কিন্তু সে একটি বন্দুক নিয়ে গুলি করতে যাচ্ছে সন্দেহে তাকেই গুলি করে মেরে ফেলা হয়। এখন শুনছি, তার কাছে কোনো বন্দুক ছিল না। আর এ বিক্ষোভেই টটেনহামে আগুন লাগল। কিন্তু এসব গ্যাংয়ের খবর তো পুলিশের ভালোই জানা। তাদের কাজ নেই, খাবার নেই, পড়াশোনা নেই, বিনোদন বলতে অনেক রাত পর্যন্ত রাস্তায় ঘোরাঘুরি। বেকার টিনএজারদের কাছে এসে গেছে ড্রাগ ও ড্যাগার। মারধর থেকে ছিঁচকে চুরি—সবই মৌচাকের মতো ঘনবদ্ধ হয়ে উঠেছে তাদের এলাকায়। আর ঝামেলার সময় পুলিশের দেখা নেই।
আজ মনে পড়ছে এলথামের প্রতিশ্রুতিশীল ১৮ বছরের কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ স্টিভেন লরেন্সের কথা। সে স্থপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখত। কিন্তু তা কোনো দিনই বাস্তব হলো না বর্ণবাদী পাঁচ শ্বেতাঙ্গ যুবকের আক্রমণে। ১৯৯৩ সালে বাসের জন্য অপেক্ষারত স্টিভেনকে তারা শুধু তার গায়ের রঙের কারণে কুপিয়ে হত্যা করে। আঠারো বছরে কত কী হলো। কিন্তু পুলিশের একপেশে অনুসন্ধানে অভিযুক্ত তিনজনের আজ অবধি কোনো সাজা হয়নি। নানা আক্ষেপ মানুষের মনে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে তাই নিয়ে পুলিশ-মানুষে লাগালাগি চলছিল। "
"ঝলাম, পুলিশও যে মানুষ! কিন্তু ভুল স্বীকার না করে তা কেন্দ্র করে আগুন লাগানো ও ভাঙচুরকেই গুরুত্ব দিয়ে দণ্ডিতকেই দায়ী করা কি সঠিক হলো? প্রথমত এসব কারণেই খেপে গিয়েছিল এলাকাবাসী। মার্ক ডেগ্যানের মৃত্যুতে সবাই মিলে যখন স্থানীয় পাদরির পরিচালনায় শোক জ্ঞাপন করছিল, তখনই তারা কথা প্রসঙ্গে স্থানীয় পুলিশদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে সেখান থেকেই শুরু হয় বিক্ষোভ ও ভাঙচুর। এ অনেকটা আমাদের দেশে ট্রাক এসে মানুষ পিষে দিয়ে গেলে যেভাবে স্থানীয়রা ভাঙচুর শুরু করে, সে রকম। ব্যাপারটি টোটেনহামের অশ্বেতাঙ্গ-অধ্যুষিত এলাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু যখন মানুষের ঘরবাড়ি আর সহায়-সম্পত্তি দাউ দাউ করে পুড়ছিল, তখন সবাই বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করল পুলিশের এক অদ্ভুত নিষ্ক্রিয়তা। সে লুটপাট ও ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল একটানা তিন দিন ধরে। "
"একে একে লুইশাম, ক্রয়ডন, এনফিল্ড, নিউহাম, পেকাম, বেথনাল গ্রিন পর্যন্ত তা ছড়িয়ে পড়ল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আগুন জ্বলছে, লুটপাট চলছে—আশপাশে একটি পুলিশ নেই। খবর পেয়ে এক-দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ আসছে। আর যখন পুলিশ আসছে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছে। শহরটা কার বোঝা যাচ্ছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, নগর পিতা মেয়র হলিডেতে। পুরো লন্ডন লুটেরাদের দখলে আর তারা নিরোর মতো বাঁশি বাজাচ্ছেন বিলেতের কোনো বেলাভূমিতে। পুলিশের সামনে ব্যাংকের ক্যাশ মেশিন ভাঙছে মানুষ, টেসকো ডেবেনহাম লুট করছে। এরা পরিণত বয়সেরও না। বেশির ভাগেরই বয়স আঠারোর নিচে। এখন গ্রীষ্মের ছুটি। কাজ নেই। সুবিধাবঞ্চিতদের সব সুবিধা কাটতে কাটতে এমন অবস্থা যে তারা আজ রাস্তায় নেমেছে। লুটেরাদের মাথায় হুড, চোখে গগলস, পায়ে ভারী বুট। হাতে রড আর পকেটে মোবাইল। ওই মোবাইলেই টুইটারে টুইটারে তারা মেসেজ পাঠায়।"
"এখন পর্যন্ত বাঙালি-অধ্যুষিত এলাকা বলতে বেথনালগ্রিনের টেসকো পর্যন্ত লুট হয়েছে। শুনছি আমাদের হোয়াইট চ্যাপেলের সোনা ও শাড়ির দোকান লুট করতে পারে। আগে থেকেই আমরা ইংলিশ ডিফেন্স লীগের বর্ণবাদী কার্যক্রমের হুমকির মুখে ছিলাম। আজকের দিন আমাদের জন্য বড়ই দুশ্চিন্তার।
এত বড় কাণ্ড হয়ে গেল, প্রধানমন্ত্রী হলিডে থেকে টুঁ শব্দ করেননি। ঠিক নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ভ্র-এর ফোন হ্যাকিং কেলেঙ্কারির সময় যেমন সাউথ আফ্রিকা থেকে করেছেন। তখন তার ঘনিষ্ঠ সহচর কোলসন আর রেবেকা ব্রুককে নিয়ে মহা চাপে পড়ে একসময় দেশে ফিরে আসেন। আজ তিনি দেশে—কিন্তু কী করবেন, কিছু করবেন কি!"
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



