somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুষ্টু হাওয়ায় ওড়া এলোমেলো সুখ

৩০ শে জুন, ২০০৮ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

. . . . 'যেখানে সীমান্ত তোমার,সেখানেই বসন্ত আমার. . .'
-ঘুমটা হুট করে ভেঙে গেল।ব্যাপারটা বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগল।মোবাইল বাজছে।এই রিংটোন?ধড়মড় করে উঠে বসলাম।এটা তো তার রিংটোন হিসেবে রেখেছিলাম-তার খুব প্রিয় গান।সে ফোন করেছে?ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না।
ভুল ভাবছি কি আমি?নাহ!মোবাইল স্ক্রিনে তো ওরই নাম!রিসিভ করব কিনা ধন্ধে পড়ে গেলাম।খুশি হব নাকি কাঁদব-ঠিক কি করা উচিত-বলা যায় একরকম ভ্যাবাচেকাই খেয়েছি।

সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতেই কলটা মিসড কল হয়ে গেল।আজ ছুটির দিন।জানালার ফাঁক গলে ভোরের আধফোটা আলো উঁকি দিয়ে যাচ্ছে।মনে পড়ে,আগে ছুটির সকালগুলোতে ঘুম ভাঙত তার কল পেয়ে।এমনিতে আমি ফজরের আজানের সাথে সাথেই উঠি।কিন্তু ছুটির দিন কি যে হয়।নামাজটা পড়ে আবার একটু শুতে যাই,তারপর চোখে ভিড় করে রাজ্যের যত ঘুম!ঘুমঘুম চোখে ওর কল রিসিভ করা-ব্যাপারটার মাঝে একটা আহাদ আহাদ ভাব থাকত।আমার কখনও মনে হত না,আমরা আলাদা।ওর সাথে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে,তাও বেশ অনেকটা সময় কেটে গেছে-যেটা আমি কখনও ভাবিনি।সে আসলেই আমার খুব কাছের একজন ছিল।আমিই হয়ত তার কাছের কেউ হতে পারি নি।

কলব্যাক করব কিনা যখন ভাবছি,আবার মোবাইল বেজে উঠল।
-হ্যাল্লো!
ঘুমঘুম কন্ঠে বললাম।
-কি ব্যাপার?ঘুম ভাঙে নি?
-উঁহু!
যেন সব কিছু আগের মতই আছে।
-সেই স্বভাবই রয়ে গেছে?
-কি করব বল,তুমি যদি কল করে করে ঘুম ভাঙাতা তাইলে হয়ত অভ্যাসটা বদলালেও বদলাতে পারত।
-রাগ করছ?
-নাহ!
-অভিমান?
-নাআ-হ!
একটু খোঁচা দিয়ে বললাম।
-তোমাকে ঘাঁটাব না,তোমার অনুভূতিগুলো কখনোই আমাকে বুঝতে দাও নি।আমি জানি,আমার সামনে আমি যেমন তোমাকে দেখছি,ভেতরে ভেতরে আসলে. . .
ওর কথা শেষ করতে না দিয়েই জানতে চাইলাম-
-আসলে সত্যি করে বল তো,আমি তোমাকে বুঝতে দেই নি নাকি তুমিই আমাকে বুঝতে চাও নি-কোনটা?
-আরে আরে!ঝগড়া করবা নাকি?
তাড়াতাড়ি বলে ওঠে ও।
আমি হেসে দেই।অন্য সময় হলে বা আগে হলে কথার পিঠে কথা বলতাম।আজ ইচ্ছে হল না।কতদিন পর কথা হচ্ছে!সে যদি আসলেই বুঝত!
-কি হল?
মোবাইলের ওপাশ থেকে প্রশ্ন।
-ভাবছি,কোন কাজে জাঁহাপনার আমাকে দরকার হল এতদিন পর?
-কেন?অকাজে কল করতে পারি না?
আমি চুপ থাকি।সে নিজেও চাপা স্বভাবের মানুষ।খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কথা বের করতে হত।কাজ ছাড়া তেমন একটা কল করত না;অবশ্য ওই যে ছুটির সকালের কথা বললাম,সেটা বাদ দিয়ে।
-এত চুপচাপ হয়ে গেছ কেন?
আবার প্রশ্ন করে ও।
-তুমি এত প্রশ্ন করছ কেন?যখন সুযোগ দিয়েছিলাম,তখন তো কর নি!
ও প্রান্ত থেকে কোন জবাব আসে না।কিছুটা সময় দুইজনেই চুপচাপ।
-শোন!
সে বলে।
-কি?
-তোমার বিছানার পাশের জানালাটা কি খোলা?
-কেন বল তো?
-মনে আছে?এক জোছনা রাতে হঠাৎ কল করে তোমার সে কি চেঁচামেচি. . .
-হুমম।
-তুমি বলছিলা,আল্লাহ!আমার ঘর তো জোছনার আলোতে ভেসে যাচ্ছে!
-হুমম।
-যাক গে! যা বলছিলাম,জানলাটা কি খোলা?
-হুমম খোলা।
-একটু জানলার কাছে গিয়ে দাঁড়াবে?
আমি জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।কাল রাতে ঝুম বৃষ্টি হয়ে গেছে।ঝিরঝির একটা বাতাস এসে লাগল চোখে-মুখে ;যেন আদর করে ছুঁয়ে গেল।
-কি বলতে চাচ্ছি বুঝতে পারছ?
আবারও ওর প্রশ্ন।এবারও আমি চুপ।
আমি তো তখন ডুবসাঁতার কাটছি ওর গুনগুনগুন সুরের জলে. . . . .

জানলা খোলা দেখে থমকে দাঁড়াল
দুষ্টু হাওয়ায় ওড়া এলোমেলো সুখ
আমার কানে কিছু বলতে এল সে
হাতছানি তার অজানায় বহুদূর।।

শাওন মেঘের দেওয়া বৃষ্টি যেখানে পড়ে
ভেজা সেই মাঠে গান গাওয়া
টুকরো সুখের দেওয়া একটু আদর ছুঁয়ে
অভিমান জলে ভেসে যাওয়া।
বলতে না পারা কথা বলে গেল সেই সুখ
বলতে না পারা কথা বলে গেল সেই সুখ
ভাসল আকাশ অজানায় বহুদূর।।

তোমার আমার কাছে সুর আসে মাঝে মাঝে
ফিরে আসে সেই চেনা হাওয়া
বলে যায় আজো যেন কিছুটা সময় পাছে
পড়ে আছে কত চাওয়া পাওয়া
যতদিন পার তুমি বুকে টেন এই সুখ
যতদিন পার তুমি বুকে টেন এই সুখ
ডাকবে আকাশ অজানায় বহুদূর।।

Click This Link


৪১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×