র্তমান সরকারের বেনিফিসারী গণতন্ত্র ও ভারতের সহযোগীতা
২০১২ সালের ৯ই এপ্রিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করলেও আইনি জটিলতার অযুহাতে আজ অব্দি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে যেতে পারেনি। ইতি মধ্যে সরল-গরলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ করলেও ‘নিবার্চন কমিশন ও সরকারের প্রতি জনমনে চরম অসন্তোষ রয়েই গেছে। এরই মধ্যে কাকতলীয় ভাবে ফ্রেরুয়ারী থেকে জুনের মধ্যে উপজেলা নির্বাচনের ঘোষনা দিয়েছে-নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের এই তেলেসমতি কারবারে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- নির্বাচন কমিশন কি সত্যিই স্বাধীন? না-কি সরকারের তল্পীবহনে -ভানুমতির খেলা খেলছে!
বিশেষজ্ঞদের ধারনা ‘সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ‘দশম জাতীয় সংসদ নিবার্চন সর্ম্পকীত জনরোষ নিবারনের জন্যই তরি-ঘরি উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারের উচ্চ মহলের ধারনা, এতে জনরোষ কিছুটা হলেও কমবে; শহরের না হলেও গ্রামের খেটে খাওয়া আনারী জনসাধারন এই নির্বাচনকে গিরে গল্প-গোজব, চা-পান খেয়ে জাতীয় নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার শোক-তাপ ভুলে যাবে। এতে সরকারের ভাবমুর্তি অনেকাংশেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। উপজেলা নির্বাচনের একাধিক ধাপ প্রসঙ্গে অনেকেই ধারনা ‘বিগত পাচঁ-পাচঁটি সিটি কর্পোরেশনের মতই উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপটি হবে মূলতঃ পরীক্ষা মূলক। জন রায় পরীক্ষার জন্যই সরকার এই ধাপ পর্যায়ে নির্বাচনে যেতে চাচ্ছে। সরকার মনে করছে, বিরুধী ১৮দলীয় জোট যদি নির্বাচনে না যায়-তবে তারা একচাটিয়া সরকার গঠন করে মৌলবাদ ও সন্ত্রাস দমনের অযুরে জামাত-শিবিরসহ বিরুধী দলকে ব্যাপক দমননীতি ও ধর-পাকড় করে দেশের সামগ্রীক পরিস্থিতি কন্ট্রোলে আনবে। তা‘ছাড়া এটা সর্বত ভাবেই প্রমানিত হয়েছে যে, একমাত্র জামাত-শিবির ছাড়া ১৮ দলের অন্যান্য সকল দলের নেতাকর্মীরাই অনেকাংশেই সুযোগসন্ধানী, সুবিধাবাদী ও সরকার বিরুধী আন্দোলনে আনারী। একমাত্র জামাত-শিবিরই সরকারের পথের অন্তরায়, এবং এদের দমন করতে পারলেই যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার সহজ হবে। বিচারে কারিশমা প্রচার ও প্রসারে জনমত পক্ষে, ও শাসন ব্যবস্থার স্থায়ীত্ব সম্ভব। সরকার সুযোগ-সুবিধা অনুয়ায়ী বিরুধী দলের সুযোগ-সন্ধানী নেতাদের উপর গণপ্রতিনিধি অধ্যাদেশ আইন (সংশোধিত ২০১৩) প্রয়োগেরও পক্ষপাতী।
আর যদি বিরুধী দলীয়জোট নির্বাচনে যায়-সেই ক্ষেত্রে সরকার দশম জাতীয় সংসদ নিবার্চনের বৈধতা দাবি করে আর্ন্তজাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্ঠা কববে, এবং টানা পাচঁ বছর বিনা বাধায় সরকার পরিচালনা করবে।
অনেকেই মনে করেন, বর্তমান সরকার মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় রাজনীতির ধাতে কূটনৈতিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ব্যতি-ব্যস্থ, এবং অনেকটাই সমাজতান্ত্রিক ব্লকের ব্যানারে রাজনীতি করতে ইচ্ছুক। তাই, সহজ-সরল পথে না হেটেঁ চাতুরতার সাথে কাজ উদ্ধারে বিশ্বাসী। যদিও ইতি মধ্যে বেশী কিছু দেশ দশম জাতীয় সংসদীয় সরকারকে অভ্যর্থনা ও সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে সর্বাত্বক সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। অভ্যথর্না জানানো এই সকল দেশের সব কটি দেশই সমাজতান্তিক শাসন ব্যবস্থায় বিশ্বাসী-একমাত্র ভারত ছাড়া। এ-কথা আরো ঘুর্ণিভূত-বর্তমান সরকারের কমিউনিষ্ট সংশ্লিষ্টতার কারনে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনার পিতৃ আদর্শে ফিরে যাওয়া বক্তব্যও অনেকটা ধাঁ-ধাঁর সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত ভারত ছাড়া বিশ্বের অন্য কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ভাল চোখে দেখছেন না। আবার এ কথাও সত্য যে, ভাল চোখে না দেখেও উপায় নাই? কারন গণতান্ত্রিক বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই বাংলাদেশ থেকে বৃহত্তর সুবিধা নিয়ে থাকে। ওল্টারনেটিভ ভাবেই তারা সমাজতান্ত্রিক ব্লক বিস্তারের বিরুধী। কাজেই সত্য কিম্বা মিথ্যা এই দুই শব্দটিকে পাশ কাঁটিয়ে তারা তাদের সুবিধা আদায়ের পক্ষপাতিত্ব করবে এটাই স্বাভাবিক। বর্তমান সরকারও এই দূবর্লতাকে পূর্নমাত্রায় ভোগ করে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতায় থাকতে চায়।
ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে বিশ্বাসী বন্ধু। কিন্তু জন রায় উপেক্ষা করে কেন ভারত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সমর্থন করল; একথা ভাববার বিষয়। যদিও ভারত বার বার বলছে, অঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসদমনের কারনেই বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা ছাড়া তাদের বিকল্প নেই। একথা সত্য যে, নিবার্চনত্তর সারা বাংলাদেশেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বেড়ে গিয়েছে। এর মূল কারন সম্প্রদায়ীক উস্কানী নাকি অন্য কিছু তা বিচার বিশ্লেষনের দাবি রাখে। একথা আজ বিধৃত যে, জামাত ঘেষা সংগঠন ‘ছাত্র শিবির অনেকাংশেই সৎ, দক্ষ ও মেধাবী,। কিন্তু তাদেরকে জামাতের ‘৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মানবতা বিরুধী অপরাধের কলংক ও সাম্প্রদায়ীকতার স্তবক বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। আর এই সুযোগে বাংলাদেশের নীতি বির্বজিত বৃহৎ ছাত্র সংগঠন গুলি একশ্রেনীর জন্মগত ভাবেই ক্ষমতাবান সুবিধাভোগী রাজনীতিবিদদের পরামর্শে এই সংগঠনটিকে দলে-মুচড়ে ভোগবাদী রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় তৎপর রয়েছে-সাধারন জনগনের চোখে মেকির রং ছুড়ে দিয়ে।
বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিক ‘দশম জাতীয় সংসদ নিবার্চনত্তর সহিংসতারোধে যৌথবাহিনীর সাথে ভারতীয় বিএসএসফ বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা- প্রমানসহ উল্লেখ করেছে যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য অতিব মারাত্মক। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে ‘বাংলাদেশের মৌলিক বিষয় যেমন, সীমানা নির্ধারন, তিস্তার পানি বন্ঠন, সমুদ্র সমস্যা, ফারাক্কা সমস্যার সমাধান না করে ভারত কেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে? না-কি একধা স্বাধীন সার্বভৌম সিকিম রাজ্যে মত বাংলাদেশকে নানাবিদ সমস্যার ফাদেঁ ফেলে ভারত সুদুর প্রসারি কোন উদ্দেশ্য সাধনে তৎপর???