somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবল সরকার বনাম দুর্বল জাতি

১৩ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সবল সরকার বনাম দুর্বল জাতি
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বি.এ (অনার্স) এমএ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বাঙ্গালী জাতি এক অদৃষ্টবিশ্বাসী পলায়নপর জাতি। বুদ্ধিহীন দৈন্যতা এই জাতিকে ক্রমাগত অধঃপতনের দিকেই ধাপিত করছে। জাতির যুগযুগান্তরের ইতিহাস; এই সত্যেকেই স্বাক্ষ্য দেয়। সেই প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে আজ অব্দি জাতির এই দুর্বলতার সুযোগে ক্রমাগত লুট হয়েই চলেছে বাংলার সম্পদ, সংস্কৃতি ভাষা ও জাতীয়তা। যুগ যুগ ধরে নিরষ্কুশ ভাবে প্রমানিত হয়েছে শাসক শ্রেনীর ‘ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের চক্রান্ত,। ফলে স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছরেও জাতি তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এই ব্যর্থতা জাতির জীবনে কলংকের তিল্ক।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীনের পর থেকেই বাংলা ভূ-খন্ডে পালাবদলের রাজনীতি শুরু হয়েছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দলীয় কিছু কায়েমী স্বার্থবাদী রাজনৈতিক নেতা। জন সমর্থন যেনতেন উত্তরাধীকার সূত্রেই তারা দলীয় প্রধানের পদ ধারাবাহিক ভাবে দখল করে, স্বনির্ভর আর স্বচ্ছ গণতন্ত্রের স্লোগান নিয়ে জনগনকে ফুস্লিয়ে-ফাস্লিয়ে ক্ষমতা দখল করেই ব্যক্তিক স্বার্থের পৈশাষিক থাবায় ক্ষত-বিক্ষত করছে ‘গোটা জাতি ও জাতীয় স্বার্থকে। অসীম ক্ষমতায় কুক্ষিগত করছে রাষ্ট্রীয় দখলদারিত্ব। জাতীয় স্বার্থের নামে ‘মূলা, ঝুলিয়ে স্ব-দলীয় কিম্বা ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধারে পৃথিবীর নিকৃষ্ঠ ও জঘন্যতম পন্থা অবলম্বনেরও পিছপা হচ্ছে না। সভ্যতার হাজার বছরের ঐতিহাসিক শিক্ষাকে বৃদ্ধ আঙ্গুলি দেখিয়ে কুখ্যাত ইউরোপিয় দানব ষোড়শ লুইয়ের ন্যায় চিৎকার করে বলছে“ আমিই ধর্ম, আমিই রাষ্ট্র, আমিই আইন,।
একথা সত্য যে, প্রাচীন কালে ‘বাহুবল আর ক্ষমতা, রাজনীতির নিয়ামক ছিল। সভ্যতার এই আধুনিক যুগে রাজনীতির সংজ্ঞার পরিবর্তন ও পরিমার্জন হয়েছে। আধুনিক কালের রাজনীতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে Politic is the public service for national Interst. অথচ বাংলাদেশের রাজনীতি সদা-সর্বদা উল্টু পথেই হাঁটছে। গোটি কয়েক নেতা ছাড়া অধিকাংশ রাজনীতিবিদই জনগনের সেবার অন্তরালে হত্যা, লুন্ঠন ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার রাজনীতি নিয়ে ব্যতি-ব্যস্ত। এই ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা সব সময়ই একধাপ এগিয়ে। বার বার ক্ষমতাসীনদের নিপীড়ন-নির্যাতনের স্ট্রীম রোলারে পথ-পৃষ্ঠ হচ্ছে বাংলার সচেতন নাগরিক সমাজ। এ কথা বলতে আজ দ্বিধা নেই, বাংলাদেশের প্রত্যেক মহল্লা কিম্বা পাড়ার শ্রেষ্ঠ দুস্কৃতিকারী ও বখাটেরা রাজনৈতিক নেতার পরিচয়ে স্ব-স্ব এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। স্বার্থের কারনে এক নেতা আরেক নেতাকে গুম কিম্বা হত্যা করে লাশ বেওয়ারীশ করে দিচ্ছে। দলীয় ক্ষমতায় ছাত্র সমাজ শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। দেশের সর্বচ্চ বিচারালয় সুপ্রীমকোর্টে ,অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকারের পেটুয়া বাহিনী। পক্ষ প্রতিপক্ষকে রগ কেঁটে সারা জীবনের জন্য পুঙ্গ করা কিম্বা হত্যা করে লাশ গুম করতেও দ্বিধা করছেন। সত্যের জয় ধ্বনি করায় সত্যনিষ্ট সাংবাদিক সাগর-রুনিদের সন্ত্রসীদের হাতে জীবন দিতে হচ্ছে অবুঝ শিশুদের বোবা কান্না উপহার দিয়ে। বেকারত্বে যাতা কলে পৃষ্ঠ হয়ে সাংবাদিক মিনার মাহমুদদের আত্মহত্যা করে প্রমান করতে হচ্ছে ‘প্রানের চেয়ে মান বড়,।
ক্ষমতাসীন সরকার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, ভোটার বিহীন একটি অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ নিবার্চন করে, এ সত্যকে সর্বতঃ ভাবে সত্য প্রমানিত করেছে। ক্ষমতার তখ্তকে পাঁকা-পুক্ত করতে ও আর্ন্তজাতিক সমর্থন লাভের আশায় দেশকে সন্ত্রাস ও মৌলবাদের খোলসে জড়িয়ে ফেলছে। মৌলবাদের নামে ধর্মপ্রান মানুষের সত্য বলার অধিকার সংকুচিত ও প্রয়োজনে রাজাকারের তক্মা কপালে লেপন করে আঙ্গুলি নির্দেশ করছে ফাসিঁর মঞ্চের দিকে। রাজনৈতিক স্বার্থ হাঁসিলে এই বাজী খেলায় ঢোল পিটাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। জাতিগত ঐক্যতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার ধোঁয়া তুলে তারা ফেলানীদের কাঁটা তারের বেড়ায় ঝুঁিলয়ে নৃসংশ ভাবে হত্যা করছে। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে যুগ যুগ ধরে জিয়িয়ে রাখছে তিস্তার পানি বন্ঠন, সমুদ্র সমস্যা, সিটমহল সমস্যাসহ অসংখ্যক সমস্যা।
জাতির এই নির্লিপ্তিতা তাদের সেই পুরানো অবশ্য ও অজ্ঞতাকেই মনে করে দেয়। মনে করে দেয়, প্রাচীন বাংলার দূর্বল ও অর্কমান্য রাজা লক্ষন সেনের কথা। যিনি মাত্র বার জন বিন্দেশী তুর্কী সেনার ভয়ে প্রজা-রাজ্য ছেড়ে রাজদরবারের পিছনের খিড়্কী দরজা দিয়ে পালিয়ে প্রান বাচিঁয়ে ছিলেন। বোধজ্ঞানহীন এই জাতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ প্রেমিক বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উ-দৌল্লাকে বেনিয়া ইংরেজদের হাতে পাজিত ও বন্ধি থাকাকালীন অবস্থায় দরবার হলে কৌতুক করে কন্টকার্কীন কেদারা ও শয়ন সজ্জা উপহার দিয়ে ব্যঙ্গ করে ছিলেন। রহস্য হয়ে আছে, বাংলার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবকে স্বপরিবারের হত্যার পর এই জাতির র্নিলিপ্তিতা। তাই বাংলাদেশের এহেন পরিস্থিতিতে আমাদেরও কবির সাথে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে ইচ্ছা করে ‘হে বঙ্গ জননী রেখেছ তেত্রিশকোটি মানূষকে বাঙ্গালী করে; মানুষ করনি,।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×