ধর্মীয়, বৈষয়িক এবং সামাজিকতার প্রেক্ষিতে সম্পূর্ন ব্যাক্তিগত উপলব্ধি, কারো সাথে মিল বা অমিলে কিছু আসে যায় না।
এই সিরিজে স্পর্শকাতর বিষয় ইসলাম ধর্ম নিয়ে লিখছি বলে অনেকের অনেক রকম মন্তব্য পাচ্ছি। কেউ উপাস্যের ভয় দেখাচ্ছে, কেউ কটাক্ষ বলছে ভাল-ভাবে জেনে এবং এই বিষয়ে পড়াশুনা করে লিখতে, কেউ সরাসরি প্রশংসা করছে এবং কেউ বা গালি। তাদের মন্তব্য বিশ্লেষন করে অনেকটা এমন সিধান্তে উপনীত হওয়া যায়ঃ
• উপাস্যের ভয় দেখানঃ এক’ই উপাস্যের তৈরী পৃথিবীতে ধর্মের নানান রূপ এবং প্রকারভেদ দেখে কেউ যদি নিজ ধর্মকে প্রশ্নের দ্বারা ব্যাবচ্ছেদ শুরু করে বা উত্তরের আশায় উৎস খুজতে চায়, অপ্রীতিকর সত্যের উদঘাটন না করার জন্য তাকে এই ধরনের ভয় দেখান হয়। উপাস্যের ভয় দেখালে ধর্ম নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন এবং সন্দেহ করার সাহস পাবে না। কারন উপাস্য সর্বশক্তিশালী।
• পড়াশুনা এবং জানাঃ আধুনিক সমাজে ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা আগের তুলনায় খুব কম মানুষই করে। কারন দাবী অনুযায়ী আগে সৃষ্টিকর্তা মানুষের মাধ্যমে ধর্ম তৈরী করত, আর এখন মানুষ প্রশ্ন ছাড়া সেইসব ধর্ম পালন করে। যারা এই সব নিয়ে পড়াশুনা করে, তাদের বেশিভাগ গবেষনার কাজে ব্যাবহারের জন্য এবং মধ্যবয়েসী। তবে মাদ্রাসা, মক্তব, আরবীমিডিয়াম এবং ইসলামের ইতিহাসসহ এই জাতীয় শিক্ষা ব্যাবস্থার বেশি ভাগই একপেশে। ব্যক্তিগতভাবে জানি, ধর্ম(শুধুমাত্র ইসলাম নিয়ে নয়) নিয়ে পড়াশুনা এবং গবেষনা খুব সহজ নয়। কঠিন, পক্ষপাতদুষ্টে দুষ্ট, তথ্য কম এবং ধর্মেই ধর্মের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এসব নিয়ে প্রশ্ন করতে নিষেধ করা আছে। বেশিভাগ মানুষ যখন ধর্ম নিয়ে কাউকে নাড়াচাড়া (প্রশ্ন করা/উত্তর খোজা) করতে দেখে, ভাবে ঐ ব্যক্তি নাস্তিক (অথবা প্রায় ঐ রকম)। তাকে বলা হয় ভাল-ভাবে জেনে, পড়াশুনা করে প্রশ্ন করতে। অধিকাংশ প্রশ্নকারী বা উত্তর অন্বেষক উঠতি বয়েসী বা তরুন/যুবক, তাদের চিন্তা-ভাবনা এবং মনোসংযোগের বিষয় দ্রুত পরিবর্তনশীল। তারা যখন ধর্মের বিষয়ে অন্য দৃষ্টিকোন থেকে আগ্রহী হয়, তথ্যের অভাবে বা পক্ষপাতদুষ্ট তথ্যের দ্বারা একটি নির্দিষ্ট সময় পর এই বিষয়ের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাই তাদের নিরুৎসাহী করতেই বরং ধর্ম নিয়ে ভাল-ভাবে পড়াশুনা এবং জানতে বলা হয়।
• প্রশংসাঃ লেখা এবং লেখার বিষয় ভাল লেগেছে তাই প্রশংসা। অনেকেই হয়তো এই দৃষ্টিকোন থেকে এই বিষয়টি দেখতে চায়। অনেকেই হয়তো জানে, বলতে পারে না। অথবা অনেকে নতুন ভাবে এই দৃষ্টিকোন থেকে এই বিষয়ে দেখছে।
• গালিঃ অসংখ্য মানুষ আছে, যারা ইসলাম, মুসলমান, আল্লাহ, কোরান, মুহাম্মদ ইত্যাদি নাম অন্য যেকোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখা মাত্র বিকারগ্রস্থ হয়। ইসলাম ধর্মের নামে, তারা আঞ্চলিক/এলাকভিত্তিক/পারিবারিক কুশিক্ষায় শিক্ষিত (মিলাদ, ওরশ, মানত, মাজারের সামনে গাড়ীর গতি কমানো, পাঠ্যবই কপালে ঠেকান, খেলার মাঠে প্রবেশের সময় মাটি ছুঁইয়ে হাত কপালে ঠেকান, বয়স্কদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম, ঘরে কাবা’র ছবি, মেয়ে’র মাথাযুক্ত পাখাওয়ালা সাদা ঘোড়ার পিঠের উপর গম্বুজের ছবি, হাতের তালু/পাঞ্জার উপর আরবী লেখা’র ছবি টাঙ্গানো সহ ইত্যাদি)। তারা কোন প্রশ্ন এবং যুক্তি ছাড়াই ধর্ম এবং ধর্মের নামে উপরে উল্লেখিত বিষয় পালন করার চেষ্টা করে। যেহেতু ধর্মের ব্যাপারে তাদের জ্ঞান কম, তাই নিস্ফল ক্রোধে যুক্তি না দেখাতে পেরে অশালীন কটুক্তি করে।
চলবে…
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-১
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-২
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-৩
প্রসংগঃ আস্তিকের ধর্মকথা-৪
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






