দিনরাত খেয়ে না খেয়ে যুদ্ধপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে একদল চিহ্নিত দালাল কাজ করে যাচ্ছে। তারা মওদুদীবাদী ওহাবীপন্থী জামাতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের মাসোহারায় পালিত বলে চউড় হচ্ছে। তবে তাদের এই মাথা খারাপ অবস্থা কেনো! খুঁজতে গিয়েই কেঁচোর বদলে বেরিয়ে এসেছে সাপ। বিষধর সাপ।
১৯৭১ সালে ধর্মব্যবসায়ী জামাতের ছাত্র সংগঠন ছিলো ছাত্রসংঘ। রাজাকার এবং বুদ্ধিজীবিদের হত্যার জন্য বিশেষ খুনি স্কোয়াড আল-বাদরদের সদস্যরা ছিলো এই ছাত্র সংগঠনের। স্বাধীনতার পর তারা পলাতক থাকে, পুনর্বাসিত হয় ওহাবী নেতা জিয়ার সেনাশাসনের সময়। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংঘ নাম পাল্টে রাখে ছাত্রশিবির। প্রসঙ্গত, তাদের ছোটদের সংগঠন শাহীন শিবির থেকে এই শিবির নামটি নেয় তারা। এছাড়া মোডাস অপারেন্ডিতে ১৯৭১ আর বর্তমানে কোনো বিভেদ নেই। ছাত্রশিবিরের প্রথম সভাপতি মীর কাশেম আলী ছিল ১৯৭১ সালে আল-বাদর হাইকমান্ড সদস্য, চট্টগ্রাম শহর ছাত্রসংঘ সভাপতি এবং চট্টগ্রাম জেলা রাজাকার বাহিনী ও চট্টগ্রাম শহর আল-বাদর বাহিনী প্রধান। দ্বিতীয় সভাপতি আল-বাদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক কামারুজ্জামান সম্পর্কে নতুন করে বলার নেই। তবে তৃতীয় সভাপতি আবু তাহেরের বিশেষ ভূমিকা আছে। মুক্তিযুদ্ধকালে মীর কাশেম আলীর উত্তরসূরী হিসেবে সে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রসংঘের সভাপতি হয় এবং জেলা আল-বাদর প্রধানের দায়িত্ব পালন করে।
৭১-এর ঘাতকদের নব্য দালালদের কাজ মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার জন্য আজেবাজে কল্পকাহিনী ফাঁদা, তাদের নেতাদের দুর্নামমুক্ত করার চেষ্টা এবং একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িতদের চরিত্রহনন। যুদ্ধপরাধীদের শাস্তি হলে ছাত্রশিবিরের অস্তিত্ব বলতে কিছুই থাকবে না। এ কারণেই যে কোনো মূল্যে এ দাবি ঠেকাতে তারা বদ্ধপরিকর। আর পেছনে রয়েছে ভবিষ্যতের এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র।
প্রতিষ্ঠার একযুগের মধ্যে ছাত্রশিবিরের বিস্ময়কর উত্থান ও প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে কীর্তিকলাপ এক অনুসন্ধানী নিবন্ধের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন সেলিম ওমরাও খান ও সৈয়দ শামীম নামের তরুণ তুর্কি সাংবাদিকরা।
পাঠকের সুবিধার জন্য পৃষ্ঠাপ্রতি কি আছে তার শিরোনাম কিংবা সারসংক্ষেপ দেয়া হলো:Ñ
১, জামাতের প্রধান অঙ্গদল ছাত্রশিবিরের স্বরূপ
২. ছাত্র সংঘ থেকে শিবির, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ৮৭
৩. স্বাধীনতা, শিল্প ও সংস্কৃতি
৪. সন্ত্রাস, ট্রেনিং সেন্টার এবং নীলনকশা, জোনভিত্তিক শিবিরের সদস্য সংখ্যা
৫. শিবিরের অর্থের উৎস
৬. রিক্রুটমেন্টের কৌশল
৭. জামাতের পাঠচক্র : বিকৃত জ্ঞানচর্চার খতিয়ান
৮. পুঁজিবাদ যোগ সমাজতন্ত্র সমান ইসলাম/পর্দা লংঘনে জিহ্বার স্বাদ নষ্ট হয়
৯. ক্রীজ (কিরিচ) বাহিনী
১০. অপারেশন পর্যালোচনা, জিম্মি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
১১. জঙ্গি জোশ ও সেল গঠন
১২. প্রেমের আগুন জ্বলে অন্তরে অন্তরে
১৩. শিবিরের জালিয়াতি : ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস
১৪. উপসংহার
১৫-৩০ : ছাত্রশিবিরের তৃতীয় সভাপতি ডা. আবু তাহের সউদী আরবের রিয়াদে একটি গোপন উৎসের কাছে জামাত ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর জন্য অর্থ চেয়ে একটি চিঠি লিখে এবং দুই বছরের জন্য ৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৩ ডলারের (এখনকার অর্থমানে ২ কোটি টাকা) বাজেট দেয়। সেই পুরো বাজেট এবং চিঠিটিও বাংলা অনুবাদ করে তুলে দেয়া আছে।
পড়–ন, জানুন এবং ঘৃণা করুন। ইসলামের নাম বিক্রি করে, ইসলাম নিয়ে ব্যবসা করে, ইসলামের ঢালে আড়াল নিয়ে থাকা এই মুনাফিকদের সম্পর্কে নিজে জানুন, অন্যদেরও সচেতন করুন।
(সূত্র : একাত্তরের ঘাতক জামাতে ইসলামীর অতীত ও বর্তমান; প্রকাশনায় : মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্র)